lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই, ২০২৩
Last Updated 2023-07-18T11:27:48Z
জাতীয়

অস্পৃশ্য হরিজন সম্প্রদায়ের অভিশপ্ত জীবন

Advertisement

কামাল উদ্দিন টগর,নওগাঁ প্রতিনিধিঃ-                    

পরিচয় একটাই, হরিজন’ এ পরিচয় নিয়ে সমাজের অন্যান্যদের সঙ্গে মেশা তো দূরের কথা, হোটেলে বসে খেতেও পারেন না। সেলুনে বসে চুল কাটার অধিকারও নেই তাদের এ পরিচয় জানলে হয়তো স্কুলেও ভর্তি নেবে না ।একবিংশ শতাব্দীকে এসেও অস্পৃশ্য হরিজন সম্প্রদায়। যেন তারা মানুষ নয়, হরিজন। ভোরের আলো ফোটার আগে যারা নগরকে পরিস্কার করে সৌন্দয্য র্মন্ডিত করে, সেই হরিজনদের জীবনের আঁধারই কাটছে না।হরিজনরা মূলত ঝাড়ুদার,মেথর, ডোম ও নোংরা পরিস্কারের কাজ করে। তবে তারা শিক্ষা, সামাজিক মর্যদা, চিকিৎসা,ভূমি মালিকানা সবদিক থেকেই বৈষ্যম্যের শিকার। মানুষে মানুষে বিভাজনই আসলে হরিজনের জন্ম দিয়েছে।“হরিজন” শব্দটি দিয়ে আসলে আন্দাজ করা মুশকিল যে এই সম্প্রদায় সবর্দা কতটা অবহেলিত ও উপেক্ষিত। অথচ‘ হরিজন’ শব্দটির অর্থ ঈশ্বরের সন্তান (হরিজন)।এই নামটি মূলত মহাত্নগান্ধী এই সমাজের মানুষকে সন্মান দিতে চেয়েছিলেন। তিনি 1933 সালে অস্পৃশ্যদের চিহ্নিত করার জন্য হরিজন শব্দটি ব্যবহার করেন। তিনি চেয়েছিলেন সমাজের চলতি স্রোতে এদের মিশিয়ে দিতে।সমাজের প্রচলিত জাতিভেদ প্রথার কারণেই দেশের সাধারণ মানুষদের থেকে আলাদা হয়েগেছে হরিজন সম্প্রদায়। ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যাবে, সনাতন ধর্মাবলন্বীদের মধ্যে জাতিভেদ প্রথাটির বিষবৃক্ষ রোপন করতে মূখ্য ভূমিকা পালন করেছিল। বিভিন্ন শাসকগোষ্ঠী ক্রমাগত সেই জাত-পাতের বিভাজন করেই গেছেন। এই বিভাজ সামাজিক ভাবে এমন নির্যাতনে রুপ নিয়েছিল যে, সমাজে নিন্মবর্ণের মানুষের টেকাই দায় হয়ে উঠেছিল।তাদের অস্তিত্বের সংকট শুরু হয়ে  যায় রীতিমতো। বাংলাদেশে এই বিভাজনের মধ্য দিয়ে বিস্তৃতি ঘটে বিভিন্ন ধর্মের। কিন্তু জাতিভেদের সংকট বাংলাদেশ থেকে আজও যায়নি। ইতিহাসে সোনার অক্ষরে নয়, কান্নার নীল হরফে লেখা রয়েছে দলিত সম্প্রদায়ের কথা। তখন তাদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বন ছিল সুইপারের চাকরি।দেশের প্রায় সব অঞ্চলেই কমবেশি হরিজনদের বসতি রয়েছে। হরিজনদের ভাষা ভিন্ন হলেও এখন বর্তমানে কাজেকর্মে ও যোগাযোগের সুবিধার্থে তারা বাংলা ভাষার ব্যবহার করেছেন । হরিজনরা একই পুকুরে গোসল করতে পারে না। তাদের স্পর্শ করাও নিষিদ্ধ। যুগের পরযুগ অস্পৃশ্যতার বেড়াজালে আবদ্ধ থেকে প্রতিবেশী বাঙালিদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন তো দুরের কথা, কথা বলতে পর্যন্ত ভয় পায় তারা। হিন্দু বৌদ্ধ, মুসলমান,খৃস্টান- সবার কাছে এরা শুধুই মেথর। হরিজনরাও আমাদের দেশের,সংস্কৃতিরই একটি অংশ। তারপর ওরা অস্পৃশ্য। মঙ্গলবার (18 জুলাই) কবি গুরু রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের পতিসর কাচারি বাড়িতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা  গেছে  রাস্তার পার্শ্বে টিনের খুপরি ঘরের মধ্যে কাপড়ের বেড়া দিয়ে বউ, ছেলে –মেয়ে নিয়ে বাস করছেন। পতিসর হরিজন হেমন্ত্রী বলেন আমাদের আজ নিজস্ব জায়গা-জমি না থাকায় রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের কাচারি বাড়ির রাস্তার পার্শ্বে বসবাস করছি। এমন কি পানি বিদ্যুতের কোন ব্যবস্থা নাই আমরা খুব কষ্টে আছি। নেই কোন চাকুরি । হরিজনদের চাকুরি আজ মুসলমানরা  করছে আমরা পাচ্ছি না কর্ম সংস্থান।পাদলিত হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা সহ  সকল সুবিধা থেতে বঞ্চিত। এবিষয়ে মনিয়ারী ইউপি চেয়ারম্যান সম্রাট হসেন বলেন, আমার ইউনিয়নে রবীঠাকুরের কাচারী বাড়ির রাস্তার পার্শ্বে তারা বসবাস করছে তাদের আবাসন ও কম সংস্থানের খুব প্রয়োজন এবিষয়ে উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।আমার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে যকটুকু সম্ভব সহযোগিতা করা হয়। এ বিষয়েয় আত্রাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ইকতেখারুল ইসলাম জানান, রবীঠাকুরের এলাকার হরিজনদের আবসনের সংকট, তবে উপজেলা প্রশাসন থেকে হরিজনভাতা প্রদান করা হয়।আবাসন বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।