lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
বৃহস্পতিবার, ২৯ জুন, ২০২৩
Last Updated 2023-06-29T16:18:20Z
জাতীয়

নির্মাণের দুই দিনেই দেবে গেছে সড়ক, ধানের চারা রোপন করে প্রতিবাদ

Advertisement

মাহতাবুর রহমান, নিজস্ব প্রতিবেদক

বরগুনা আমতলীতে নির্মাণের দুই দিন না পেরোতেই দেবে গেছে সড়ক। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার সড়কে ধানের চারা রোপন করে ঠিকাদারের কাজের অনিয়মের প্রতিবাদ করেছে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।

উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা যায়, জিওবি ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের আওতায় গুলিসাখালী ইউনিয়নের ডাক্তার বাড়ি পটুয়াখালী আরএসডি সড়ক থেকে বাজারখালী পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার পিচ ঢালাই করা হয়। ১ কোটি ১২ লাখ ৫১ হাজার টাকা ব্যয়ে কাজটি পায় বরগুনা ঠিকাদার কোম্পানি সালেহা এন্টারপ্রাইজ। পরবর্তীতে সালেহা এন্টারপ্রাইজের কাছ থেকে কাজটি নেন হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম মৃধা। তিনিই কাজটি শেষ করেন গত শুক্রবার। কাজের দুই দিনের মাথায় সোমবার সড়কের বিভিন্ন স্থান থেকে ইটের খোয়া ও বিটুমিন উঠে সড়কের ইট বের হয়ে দেবে গেছে।

স্থানীয়রা জানান, গত কয়েকদিন আগে রাস্তাটি নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। গত শুক্রবার বিকেলে কাজটি শেষ হয়। রাস্তাটিতে নিম্নমানের ইট, বিটুমিন ব্যবহার করা হয়েছে। ঠিকাদার রাস্তার অনেক স্থানে পিচের পরিবর্তে পোরা মবিল ব্যবহার করেছে বলে তাদের অভিযোগ। এ ছাড়া অপরিষ্কার রাস্তায় পিচ দেওয়ার কারণে এগুলো উঠে যাচ্ছে। হাত দিয়েই তুলে ফেলা যাচ্ছে পিচ। দুই দিনেও পিচ ও খোয়া জমাট বাঁধেনি। নির্মাণ কাজের শুরুতেই ঠিকাদার শহীদুল ইসলাম মৃধার কাজের অনিয়মের প্রতিবাদ করেন এলাকাবাসী। কিন্তু ঠিকাদার এলাকাবাসীকে মামলা ও হামলার ভয়ভীতি দেখায়। পরে তারা আর প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা তৈরির বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে বেশ কয়েকবার জানানো হলেও তিনি কোন পদক্ষেপ দেয়নি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বুধবার এলাকাবাসী ওই সড়কের দেবে যাওয়া স্থান খেকুয়ানী গাজী বাড়ীর সামনে ধান গাছের চারা রোপন করে ঠিকাদার ও উপজেলা প্রকৌশলীর অনিয়মের প্রতিবাদ করেন। পুনরায় এ রাস্তা নির্মাণের দাবি জানান এবং এর সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান তারা।

ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি বাইনবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা ইব্রাহিম খলিল বলেন, কাজের শুরুতেই ঠিকাদার শহীদুল ইসলাম মৃধা নিন্মমানের ইট, খোয়া, পাথর ও বিটুমিন দিয়ে কাজ করছিল। আমি তার অনিয়মের প্রতিবাদ করি। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে চাঁদাদাবীর মামলা করবে বলে হুমকি দেয়। আমি এ বিষয়টি তাৎক্ষনিক উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মানুম ও বরগুনা নিার্বহী প্রকেীশলীকে জানিয়েছি।  কিন্তু তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। 

গুলিশাখালী ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক নাইজুর ইসলাম নয়ন, সদস্য সাইদ ও আল আমিন খলিফা বলেন, উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ঠিকাদার শহীদুল ইসলাম মৃধা যোগসাজসে দায়সারা কাজ করে সড়কের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। দ্রুত এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তারা।

শহীদুল ইসলাম মৃধা বলেন, দ্রুত সড়কের কাজ পুনরায় করবো।  আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন কে এ বিষয়ে বেশ কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি। 

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। সড়কের কাজ যথেষ্ট নিম্নমানের হয়েছে। বরগুনা জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে আলোচনা করেছি। দ্রুত তারা ওই সড়কটি পুনরায় সংস্কার করে দিবেন।  

বরগুনা নির্বাহী প্রকৌশলী সুপ্রিয় মুখার্জি বলেন, ওই সড়কটির বিল দেওয়া হয়নি। বৃষ্টি কমলেই ঠিকাদার পুনরায় ওই কাজ করে দিবেন। ভালোভাবে কাজ শেষ করলেই বিল দেয়া হবে।