lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
Last Updated 2023-02-13T09:19:49Z
গ্রাম বাংলা

ভালো নেই পাইকগাছার বৃক্ষ প্রেমী সিদ্দিক

Advertisement



মোঃ মানছুর রহমান (জাহিদ),খুলনা প্রতিনিধি:-আমার লাগানো গাছগুলো আজ মাথা উঁচু করে প্রায় যেন আকাশ ছুঁইছে, কিন্তু দরিদ্রতা আমাকে ছোট্ট গোন্ডির মধ্যে বেঁধে ফেলেছে” নাম তার সিদ্দিক গাজী, বয়স ৬০ ছুঁই ছুঁই, কেউ বলেন সিদ্দিক পাগল, কেউ বা বলেন বকুল প্রেমিক সিদ্দিক। তবে যে নামেই ডাকুক না কেন সে ডাকেই সাড়া দেন বৃক্ষ প্রেমী সিদ্দিক। 


খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের শ্যামনগর গ্রামের হত দরিদ্র পরিবারে জন্ম তার। তিনি দরিদ্র পরিবারে জন্ম গ্রহণ করায় লেখা পড়া তেমনটা করতে পারেননি। কিন্তু ছোট বেলা থেকেই তার স্বপ্ন ছিলো গাছ লাগানো।


তবে তার বর্তমান আয়ের একমাত্র মাধ্যম বাজারে বাজারে শাক বিক্রি করা। আর এই শাক বিক্রি করেই চলে স্বামী- স্ত্রী ও দুই সন্তানের সংসার। সংসার চালিয়ে কিছু টাকা বাড়তি থাকলে তা দিয়ে বীজ ক্রয় করেন তিনি। মাত্র ১০ শতক জমিতে বসত বাড়ি তার। ছোট্ট একটি আঙ্গিনার কোণে বকুলের বীজ ছড়িয়ে চারা তৈরী করে পাইকগাছা, খুলনা, সাতক্ষীরা,যশোর ও বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, রাস্তার গুরুত্বপূর্ণ স্থান, স্টেডিয়াম অফিস আদালতসহ পাড়ায় পাড়ায় লাগান শ’শ’ বকুল গাছ। বর্তমানে দরিদ্রতার সাথে যুদ্ধ করলেও এখনও থেমে নেই তার গাছ লাগানোর প্রক্রিয়া। এটা যেনো তার নেশায় পরিণত হয়েছে। তার নিজ এলাকা সূত্রে জানা যায়, বিগত প্রায় ৩০ বছর ধরে কখনও পায়ে হেটে, কখনও গাড়ীতে চড়ে বাঁশের দু’মাথায় চারা ঝুলিয়ে তা বিভিন্ন অঞ্চলে লাগিয়ে বেড়ান সিদ্দিক। সিদ্দিক সোজা ভাষায় কথা বলতে না পারলেও সব সময় বাধা-বাধা ভাষায় কথা বলেন। অনেক দরিদ্র তিনি, দরিদ্রতার নির্মমতা কি তা সারাটা জীবন তিনি হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন। তার পরেও তার স্বপ্ন দেখা থেমে নেই। এবার তিনি বিভিন্ন অঞ্চলে তালের চারা লাগানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। চলতি বছর তিনি তাল গাছের মাথা তথা তাল কিনে গাছে পাকিয়ে তা থেকে যে বীজ পাবেন তা দিয়ে চারা বানিয়ে বিভিন্ন অঞ্চলে সড়ক ও ওয়াপদার রাস্তায় লাগাবেন। যা পথচারী বা সাধারণ মানুষ খাবে ও বজ্রপাত থেকে মানুষ প্রাণে বাঁচবে বলে আশা করেন।আরও জানা যায়,কয়েক বছর আগে বিটিভি’র জনপ্রিয় ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানে তার একটি সাক্ষাৎকার সম্প্রচার করা হয় এবং ৫০ হাজার টাকাও পুরস্কার দেয়া হয়। জানতে চাইলে বৃক্ষ প্রেমী সিদ্দিক জাতীয় দৈনিক ঢাকা প্রতিদিনকে বলেন, “স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়েরা বকুল ফুল দিয়ে মালা বানাবে, বকুল খাবে, বকুল তলায় বসে অবসর সময় কাটাবে এতেই আমার আনন্দ।দক্ষিণাঞ্চলে আমার দেওয়া গাছ সব প্রতিষ্ঠানেই আছে, আমার গাছগুলো আজ মাথা উঁচু করে প্রায় যেন আকাশ ছুঁইছে, কিন্তু দরিদ্রতা আমাকে ছোট্ট গোন্ডির মধ্যে বেঁধে ফেলেছে। পরিবেশের জন্য লক্ষ লক্ষ বকুল গাছ অনেক উপকার করলেও আমার খোঁজ কেউ নি আজও। এমনকি আমার দিকে সাহায্যের হাত বাড়ায় নিও কেউ।”