Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদক :
এক সময় শীর্ষ মাদক সম্রাট হিসাবে এক নামে পরিচিতো ছিলো অন্ধকার জগতের সাহাবুর। রাজশাহীতে মাদকের গটফাদার হিসাবে যে মানুষ কে চিনতেন অন্ধকার জগতের সব মানুষ। সেই সাহাবুর রহমান গত প্রায় এক বছর আগে সকল অবৈধ ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্য বর্তমানে সফল উদ্যোক্তা হিসাবে সাফল্য অর্জন করেছেন। সাহাবুর রহমান চারঘাট শলুয়া ইউপি ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ওই গ্রামের আকবর আলীর ছেলে।
জানা গেছে, সাহাবুর রহমান ছোট থেকে খুব সাহশি ছিলেন। কোন অন্যায় দেখলে করতে প্রতিবাদ। ছোট থেকে মানুষের সুখে দুখে পাসে থেকে সহায়তা করতে দুস্থ মানুষ কে সাহাবুর রহমান। এলাকার পরিবেশ গত কারনে বেশি দুর লিখা পড়া করা হয়নি তার। এক সময় এলাকার মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে চক্রান্তের শিকার হয়ে মিথ্যা মাদক মামলায় ফেঁসে যায় সাহাবুর। তার পর থেকে আস্তে আস্তে মাদক সম্রাট হয়ে উঠেন তিনি। অন্ধকার জগতের শীর্ষ মাদক সম্রাট হিসেবে পরিচিতি পায় তার । এলকায় ফেনসিডিল, হেরোইন, ইয়াবাসহ সকল মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রন করতেন এক সময় তিনি। মাদক মামলাও রয়েছে বেশ কিছু তার বিরুদ্ধে।
সাম্প্রতিক প্রায় এক বছর ধরে হটাৎ বদলে যায় সাহাবুর রহমান। তার দুই ছেলে মাদ্রাসায় পড়েন। তার স্ত্রী দূর্ঘটনায় মারা যান। সকল অবৈধ ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে জনগনের সেবা করার উদ্দেশ্যে প্রতিজ্ঞা করেন সাহাবুর রহমান। এলাকা বাসীকে প্রতিশ্রুতি দেন অন্ধকার জগত ছেড়ে ভালো হতে চান তিনি। মানুষের সেবক হতে চান তিনি। এমন প্রতিজ্ঞা করে এলাকাবাসীর সমর্থনে ইউপি সদস্য পদে নির্বাচন করেন। নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে চারঘাট শলুয়া ইউপি ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হন তিনি। বর্তমানে ইউপি সদস্য হিসাবে এলাকাবাসীর সেবা করে যাচ্ছেন তিনি। ইউপি নির্বাচনে বিয়জী হয়ে তার প্রথম প্রতিশ্রুতি মাদক মুক্ত ওয়ার্ড। এলাকা থেকে মাদক নির্মূল করতে গিয়ে পড়েন বিপাকে। মাদক মুক্ত ওয়ার্ড গড়তে গিয়ে ও মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিভিন্ন সময় হত্যার হুমকি, হামলা এবং তার এক সমর্থক মাদক ব্যবসায়ীদের হামলায় নিহত হন। তবুও মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বর্তমানে মাদক মুক্ত ওয়ার্ড গড়েছেন তিনি।
আরো জানা গেছে, একদিকে জনপ্রতিনিধি ও অপরদিকে মাত্র এক মাসেই হয়েছেন সফল উদ্যোক্তা। গত মাস খানেক আগে পুঠিয়া বানেশ্বর বাজারে মায়ের দোয়া হোটেল এন্ড রেসর্টুরেন্ট করেন তিনি। অধুনিক হোটেল ও রেসর্টুরেন্টে এতিম, মিসকিন ও মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীর জন্য হোটেলের খাবার ফ্রি করে দেন তিনি। অল্প সময় হোটেল ব্যবসায় নাম লিখিয়ে বর্তমানে সফল হয়েছেন। প্রতিদিন তার অধুনিক হোটেল ও রেসর্টুরেন্টে এতিম, মিসকিন ও মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা ফ্রি খাবার খান। সেই সাথে খুব দ্রুত মানুষের কাছে তার হোটেলের খাবার জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বর্তমানে হোটেল ব্যবসায় সাফল্য অর্জন করেছেন তিনি। চারঘাট উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও তাঁতারপুর গ্রামের আকবর আলীর ছেলে সাহাবুর রহমান বর্তমানে সকল অবৈধ কর্মকান্ড ও মাদক ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে মানুষের সেবা ও হোটেল ব্যবসার মাধ্যমে তার জীবনকে বদলে দিয়েছেন। একসময় শীর্ষ মাদক সম্রাট হিসাবে পরিচিত থাকলেও বর্তমানে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও মানুষের সেবক হিসাবে দ্রুত সময়ে পরিচিতি পেয়েছেন বলে দাবি করেন সাহাবুর রহমান।
সাহাবুর রহমান গত রোববার এ প্রতিবেদকে দেয়া একান্ত সাক্ষাত কারে বলেন, মানুষ মাত্র ভূল হয়ে থাকে। আমি ভুল করে ভুল পথে ছিলাম। বর্তমানে আমি অন্ধকার জগত ছেড়ে দিয়ে মানুষের সেবা করে যাচ্ছি ও হোটেল ব্যবসায় সাফল্য অর্জন করেছি। দ্রুত আমার হোটেল এন্ড রেসর্টুরেন্ট মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সেই সাথে হোটেলে কর্ম হয়েছে ১০ থেকে ১৫ জন বেকার যুবকের। মাদকের বিরুদ্ধে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে প্রতিবাদ শুরু করেছি। এলাকা করেছি মাদক মুক্ত। আমার হোটেলে কাজ করে ১০ থেকে ১৫ জন মানুষ তারা পেয়েছে কর্ম।
তিনি আরো বলেন, এক সময় ভুল পথে থেকে হটাৎ ভালো পথে সাফল্য অর্জন করা খুব কোঠিন। একটু সময় লাগলেও স্যত পথে অর্থ উপার্যনের আনন্দ খুব বেশি। বর্তমানে আল্লাহ্ সুন্দর ও সরল পথ দেখিয়েছেন আমাকে এ জন্য হাজার শুক্রিয়া জানায় মাহান আল্লাহ্ কে। আমি একজন উদ্যোক্তা হিসাবে সফল হয়েছি। সারাজীবন এ ভাবেই ভালো পথে চলতে পারি এ জন্য দোয়া করবেন সবাই আমার জন্য। সেই সাথে প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষন করছি তারা আমাকে যে সহায়তা করেন। আমার বিরুদ্ধে এলাকার মাদক ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন বিভিন্ন ভাবে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। যে কোন ভাবে ফাঁসাতে মরিয়া তরা। আমার জড়িয়ে যদি কেউ মাদক নিয়ে আমার বিরুদ্ধে কোন প্রকার মিথ্যা তথ্য প্রদান করে থাকে তাদের কথায় বিভ্রান্ত হবেন না প্রশাসনের কাছে আমার অনুরোধ।আমি সরল পথে জীবন পরিচালনা করতে অঙ্গীকারবন্ধ। এ জন্য প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি কামনা করছি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিলে কেউ বিভ্রান্ত হবেন না। আমি বর্তমানে কোন প্রকার মাদক ব্যবসাতো দূরের কথা কোন প্রকার মাদক সেবনের সাথেও আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। এ জন্য আপনাদের ও প্রশাসনের সহায়তা কামনা করছি বলে জানান সাহাবুর রহমান।