Advertisement
রংপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
‘হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন সমাজের বাইরের কেউ নয়, তারাও সমাজের একটি অংশ। দেশের সংবিধান আর আইনের দৃষ্টিতে ওদের সমান অধিকার আছে। শুধু আমাদের মাঝে থাকা সামাজিক বৈষম্য দূর করতে হবে। অন্য সম্প্রদায়ের লোকজন হোটেলে বসে খেতে পারে কিন্তু আমাদের মানসিকতার কারণে হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন হোটেলে বসে খেতে পারে না। এটা অমানবিক ও আইনের পরিপন্থী। আমি আমার ইউনিয়ন থেকে এই অমানবিক ও বৈষম্য দূর করতে চাই।’ কথাগুলো বলছিলেন রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী।
এ সময় হরিজন সম্প্রদায়ের লোকদের নিয়ে হোটেলে একসঙ্গে বসে খাবার খান এই ইউপি চেয়ারম্যান। এক পর্যায়ে তিনি নিজ হাতে মিষ্টি তুলে হরিজন সম্প্রদায়ের লোকদের খাওয়ান।
ইউপি চেয়ারম্যান তার ইউনিয়নের আনুরবাজার ও মহিপুর বাজারের বিভিন্ন হোটেলে তাদের খাওয়ান এবং হোটেল মালিকসহ উপস্থিত লোকজনদের এ উদ্যোগে বিভ্রান্তি না ছড়িয়ে সহযোগিতা কামনা করেন। এছাড়া হোটেল মালিকরা তাদের খাবার না দিলে হোটেলের ট্রেড লাইসেন্স বাতিলের ঘোষণা দেন চেয়ারম্যান।
ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, ওরা একটা অন্য সম্প্রদায়ের লোক হওয়ায় হোটেলে খেতে দেওয়া হয় না। অথচ কোথাও লেখা নাই ওরা হোটেলে খেতে পারবে না। শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাজার খরচ করতে পারে, টাকা লেনদেন করতে পারে কিন্তু হোটেলে বসে খাবার দেওয়া হয় না, এটা হতে পারে না। তাই আমি আমার ইউনিয়নে এই উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করি এ কাজে আমার ইউনিয়নবাসী সহযোগিতা করবে এবং এখান থেকে উপজেলার সব জায়গায় তাদের খাবারের ব্যাপারে আন্তরিকতার পরিচয় দেবে।
হোটেলে চেয়ারম্যানের সঙ্গে খাওয়ার সময় হরিজন সম্প্রদায়ের কৃষ্ণ চন্দ্র বাসফোর, কনক চন্দ্র বাসফোর, শান্ত চন্দ্র বাসফোর, অজয় বাসফোর, হৃদয় বাসফোরসহ বিভিন্ন লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
কৃষ্ণ চন্দ্র বাসফোর বলেন, লক্ষ্মটারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজ যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা সত্যিই আমাদের জন্য অনেক পাওয়া। হোটেলে খেতে গেলেই নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয় আমাদের। চেয়ারম্যানের মতো সমাজের অন্যরাও যদি এগিয়ে আসেন তাহলে আমরা বৈষম্যের শিকার হবো না।