Advertisement
সোহেল মিয়া,দোয়ারাবাজার(সুনামগঞ্জ):
চলাচলের অসুবিধা, ধুলাবালি ও জলাবদ্ধতা এই তিন যন্ত্রণা নিয়ে নিদারুন দুর্ভোগের শিকার দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের বৃহত্তর কলাউড়াবাসী। ড্রেন নির্মাণকে কেন্দ্র করে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি। ১৫ দিনের মধ্যে ড্রেন নির্মাণের কাজ শেষ করার সিডিউল থাকলেও ২২ মাসে ও শেষ হয়নি এ কাজ। নির্মাণ কাজ সম্পন্ন না হওয়ার কারনে লোকজনের দুর্ভোগ দিন দিন বেড়েই চলছে। ড্রেন নির্মাণকে কেন্দ্র করে এই এলাকার রাস্তাঘাটের অবস্থা করুণ। এসব এলাকার বাসিন্দারা ভালো করে চলাচল করতে পারছে না। শিক্ষার্থীরা স্কুল মাদ্রাসায় আসতে নানান বাঁধার সম্মুখিন হচ্ছেন।
গেল বর্ষা মৌসুমে লোকজন সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হয়। আগামী বর্ষায়ও একই পরিস্থিতির আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
জানা যায়, ২০২১ সালের মে মাসে
উপজেলার ১নং বাংলাবাজার ইউনিয়নের ডালিয়া গ্রাম হয়ে কলাউড়া মাদ্রাসা যাওয়ার একমাত্র সড়কের ড্রেন নির্মাণের কাজ শুরু হয়।
এলজিইডি,র অধীনে ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির তত্বাবধানে শুরু হয় ড্রেনটির নির্মাণ কাজ। তড়িঘড়ি করে অর্ধ কিলোমিটার রাস্তা ভেঙ্গে ড্রেনের কাজ শুরু করলেও ছিমছাম কিছু দিন কাজ করে লাপাত্তা হয়ে যায় জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাগণ। একাধিকবার বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করা হলেও এলাকাবাসী এর কোন প্রতিকার পায়নি।নিদারুণ ভোগান্তিতে পরে আছে এই এলাকার শিক্ষার্থী,কৃষক,চাকরীজীবিসহ সর্বস্থরের জনসাধারণ। সড়কে একপাশে মাটির স্তুপ অপর পাশে ৪/৫ফুট গর্ত থাকায় চলাচল অনুপোযোগী হয়ে পরেছে। নুখ টিপে পাড় হতে হয় সড়ক।এ যেন এক মরণ ফাঁদ।প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।
জনশ্রুতি এই ১০০ফুট ড্রেনের কাজ ২২ মাস পূর্বে শুরু হলেও কবে শেষ হবে তা এখনও অজানা।
ড্রেনের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক কার্যত অচল হয়ে যায়। ফলে সড়কের চলাচলের বাঁধা ছাড়াও বর্ষার সময় কাদা আর শুষ্ক মৌসুমে ধুলাবালিতে লোকজনের চলাফেরা কষ্টকর হয়ে উঠে।
দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউপি'র বৃহত্তর কলাউড়া গ্রামের অধিকাংশ মানুষের জেলা শহরে যাতায়াত,কলাউড়া কামিল (এমএ) মাদ্রাসায় যাতায়াতের এই একটিই সড়ক।সবজি অদর্শিত অঞ্চলের এই এলাকার মানুষের সবজি বাজারজাত করনে পরতে হচ্ছে বিপাকে। এ যেন এক বিষফোঁড়া। পল্লীর অধিকাংশ মানুষই প্রয়োজনের তাগিদে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে রিক্সায়,টমটম,বাইসাইকেলে যাতায়াত করেন।কিন্তু দায়সারা ড্রেনেজ নির্মাণের দরুন, সব ধরনের যাতায়াত ব্যবস্থা একেবারে প্রায় ২ বছর যাবত বন্ধ। বিশেষ করে মাদ্রাসা, স্কুল,কিন্ডারগার্টেন ও কলেজ পড়ুয়া কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির অন্ত নেই।
স্থানীয় বাসিন্দা ভ্যান গাড়ি ড্রাইভার ইবরাহীম বলেন,গাড়ি চালিয়ে সংসার চালাই কিন্তু সড়কের ড্রেনের কারনে ২০মিনিটের রাস্তা ৪০মিনিটে ঘুরে আসতে হয়।এটা আমাদের মতো ড্রাইভারদের জন্য খুবি কষ্টের। পথচারী বিল্লাল হোসাইন বলেন, কর্তৃপক্ষের উদাসিনতায় আমরা সাধারণ পথচারী কষ্ট পাচ্ছি যা মোটেই কাম্য নয়।স্কুল পড়ুয়া ১০ শ্রেণীর শিক্ষার্থী তাসলিমা বলেন, এখানে আসলে আমার খুব ভয় হয়, কখন জানি গর্তে পরে যাই । অনেক কষ্ট করে এই দুর্গম ড্রেনের এরিয়া পাড়ি দেই। তিনি বিষয়টি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ সফিউল্লাহ বলেন,আমি নির্বাচিত হওয়ার আগে ড্রেনের কাজটি শুরু হয়েছিলো। আগের জনপ্রতিনিধিগণ কাজটি করতে ব্যর্থ হয়েছেন। আমি কয়েকদিন যাবত আলোচনা করছি ড্রেনের অসম্পন্ন কাজগুলো সম্পন্ন করার লক্ষে এলাকাবাসীকে নিয়ে চেয়ারম্যানের কাছে যাবো।
বাংলাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আবুল হোসাইন জানান, ডালিয়া গ্রামের ড্রেনের বিষয়টি সম্পর্কে আমার জানা নেই,এলাকাবাসী জানালে আমি এতোদিনে ব্যবস্থা নিতাম। হয়তো আগের চেয়ারম্যানের আমলে কাজটি শুরু হয়েছিলো।
খুঁজ নিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।
দোয়ারাবাজার উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা রাশেদুর রহমান জানান,ড্রেনের কাজটি সম্পর্কে আমার জানা নেই,আমার আগে যেসকল কর্মকর্তাগণ ছিলেন উনাদের রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কাজ এটি। খুঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিবো।