Advertisement
আব্দুল জব্বার, ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি:
পাট বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল। বিশ্বব্যাপী রয়েছে বাংলাদেশী পাটের ব্যাপক চাহিদা। সরকার পাট রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করলেও হাসি নেই প্রান্তিক চাষীদের মুখে। পাট চাষীদের দাবি পাটের বাজার সিন্ডিকেট দখল করায় ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। এমনকি পাট আবাদ ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন অনেকেই।
পাবনার কাশিনাথপুর হাট পরিদর্শন করে দেখা যায়, প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকায়। যদিও গত হাটে পাটের সর্বোচ্চ দাম ২৬৫০ টাকা থাকলেও মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে এই দরপতন।
কৃষকদের দাবি অসাধু ব্যবসায়ীরা সামান্য বৃষ্টির ছিঁটে পড়লে ও হাঁটে পাটের আমদানি বেশি হলে সিন্ডিকেট করে পাটের দাম কমিয়ে দেয়। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের বাজার ব্যবস্থা অনুযায়ী দাম দিয়ে পাট ক্রয় করা হচ্ছে।
পাবনার কাশিনাথপুর পাটের পাইকারি ব্যবসায়ী মোসলেম বলেন, গত বছরে এই সময়ে প্রতি মণ পাট ৩ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এবছর সবচেয়ে ভাল পাট আমরা ২৩শ থেকে ২৬শ টাকা করে কিনতেছি। আসলে দেশে সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থা নেই বললেই চলে, সিন্ডিকেটের জন্য দাম উঠানামা করে। পাট রপ্তানি করা দেশগুলোর সাথে শক্তিশালী চুক্তি হতে পারে এর সমাধান বলেন তিনি।
ব্যবসায়ী শরৎ চন্দ্র বলেন, আমরা পাবনার বিভিন্ন হাট থেকে পাট ক্রয় করে খুলনা, নারায়ণগঞ্জ, কুষ্টিয়া, বগুড়াসহ বড় বড় আড়ৎদারদের কাছে পাইকারি বিক্রি করি। কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে কৃষকরা ন্যায্য দাম পাচ্ছে না। কৃষকের ন্যায্য মুল্য দিতে সরকারের পক্ষ থেকে পাটের সঠিক বাজার দর ঠিক করা দরকার কেননা সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ না করলে এই সমস্যার সমাধান হবে না।
পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জামাল উদ্দিন বলেন, এ বছর পাট আবাদের শুরুতে বৃষ্টি হওয়াতে পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। এরপর পাট কাটার শুরুতে পানি না থাকায় কৃষকরা বিড়ম্বনার শিকার হলেও পরে বৃষ্টি হওয়ায় কৃষকরা পাট জাগ দিতে পেরেছে। শুরুতে পাটের বাজার দর ২৬০০ টাকায় কৃষকরা খুশি ছিল কিন্তু হঠাৎ করে ১৮০০- ২০০০ হাজারে দাম নামল কি জন্য সেটা বুঝে আসছে না। বাজার দর নিয়ন্ত্রণে রাখার দায়িত্ব কৃষি বিপণন কেন্দ্রের।
পাবনা জেলা সিনিয়র কৃষি বিপণন (বাজার) কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম বলেন, গতবার অনেক ব্যবসায়ী ৩ হাজার টাকা করে পাট কিনে পরে ২ হাজার টাকা করে বিক্রি করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যে কারণে এবার পাট কেনার আগ্রহ কম।
পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলার ৯ উপজেলায় ৪৫ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে পাট আবাদ হয়েছে। গত বছরে আবাদ হয়েছিল ৪০ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে। যা সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি।