lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
বুধবার, ৫ জুলাই, ২০২৩
Last Updated 2023-07-05T13:37:36Z
আইন ও অপরাধ

গাসিক মেয়র জায়েদা খাতুনের হলফনামা বাতিল চেয়ে মামলা

Advertisement

মেহেদী হাসান শাহীন, গাজীপুর প্রতিনিধি

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নবনির্বাচিত মেয়র জায়েদা খাতুনের নির্বাচন বাতিল চেয়ে মামলা করেছেন নির্বাচনে পরাজিত মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম।

মঙ্গলবার (৪ জুলাই) গাজীপুর সিনিয়র সহকারী জজ ১নম্বর আদালত ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে এ মামলা করেন তিনি। বিচারক আগামী ২ আগস্ট পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন।

মামলার বাদী গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে গণফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মাছ প্রতীকে অংশ নিয়ে পরাজিত হন এবং তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।

মামলায় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন- ২০২৩-এ জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা, বাতিল এবং ২৫ মে মেয়র হিসেবে নির্বাচিত প্রার্থীর নির্বাচন বাতিলের আবেদন করা হয়েছে। মামলায় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নির্বাচিত মেয়র জায়েদা খাতুনকে ১ নম্বর বিবাদী এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল, নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর, নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন

নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মো. ফরিদুল ইসলামকে মোকাবিলা বিবাদী করা হয়েছে। মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, ১ নম্বর বিবাদী জায়েদা খাতুন তার নির্বাচনী হলফনামায় ‘পিতার নাম’ উল্লেখ করেছেন ‘শামসুল ইসলাম'। কিন্তু তার ২০২২-২০২৩ কর বর্ষের আয়কর রিটার্নে 'পিতার নাম' উল্লেখ করেছেন ‘মরহুম মো. শামসুল হুদা’। এতে ১ নম্বর বিবাদী জায়েদা খাতুন তার নির্বাচনী হলফনামায় অসত্য তথ্য প্রদান করেছেন। স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০' এর ধারা ১৪ এর উপ ধারা (৩) অনুযায়ী ১ নম্বর বিবাদী জায়েদা খাতুনের মনোনয়ন বাতিল করার দায়িত্ব ও সুযোগ থাকলেও ৫ নম্বর মোকাবিলা বিবাদী গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন-২০২৩ এর রিটার্নিং অফিসার মো. ফরিদুল ইসলাম প্রতারণামূলক ভাবে জায়েদা খাতুনের মনোনয়ন বাতিল করেননি। ১ নম্বর বিবাদী জায়েদা খাতুন তার নির্বাচনী হলফনামায় ১ নম্বর শর্ত পূরণ করেননি। স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০ (সংশোধনী)-তে হলফনামায় (প্রার্থীর সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্রের সত্যায়িত কপি সংযুক্ত করতে হবে) বলা থাকলেও জায়েদা খাতুন তার নির্বাচনী হলফনামার সঙ্গে শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেটের সত্যায়িত কপি সংযুক্ত না করে প্রতারণামূলকভাবে মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচনী হলফনামার এই শর্ত পূরণ করতে না পারায় জায়েদা খাতুনের মনোনয়ন অবৈধ ছিল। জায়েদা খাতুন তার নির্বাচনী হলফনামায় ৪ নম্বর অংশও পূরণ করেননি নির্বাচনী হলফনামার ৪ নম্বর অংশে ব্যবসা/পেশার বিবরণীতে জায়েদা খাতুন তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা ও ব্যবসার ধরন/ বিবরণী উল্লেখ না করে হলফনামায় তথ্য গোপন করেছেন। ১ নম্বর বিবাদী জায়েদা খাতুন ২০২২-২০২৩ করবর্ষে (মহিলাদের আয়সীমা) ৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা আয় দেখিয়ে শূন্য আয়কর দিয়েছেন। শূন্য আয়কর দেখানোর কারণে জায়েদা খাতুন আয়কর রিটার্নের রসিদের কপি পাননি। স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০ (সংশোধনী)-তে ১২ ডিজিটের টিআইএন সনদের কপি এবং সম্পদ বিবরণী সংবলিত সর্বশেষ দাখিলকৃত আয়কর রিটার্নের রসিদের কপি দাখিল করতে হবে বলা থাকলেও ১ নম্বর বিবাদী জায়েদা খাতুন তার নির্বাচনী হলফনামার সঙ্গে আয়কর রিটার্নের রসিদের কপি সংযুক্ত করেননি। নির্বাচনী হলফনামার এই শর্তও পূরণ করতে না পারায় জায়েদা খাতুনের মনোনয়ন অবৈধ ছিল। জায়েদা খাতুন তার ২০২২-২০২৩ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন অনুযায়ী হলফনামায় সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত জায়েদা খাতুনের নির্বাচনী হলফনামার সঙ্গে দাখিল করা ২০২২-২০২৩ কর বর্ষের আয়কর রিটার্নে দেখা যায়, তিনি ব্যবসার পুঁজি (মূলধনের জের) হিসেবে দেখিয়েছেন ৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এই টাকা জায়েদা খাতুন কোথায় রেখেছেন বা কোথায় বিনিয়োগ করেছেন বা এই টাকায় কোথায় কী ব্যবসা চলে তা জায়েদা খাতুন তার নির্বাচনী হলফনামায় উল্লেখ করেননি। এছাড়া, অনারেবল টেক্সটাইল কম্পোজিট লিমিটেডে ২লাখ ৫০হাজার টাকা মূল্যের ২৫০০টি শেয়ারের বিপরীতে কত টাকা মুনাফা পেয়েছেন তাও জায়েদা খাতুন তার আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করেননি। মামলার আবেদনে আরও বলা হয়েছে, জায়েদা খাতুন তার নির্বাচনী হলফনামায় অস্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন নগদ ৩৫লাখ টাকা, ব্যাংকে জমা ৫০হাজার টাকা, অনারেবল টেক্সটাইল কম্পোজিট লিমিটেডের ২৫০০টি শেয়ার মূল্য ২লাখ ৫০হাজার টাকা, ৩০তোলা স্বর্ণ দেখিয়েছেন যার বর্তমান বাজার মূল্য (৭ যে, ২০২৩ তারিখের বাজার দর ৯৮,৪৪৪ /- টাকা ভরি হিসেবে) ২৯লাখ ৫৩হাজার ৩২০টাকা, ইলেকট্রনিক সামগ্রী দেখিয়েছেন ১লাখ ৫০হাজার টাকা এবং আসবাবপত্র দেখিয়েছেন ১লাখ ২০হাজার টাকা। এ হিসেবে হলফনামায় জায়েদা খাতুন মোট সম্পদ দেখিয়েছেন ৭০লাখ ২৩হাজার ৩২০টাকার। সুতরাং জায়েদা খাতুন ২০২২-২০২৩ কর বর্ষে আয়কর রিটার্নে নিট সম্পদ দেখিয়েছেন ৪কোটি ৭১লাখ ২০হাজার টাকার। ফলে হলফনামায় দেখানো সম্পদের মধ্যে ৪কোটি ৯৬হাজার ৬৮০টাকার গড়মিল পাওয়া গেছে।

নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল গণফ্রন্ট এর কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও গণফ্রন্ট মনোনীত গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন-২০২৩ এর মাছ প্রতীকের পরাজিত মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।

এবিষয়ে মামলার বাদী আতিকুল ইসলাম বলেন, 'এর আগে, লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম কিন্তু কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এবার দেখি ট্রাইব্যুনালে ন্যায় বিচার পাই কিনা।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীপক্ষের আইনজীবী নুর নবী সরদার বলেন, ‘গত মঙ্গলবার আতিকুল ইসলাম একটি মামলা করেছেন। নির্বাচনী বিরোধ নিষ্পত্তিতে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের গঠিত নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে এ মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।