Advertisement
জুয়েল ইসলাম, রংপুর প্রতিনিধিঃ- রংপুরের তারাগঞ্জে দুস্থ ও অসহায় নারীদের ভিজিডি'র তালিকায় নাম দেওয়ার কথা বলে কুর্শা ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
নুরুল হুদা জাদু মিয়া নামের ওই ব্যক্তি কুর্শা ইউনিয়রেন ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। তবে টাকা দেওয়ার পরও ভিজিডির তালিকায় নাম না ওঠায় ক্ষুব্ধ হয়ে এলাকাবাসী ওই ইউপি সদস্যর বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ইউপি সদস্য নুরুল হুদা জাদু মিয়া ৯নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন গ্রামে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে ভিজিডি ও প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়ার নাম করে ৫ হাজার করে টাকা হাতিয়ে নেন।
রহিমাপুর খাঁনসাহেব পাড়া আখিরারপাড়, মোল্লাপাড়া ও ঝাড়পাড়া এলাকার বেলীনা বেগম, মনি বেগম, আনিছুল ইসলাম, তালেব মিয়া, আসাদুল ইসলাম, খাইরুল ইসলাম, শেফালী বেগম, কামরুজ্জামান, মনজেরুল ইসলাম সহ একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে ৪ থেকে ৫ হাজার করে টাকা নেন। কিন্তু কার্ড না হওয়ায় ভুক্তভোগীরা হতাশ হয়ে পড়েন। টাকা ফেরতের জন্য ইউপি সদস্য জাদু মিয়ার কাছে ধর্ণা দিলেও কোনো লাভ হয়নি।
রহিমাপুর খাঁনসাহেব পাড়া আখিরার পাড় গ্রামের আনিছুল ইসলামের স্ত্রী সাবিনা বেগম বলেন, ছয় মাস পূর্বে সুদের উপর ৫ হাজার টাকা নিয়ে ইউপি সদস্য জাদু মিয়াকে দিয়েছি। আমাকে ভিজিডি কার্ড করে দিবে। এখন শুনি তালিকায় আমার কোনো নাম নেই। টাকা ফেরত চাইলে বলেন দিতে পারবো না, কি করার আছে করিও।
একই গ্রামের বেলীনা বেগম বলেন, তার স্বামী ইট ভাটায় কাজ করেন। কার্ড করে দিবে বলে সুদের উপর টাকা নিয়ে ইউপি সদস্য জাদু মিয়াকে ৫ হাজার টাকা দিয়েছি। প্রত্যেক মাসে এক হাজার করে টাকা সুদ দিচ্ছি। কিন্তু কার্ড পাইনি। এখন টাকা ফেরত চাইলে দিচ্ছি, দেব করে দিন পার করছেন।
মোল্লাপাড়া গ্রামের মুন্নী বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমি একজন দিনমজুর। কষ্ট করে মানুষের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাই। ইউপি সদস্য জাদু মিয়া আমাকে ভিজিডি কার্ড করে দিবে বলে আমার কাছ থেকে ৪ হাজার টাকা নেন। কিন্তু আমার কোন কার্ড হয়নি। এখন টাকা ফেরত চাইলে টাকা দিতে পারবে না বলে জানান জাদু মিয়া।
ইউপি সদস্য নুরুল হুদা জাদু মিয়া বলেন, ভিজিডি কার্ড করে দেওয়ার নাম করে আমি কোনো টাকা নেইনি। এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।
কুর্শা ইউপি চেয়ারম্যান আফজালুল হক সরকার বলেন, ভিজিডি কার্ড করার জন্য কোনো টাকা নেওয়া হয় না। যাঁরা তালিকাভুক্ত হয়েছেন, কেউ এধরনের অভিযোগ করতে পারবেন না। কার্ড না পেয়ে এ ধরনের অভিযোগ অনেকেই করতে পারেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল মিয়া বলেন, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।