lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
শনিবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৩
Last Updated 2023-08-19T10:24:25Z
স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা

ঠাকুরগাঁও হাসপাতালে জিম্মি রোগীরা,পকেট কাটছে সিন্ডিকেট চক্র

Advertisement

মোঃ মজিবর রহমান শেখ

দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও। এই জেলার চিকিৎসার একমাত্র ভরসার স্থল ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল। আর এ হাসপাতালে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় জেলার প্রায় ৫-৬ শতাধিক রোগী। অন্যান্য বিভাগে একাধিক ডাক্তার থাকলেও সার্জারি বিভাগে শুধুমাত্র একজন চিকিৎসক। এক সার্জারী নির্ভর হওয়ায় গরিব মানুষের পকেট কাটছে একটি সিন্ডিকেট চক্র। আর এ চক্রের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে ডা: শিহাব মাহমুদ শাহ্রিয়ার সুজনের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি অভিযোগ তুলে ডাক্তার শিহাবকে নিয়ে নর্দান মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনিস্টিক সেন্টারের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন রোগীর স্বজনরা।

চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজন ইসমা আক্তার বলেন আমরা সিহাব স্যারকে দেখাইছি, ওনি বলে কিডনিতে ষ্টোন। এটা অপারেশন লাগবে। এই অপারেশন হাসপাতালে হবে না, মেশিনে করতে হবে। ক্লিনিকে ভর্তি হই। সে মোতাবেক নর্দান মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনিস্টিক সেন্টারে ভর্তি করাই। ক্লিনিকে অপারেশন শেষে বলে এটা ওপেন হয়েছে। ক্লিনিকের সাথে কন্ট্রাক্ট হয় ২২ হাজার টাকা কিন্তু পরবর্ততে আরও ৪ হাজার টাকা দাবি করলে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে বিদায় নিতে হয়। ঔষধ পত্রসহ প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পরে রোগী অসুস্থ্য হয়। পরে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়।

শহরের আশ্রমপাড়ার বাসিন্দা নাজমা আক্তার মিম বলেন আমার মাকে ডাক্তার শিহাবের চেম্বারে দেখাই। ওনি বলেন গোলব্লাডারে পাথর। আমরা প্রথমে হাসপাতালে ভর্তি হই। পাঁচ দিন থাকার পরেও বিভিন্ন অজুহাতে অপারেশন না হলে পরে ক্লিনিকে ভর্তি করাই। কিন্তু ক্লিনিকে ভর্তি হওয়ার সাথে সাথে কিভাবে অপারেশন হয় ? তাহলে ওনি কিভাবে অপারেশন করলো ? তিনি আরও বলেন ডাক্তার শিহাবের ব্যবহার খুবই খারাপ, ওনি মানুষকে মানুষই মনে করে না। ওনি ডাক্তার হয়েছে শুধু টাকা ইনকাম করার জন্য।

রোগী আশিক (২০) বলেন আমরা গরিব মানুষ, আমার বাবা ভ্যান চালায়, এই যদি অবস্থা হয় তাহলে আমরা কোথায় যাবো ? উত্তর হরিহরপুর গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন আমার রোগী অসুস্থ হলে ডাক্তার শিহাবের কাছে নিয়ে যাই। তিনি দেখার পরে বলেন ক্লিনিকে ভর্তি করাতে হবে। হাসপাতালে হবে না, ৩ লাখ টাকা লাগবে। পরে ক্লিনিকে ভর্তি হয়ে ৪০ হাজার টাকায় অপারেশন করাতে হয়। ঔষধপত্রসহ অন্যান্য খরচ তো আছেই। কি করবো কোন উপায় তো নাই। ক্ষয়ক্ষতি করে টাকা যোগার করে অপারেশন করাতে হয়েছে। ঠাকুরগাঁও শহরের সত্যপীর ব্রীজ এলাকার আকাশ ইসলাম বলেন আমার বড় ভাই দূর্ঘটনার শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। তিনি সুস্থ্য হতে না হতেই পরের দিন রিলিজ দেয়। এ ব্যাপারে কথা বললে উত্তেজিত হয়ে উঠেন। এ সময় অন্যান্য রোগীরা কথা বললে, তাদেরকেও রিলিজ দেয়। এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি কিন্তু ওনারাতো কোন প্রদক্ষেপই নিলেন না। মনে হয় সকলে জিম্মি হয়ে গেছে। আর এমন চিত্র শুধু আমার ক্ষেত্রেই নয়। শত শত রোগীর একই কথা। নর্দান মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনিস্টিক সেন্টারের মালিক মিঠু এ ব্যাপারে কোন  কথা বলতে রাজি হননি। ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামীলীগের নেতা জয় চৌধুরী বলেন, সাধারণ মানুষ দিশেহারা অবস্থায় হাসপাতালে আসে চিকিৎসা নিতে কিন্তু একটি দালাল চক্র, সিন্ডিকেট চক্র এই সরলতার সুযোগ নিয়ে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: ফিরোজ জামান জুয়েল। ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা: নূর নেওয়াজ আহমেদ বলেন, তদন্ত করে প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।