lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
সোমবার, ১ মে, ২০২৩
Last Updated 2023-05-01T16:52:47Z
জেলার সংবাদ

মান্দায় বেতন-বোনাস বন্ধ মানসিক চাপে প্রধান শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ

Advertisement

আল আমিন স্বাধীন মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি :

অসুস্থজনিত কারণে দু’দফায় ৬ মাসের ছুটিতে ছিলেন নওগাঁর মান্দা উপজেলার আলালপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম রেজাউল হক। সুস্থ হয়ে গত ২০ ফেব্রুয়ারি চাকরিতে যোগদান করেন। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিনি বিদ্যালয়ে নিয়মিত ছিলেন বলে নিশ্চিত করেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা। 

এর পরও তাঁর যোগদানকালিন নিয়মিত বেতনভাতা বন্ধ করে দেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকতা আবুল বাশার সামসুজ্জামান। ঈদ-উল-ফিতরেও তাঁকে বেতন-বোনাস দেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় স্ত্রী ও দুটি শিশু সন্তান নিয়ে ঈদ উৎসব পালন করতে পারেন নি। প্রচন্ড মানসিক চাপে গত শনিবার স্ট্রোক করলে তাঁকে নেওয়া হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার বিকেলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে তিনি।

শিক্ষক রেজাউল হক উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের বিলকরিল্যা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ২০১০ সাল থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আলালপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর বাবা মৃত বসরতুল্যা প্রামাণিক ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রেজাউল হকের ওপর শিক্ষা কর্মকর্তার এমন আচরণে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

শিক্ষক রেজাউল হকের স্ত্রী পান্না খাতুন বলেন, অসুস্থজনিত কারণে স্বামী রেজাউল হক গতবছরের ২২ আগস্ট তিন মাসের ছুটির আবেদন করেন। সুস্থ না হওয়ায় ছুটি আরও তিন মাস বাড়ানো হয়। চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে গত ২০ ফেব্রুয়ারি চাকরিতে যোগদান করেন।

পান্না খাতুন অভিযোগ করে বলেন, চাকরিতে যোগদানের পর বেতনভাতার জন্য স্বামী রেজাউল হক উপজেলা শিক্ষা অফিসে দিনের পর দিন ধর্ণা দিয়েছেন। কিন্তু শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাশার সামসুজ্জামান বিভিন্ন অজুহাতে তাঁকে হয়রানী করতে থাকেন। এক পর্যায়ে বিলবেতন পাসের জন্য অফিস আমার স্বামীর কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করে। পরে বাড়িতে থাকা ছোট্ট একটি ছাগল বিক্রি ও ধার করে ৫ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয় অফিসের সেই ব্যক্তির হাতে। দাবি পুরন না হওয়ায় ঈদের আগে বেতন-বোনাস পাস করেন নি।

পান্না খাতুন আরও বলেন, বেতন-বোনাস উত্তোলন করতে না পেরে স্বামী রেজাউল হক মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। প্রচন্ড মানসিক চাপে স্ট্রোক করলে তাঁকে রাজশাহী হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার বিকেলে মারা যান তিনি। 

এ প্রসঙ্গে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাশার সামসুজ্জামান হয়রানীর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মেডিকেলের কাগজপত্র ও ছুটির আবেদন ছাড়াই  ছয় মাস ধরে প্রধান শিক্ষক রেজাউল হক বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে কাগজপত্র সঠিকভাবে উপস্থাপন করায় তা অনুমোদনের জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে প্রেরণ করা হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অনুমোদন ছাড়াই তিনি বিদ্যালয়ে যোগদান করতে পারেন না।