Advertisement
হাসান আলী সোহেল নাটোর প্রতিনিধি
পবিত্র মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য পশু কোরবানির মধ্যে দিয়ে পালিত হয় পবিত্র ঈদুল আজহা,আর মাত্র ১ দিন পরে বৃহস্পতিবার ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হবে,মুসলিম উম্মাহর মাঝে যা কোরবানির ঈদ বলে পরিচিত,ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা প্রিয় পশুটি জবেহ করে আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য অপেক্ষমান,এই কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে নাটোরের বাগাতিপাড়া জিগরী আজগর মোড় কামার পাড়া তমালতলা নাটোরসহ মাংস কাটার সরঞ্জাম বানাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রীঃবরুণ কর্মকার ও নিপেন কর্মকাররা,দা,বটি,হাসুয়া, চাপাতি,ছুরি সহ নানাবিধ সরঞ্জাম তৈরী করছেন কামাররা,টুং-টাং শব্দে মুখরিত কামারশালাগুলো,কিছু সরঞ্জাম নতুন বানাচ্ছেন আবার পুরাতন গুলো শান দিচ্ছেন তারা,যেন কোরবানির আমেজে মেতে উঠেছে কামার শালা গুলো, বছরের অন্যান্য দিন গুলোতে তেমন কাজ হাতে থাকেনা কামারশালায়,সেসময়গুলোতে অলস সময় পার করলেও কোরবানির ঈদে যেন ব্যস্ততা চতুর্গুণ বেড়ে যায়।
কাকডাকা ভোর থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত চলে কর্মব্যস্ততা,বেড়ে যায় তৈরীকৃত জিনিসগুলোর দাম,বছরের এই সময়টিতে তাদের লাভও বেড়ে যায় অনেকাংশে,যার ফলে সময় নষ্ট করতে নারাজ কামাররা,এই ব্যস্তমুখর সময় চলে ঈদের আগের রাত পর্যন্ত,তবে কয়লা, লোহা সহ পারিশ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধি হবার ফলে আগের মতো লাভ নেই বলে জানান কামাররা,তবে পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য ধরে রাখতেও যেন বদ্ধপরিকর তারা,যার ফলে কোরবানির ঈদে ব্যস্ততার মাঝে ডুবে থাকেন তারা,একসময় সকালে ঘুম থেকে উঠলেই কামারপড়ায় শোনা যেত কামারশালার টুং-টাং শব্দ, বর্তমানে অনেকাংশে কম শোনা যায়,বর্তমানে আধুনিকায়ন হবার ফলে রেডিমেড জিনিসপত্রের কদর বেড়েছে, যার ফলে তৈরীকৃত জিনিপত্রের চাহিদা অনেকটাই কমে গেছে বলে দাবি করছেন স্থানীয় কামারেরা।
বাগাতিপাড়া উপজেলার বেশ কয়েকজন কামারের সাথে কথা হলে তারা বলেন,বর্তমান সময়ে সারাবছর ব্যবসায় মন্দা চলে, তবে এই উপজেলার কৃষিপণ্য যেমন ধান,গম,পাট,কালাই ইত্যাদি হারভেস্ট করার জন্য কাস্তে ব্যবহার করা হয়,যে কারনে সেসব মৌসুমে কিছুটা ব্যবসা চললেও তা দিয়ে তেমন লাভ হয় না,আমরা এই কোরবানীর সময়ের অপেক্ষায় থাকি,কিন্তু এই সময়টাও রেডিমেড জিনিসপত্র বাজারে আসার ফলে আগের মতো মুনাফা হয় না,এই কারণে অনেকেই পেশা বদলিয়ে অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়েছে,
উপজেলার থানা রোডে কর্মরত অরুণ কর্মকার বলেন,এখানে ছোট্ট একটি জায়গা নিয়ে কর্মকার ব্যবসা চালাই,জেলা সদরে প্রতি সপ্তাহে রবিবারে একটি হাট বসে,পূর্বে ইরি ও আমন মৌসুমে এই এলাকায় ধান কাটার জন্য কাস্তে ও আষাঢ় শ্রাবণ মাসে পাট কাটার জন্য বড় বড় হাসুয়া তৈরির বায়না পেতাম,এখন হাটে বাজারে লোকের তেমন সমাগম নেই।