Advertisement
মোঃ রিয়াজুল ইসলাম, দুমকী(পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর দুমকীতে হালিমা আক্তার মিম(২০) ও জামাল হোসেন প্রিন্সের(২৫) প্রেমের সম্পর্ক থেকে বিয়ের পরিনতি হল কেরোসিনে দগ্ধ হয়ে স্ত্রী হালিমা মৃত্যু। আর এ ঘটনায় মামলা হলে শ্বাশুড়ি পিয়ারা বেগমকে আটক করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে এবং এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহত হালিমার স্বামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, হালিমা-জামালের স্কুল জীবন থেকে প্রণয় এবং একপর্যায়ে উভয় পরিবারের সম্মতিতে পরিণয় হয়। চার বছরের সংসারে ওই দম্পতির কোলজুড়ে আসে ফুটফুটে শিশু পুত্র ওয়ালিফ ইসলাম জিসান। এদিকে বিয়ের পর থেকেই বৌ-শাশুড়ির মধ্যে পারিবারিক কলহ শুরু হলে একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ করতে থাকেন তারা। এনিয়ে দফায় দফায় সালিশ বৈঠকেও হয়নি কোন সুরাহা। সর্বশেষ সালিস বৈঠকে(৩০ মে) সন্ধ্যায় স্থানীয় ইউপি সদস্য সোহরাব হাওলাদারসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ওই সালিশিতে উপস্থিত থাকা হালিমার খালু লাল মিয়া জানান, সালিশিতে বৌ-শাশুড়ির পাল্টা পাল্টি অভিযোগের পর একই বাড়িতে বসবাস করা মুসকিল এ সিদ্ধান্ত হয়। এরপর জামাল তার বৌ হালিমা ও ছেলেকে নিয়ে গত ২জুন উপজেলার নতুন বাজার এলাকার শাহজাহান মুন্সীর ভাড়া বাসায় ওঠেন। এরপর বৃহস্পতিবার(৮জুন) দুপুরের খাবার খেয়ে ওই বাসায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন হালিমা ও তার ছোট্ট ছেলে জিসান। অপরদিকে জামাল হোসেন দুপুরের খাবার খেয়ে কর্মস্থলে চলে যান। বেলা তিনটার দিকে হঠাৎ হালিমার ডাকচিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন এবং বাইরে থেকে দরজার ছিটকিনি বন্ধ পান। পরে তাঁরা ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে শাড়ি ও ওড়না দিয়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ হালিমা এবং তার শিশু জিসানকে দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে দ্রুত বরিশাল শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাদের ঢাকা শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয় সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরের দিন শুক্রবার (৯ জুন) হালিমা মারা যায়। দগ্ধ শিশু সন্তান জিসান সংকটাপন্ন অবস্থায় সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
গ্রেফতারের আগে পিয়ারা বেগম সংবাদকর্মীদের কাছে জানান, আমার বিরুদ্ধে হালিমারআনিত নানা অভিযোগ ওই সালিশ বৈঠকে মিথ্যা প্রমানিত হয়েছে। ওরা (ছেলে ও ছেলে বৌ) অন্য জায়গায় চলে গেছে। কোথায় গেছে আমি কিছুই জানি না।
মায়ের নামে মামলা ও গ্রেফতার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হালিমার স্বামী জামাল হোসেন বলেন, স্ত্রী মারা গেছে। জিসান (শিশু সন্তান) এখনও সংকটাপন্ন। আমার মাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসলে আমি কি বলবো। তবে আমি চাই সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদঘাটন হোক।
দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল বাশার বাংলাদেশ প্রকাশকে জানান, তাদের পারিবারিক বিরোধ ছিল। এ জন্য কিছুদিন আগে ঘর ভাড়া করে আলাদা থাকা শুরু করেন। ঘটনার সঙ্গে যারা সরাসরি জড়িত তাদের সনাক্ত ও গ্রেফতারের অভিযান চলছে।