lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
বুধবার, ২ আগস্ট, ২০২৩
Last Updated 2023-08-02T16:49:15Z
রাজনীতি

আওয়ামীলীগ সংগ্রাম করে গনতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে' মানুষ এখন শান্তিতে ভোট দিচ্ছে -মাননীয় প্রধানমন্ত্রী

Advertisement

রংপুর জেলা প্রতিনিধিঃ

আওয়ামীলীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমার সপরিবারকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা দুই বোন দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে গেছি। ৮১ সালে বাংলাদেশে আসি, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করে। শতবাধা উপেক্ষা করে আমি বাংলাদেশে ফিরে আসি দেশের মানুষের পাশে থাকার জন্য। আমি ৮১ সালে বাংলাদেশে এসে রংপুর বিভাগের প্রতিটি এলাকায় ঘুরেছি, দেখেছি মানুষের হাহাকার। আমাদের অঙ্গীকার ছিল যখনই ক্ষমতায় আসতে পারবো, এই মানুষদের ভাগ্যকে পরিবর্তন ঘটাবো। দেশের মানুষের জীবনের মান উন্নত করবো। দেশের মানুষের জন্য যে স্বপ্ন দেখেছিলেন আমার বাবা জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান, সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। বুধবার (২ আগস্ট) বিকেলে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগ আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আমরা সৌভাগ্যবান, আজ আমরা বাংলাদেশকে দারিদ্র মুক্ত করতে পেরেছি, ক্ষুধা মুক্ত করতে পেরেছি। এই আওয়ামী লীগের সময়ে রংপুরে খাদ্যের অভাব হয়নি। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসলে নৌকায় ভোট পেলে দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসেছিলাম, তখনও মঙ্গা ছিল না। যখন ২০০১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে দুই হাতে টাকা-পয়সা লুট করে, তার ছেলেরা মিলে। এই দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে, আবার দেশে মঙ্গা শুরু হয়। ২০০৮-এর নির্বাচনে আমরা সরকার গঠন করি। তারপর থেকে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি, এ দেশের মানুষের কোনো কষ্ট হয়নি। আমরা এই সাড়ে ১৪ বছরে প্রায় ২ কোটি ৩৫ লক্ষ যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পেরেছি।

ন্যাশনাল সার্ভিসের মাধ্যমে আমরা ট্রেইনিং দিয়েছি, কাজের ব্যবস্থা করেছি। রংপুরকে বিভাগ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে আওয়ামীলীগ। আর এই বিভাগের সাথে সাথে সিটি কর্পোরেশন হয়েছে। আর বিভাগের সঙ্গে অনেক প্রতিষ্ঠান যুক্ত, তা আমরা দিয়েছি। উত্তরবঙ্গ থেকে যোগাযোগের জন্য ৯৬ সালে যখন আমি ক্ষমতায়, ওই যমুনা নদীর ওপর রেল লাইন, বিদ্যুৎ গ্যাসের লাইনসহ সেতুন নির্মাণ করে আমরা অতি সহজে রাজধানীতে পৌছার জন্য ব্যবস্থা করেছি। আজকে যত রাস্তা-ঘাটের উন্নতি তা আওয়ামীলীগ সরকারই করে দিয়েছে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক করে দিয়েছি, সেখানে ২০ প্রকার ওষুধ বিনামূল্যে দিচ্ছি। মা বোনেরা আজকে পায়ে হেঁটে ঘরের কাছে চিকিৎসা পান, সে ব্যবস্থাও আওয়ামীলীগ সরকার করে দিয়েছে। বয়স্কভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী নিগৃহ ভাতা, প্রতিবন্ধীদের ভাতা আমরা দিচ্ছি, আজকে মানুষের হাহাকার নেই। এই ভাতা নিয়ে আজকে পরিবারের মাঝে থাকতে পারছে স্বামী নিগৃত ও বয়স্ক মানুষরা।আওয়ামী লীগ কৃষকের বন্ধু উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১০ সালে আমরা কুড়িগ্রামে প্রথম এসে ১০ টাকায় কৃষকের ব্যাংক একাউন্ট খোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন শুরু করে ছিলাম। একজন কৃষক ১০ টাকার ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারে। কৃষক ভর্তুকির টাকা ওই ব্যাংকের একাউন্ডের মাধ্যমে তুলতে পারছেন। ২ কোটি ১০ লক্ষ কৃষককে আমরা কৃষি উপকরণ কার্ড দিয়েছি। যাতে ওই কার্ড দেখে কৃষকরা দোকান থেকে কৃষিপণ্য কিনতে পারে উৎপাদনের আগে আমরা সেই ব্যবস্থাও করেছি। সারের দাম কমে দিয়ে যাতে কৃষকের ঘরে সার পৌছে যায় সে ব্যবস্থাও আমরা করেছি। অথচ খালেদা জিয়া কি করেছিল, কৃষক সার চেয়েছে, গুলি করে মানুষকে হত্যা করেছে। ওই গাইবান্ধা মাহিমাগঞ্জেই তো হত্যা করলো খালেদা জিয়া, গুলিতে বাপ-ছেলে এক সঙ্গে মারা গেলো।

আমরা ছুটে গেছি সেই মানুষদের কাছে। ১৮ জন কৃষক হত্যা করেছিল তারা। আর এখন কৃষককে সার খুঁজতে হয় না, আমরা কৃষকের ঘরে সার পৌছার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আমরা কথা দিয়েছিলাম সবার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিব। আজকে আমরা সব ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি। আমি খালি হাতে আসিনি, আপনাদের জন্য উপহার নিয়ে এসেছি- উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখেছেন আমি কতগুলো প্রকল্পের উদ্বোধন করলাম। যার মাধ্যমে আপনাদের এই অঞ্চলে প্রত্যেকটা জিনিসের উন্নয়ন যাতে ত্বরান্বিত হয় সেই ব্যবস্থাও আমরা করে দিয়েছি। একই সাথে আমি জানি না আগে কখনও এতোগুলো প্রকল্প আর কেউ দিয়েছে কিনা। আমরা রংপুর পল্লী উন্নয়ন একাডেমিক প্রতিষ্ঠা করে দিয়েছি। সেখানে ট্রেনিং হবে পল্লী উন্নয়নের কাজ করতে পারবে, সে ব্যবস্থা করে দিতে পরেছি।

১০০ শয্যা বিশিষ্ট রংপুর শিশু হাসপাতাল এবং রংপুরে পুলিশ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। রংপুরে রেলওয়ের ষ্টেশন নির্মাণ করে দিয়েছি। এলেঙ্গা রংপুর ৬ লাইনের মহা সড়কে উন্নিত করা হচ্ছে। বগুড়া, রংপুর, সৈয়দপুর গ্যাস সঞ্চালন পাইপ লাইন নির্মাণ প্রকল্প উত্তরের শিল্পায়নে নতুন মাত্রা যোগ হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শ্যামপুর সুগার মিল বন্ধ আছে, তা চালু করার ব্যবস্থা করা হবে। সৈয়দপুর ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে, কুড়িগ্রামে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় করে দিয়েছি, রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও লালমনিরহাটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন এয়ার এন্ড স্পেস বিশ্ববিদ্যালয় আওয়ামীলীগ সরকার করে দিয়েছে। সৈয়দপুরে বিমানবন্দর অবহেলিত ছিল, সেই সৈয়দপুর বিমানবন্দর আমরা উন্নয়ন করে দিচ্ছি। এটা আঞ্চলিক বিমানবন্দর নেপাল, ভুট্টান ও ভারত ব্যবহার করতে পারবে সে ব্যবস্থাও আমরা করে দিচ্ছি।বাংলাদেশে কোনো মানুষ ভূমিহীন থাকবে না উল্লেখ করে দেশপ্রধান বলেন, ‘ভূমিহীন মানুষদের জন্য ২ কাটা জমিতে ঘর দিয়েছি এবং তাদেরকে বিনা জামানতে, বিনাসুদে জীবিকা নির্বাহের জন্য আমরা ঋণ দিচ্ছি।’ এখানে একটা গোষ্ঠী আছে যারা সব সময়ে মানুষের ভাগ্য নিয়ে খেলে, জাতির পিতাকে হত্যা করে সেই খেলা শুরু হয়েছিল। বারবার ক্ষমতা দখল, হত্যাযজ্ঞ রাজনীতির মাঠ। আমরা অনেক সংগ্রাম করে গণতন্ত্র ফিরে এনেছি, মানুষ শান্তিমত ভোট দিতে পারছে। এই ভোট দেয়ার জন্য আমরা ছবিসহ ভোটার লিস্ট করেছি, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স করে দিয়েছি। শান্তিপূর্ণভাবে যাতে মানুষ ভোট দিতে পারে সে ব্যবস্থাও আমরা করে দিয়েছি। রংপুর বিভাগে ৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে খাল খননের কাজ চলছে।