lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
Last Updated 2023-09-20T15:03:02Z
আইন ও অপরাধ

ঘোড়াশালে এক সমিতি গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে উধাও

Advertisement


হাজী জাহিদ, নরসিংদী পলাশ :



 নরসিংদীর পলাশের ঘোড়াশালে শতরুপা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। গ্রাহকদের কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে গেছে প্রতারক চক্রটি।


জানা যায়, ২০২০সালে ঘোড়াশাল সাদ্দাম বাজারে টিটু দাস ও রিপনদে বাজারের ব্যবসায়ীদের নিয়ে একটি সমিতি গঠন করে। টিটু দাস পলাশ উপজেলার ডাংগা ইউনিয়নের ভিরিন্দা গ্রামের নির্মল দাসের ছেলে ।অপর দিকে রিপন দে পলাশ উপজেলার চরসিন্দুর ইউনিয়নের কাঊয়াদি গ্রামের সুশীল দে এর ছেলে । সম্পর্কে তারা মামাত ফুফাতো ভাই। সাদ্দাম বাজারের একটি একচালা টিনের ঘরকে অফিস বানিয়ে সমিতির কার্যক্রম শুরু করে প্রতারক চক্রটি।


প্রথম অবস্থায় বাজারের ব্যবসায়ীদের গ্রাহক বানিয়ে দৈনিক ও মাসিক বিনিয়োগ নেয়। পরে এক বছরে ঋণ সুবিধা, অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে বাজারের প্রায় একশত ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রায় এক কোটি টাকার বেশী সঞ্চয় তুলে নেয়। অল্প সময়ে অধিক মুনাফা ও সহজ ঋণের আশায় সঞ্চিত টাকা খুইয়ে ব্যবসায়ীরা আজ সর্বশান্ত।


সমিতির একাধিক গ্রাহক জানান, ডাংগা ইউনিয়নের ভিরিন্দা গ্রামের টিটু দাস ও রিপনদে ঘোড়াশাল পৌর এলাকার পাইকসা গ্রামের দেবজিত মাষ্টার সাথে মিলে ২০১৭ সালে ঘোড়াশাল ষ্টেশন রোডের ব্যবসায়ীদের নিয়ে শীতলক্ষা নামে একটি সমবায় সমিতি গঠন করে। পরে দেবজিত মাষ্টার গ্রাহকদের প্রায় কোটি টাকা নিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে পালিয়ে যায়।


বছর খানেক সমিতির কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর ২০২০ সালে টিটু দাস ও রিপন দে নতুন আঙ্গিকে ঘোড়াশালে শতরুপা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি লিমিটেড নামে সমিতি গঠন করে। সমিতির কোন নিবন্ধন ছিল না। এ ছাড়াও সমিতির অফিসে নেই কোন সাইন বোর্ড।ছাপানো বই ও অভাবনীয় লাভের আশ্বাস আর সাধারণ ব্যবসায়ীদের সরল বিশ্বাসকে পুঁজি করে গড়ে তোলে সমিতি। তারপর হঠাৎ ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে গ্রাহকদের সঞ্চিত সমুদয় টাকা নিয়ে গা ঢাকা দেয় টিটু দাস ও রিপন দে।


সমিতির গ্রাহকরা আরো জানান, সঞ্চিত টাকা উদ্ধারে আমরা টিটু দাস আটক করলে স্থানীয় নেতাদের সহায়তায় পালিয়ে যায়।


ঘোড়াশাল ষ্টেশন রোডের সাদ্দাম বাজারের দিলীপ শীল, মুদি দোকানি বিমল দে, ইউসুফ মিয়া, মোশারফ, নীলা ষ্টোর, গোস্ত বিক্রেতা কাউছার, পান বিক্রেতা রাসেল, ফল বিক্রেতা তাওহিদ, মুরগী বিক্রেতা আদেল, পরিবহন ব্যবসায়ী রবিউল ,সবজি বিক্রেতা মাসুদ, নাজমুল, তালা মেরামতকারী আক্তার, ওষধ ব্যবসায়ী শিবানি সহ শতাধিক ব্যবসায়ীর প্রায় কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় প্রতারক চক্রটি।


এ বিষয়ে গোস্ত বিক্রেতা কাউছার জানান, সমিতিতে আমার জমানো টাকার পরিমাণ প্রায় ৭০ হাজার। আমরা ছোটখাট ব্যবসা করে খাই। সহজ শর্তে ঋণ দিত আর বছর শেষে ভাল লাভ পাব এই আশায় সমিতি করি।


সমিতিতে মুদি ব্যবসায়ী নির্মল দেবের ৭২ হাজার , দিলীপ চন্দ্র শীলের ৫২ হাজার, সারোয়ার হোসেনের ৮০ হাজার, সবজি বিক্রেতা কালামের ৩৪ হাজার, সবুজের ৬০ হাজার, মোস্তফার ৯০ হাজার, ফল বিক্রেতা তৌহিদের ৬০ হাজার, ফল বিক্রেতা বাবুর ৩১ হাজার, আলমগীরের ৭৭ হাজার, ইউসুফ মিয়ার ৩৩ হাজার, তালা মিস্ত্রি আক্তারের ৩০ হাজার টাকা ,মুরগী বিক্রেতা আদেলের প্রায় ৮০ হাজার, মোশারফ হোসেনের ২৮ হাজার, পান বিক্রেতা রাসেলের ৬২ হাজার, ওষধের দোকান শিবানির প্রায় ৩ লক্ষ টাকা। পরিবহন ব্যবসায়ী রবিউলের ১ লক্ষ টাকা, বিমল দের ১০ হাজার টাকা সহ একাধিক গ্রাহকের টাকা রয়েছে বলে জানা যায়।


এ বিষয়ে সমিতির মালিক টিটু দাসের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমি ১৩ মাস সমিতির সাথে জড়িত ছিলাম। আমি মালিক পক্ষের কেউ না। আমি এখানে বেতনভুক্ত কর্মচারী ছিলাম। সরাজ কুমার ধর ও রিপন দে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করত।


রিপন দের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। সমিতির সদস্যরা জানান, আমরা টিটু দাস ও রিপন দে কে চিনি ,সরাজ কুমার নামে কেউ ছিল বলে জানা নেই।