Advertisement
মাহতাবুর রহমান, নিজস্ব প্রতিবেদক:
চাঞ্চল্যকর পরকীয়ার জেরে নিজের ছেলেকে হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডাদেশপ্রাপ্ত পলাতক আসামী মা খুকি বেগম (৫০) কে র্যাব-১০ ও র্যাব-১১ যৌথ অভিযান চালিয়ে ১০ নভেম্বর রাত ১১ টার দিকে ফরিদপুর জেলার বৈঠাখালী এলাকা থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গ্রেফতার করে। র্যাব-১০ আজ ১২ নভেম্বর দুপুর ১ টায় এ সংবাদ নিশ্চিত করেছে।
খুকি বেগম (৫০) চাঁদপুর জেলার হাইমচর উপজেলার দক্ষিণ আলগী গ্রামের আনোয়ার উল্ল্যাহ ভূঁইয়ার মেয়ে। খুকি বেগম চাঁদপুর জেলার হাইমচর থানার মামলা নং-০৫ তারিখ- ১৯/১১/২০১৫ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ দন্ড বিধির চাঞ্চল্যকর পরকীয়ার জেরে আপন ছেলেকে হত্যা মামলায় আদালত কর্তৃক মৃত্যুদন্ডাদেশপ্রাপ্ত দীর্ঘদিন পলাতক আসামী।
জানা গেছে, খুকি বেগম(৫০) এর সাথে পার্শ্ববর্তী এলাকার জয়নাল গাজী নামক এক ব্যক্তির পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি খুকি বেগমের ছেলে আরিফ হোসেন জানতে পারে এবং এ নিয়ে মা ও ছেলের মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয়। ২০১৫ সালের শুরুতে ছেলে আরিফ হোসেন পার্শ্ববর্তী এলাকার আব্দুস সালাম মিজির মেয়ে আসমা আক্তারকে (১৯)’কে বিয়ে করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তাদের বিয়ে মা খুকি বেগম প্রথমে মেনে না নিলেও এক পর্যায়ে মেনে নেন। তার কিছুদিন পর থেকে আরিফ হোসনে ও তার বউয়ের সাথে আরিফের মা খুকি বেগমের বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে ঝগড়া বিবাদ হয়। এরই মধ্যে মা খুকি বেগম ছেলেকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৬ নভেম্বর ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে খুকি বেগত তার ছেলের বউ আসমা বেগমকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। অতঃপর ১৮ নভেম্বর ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ রাতে খুকি বেগম পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তার নিজ গৃহে ছেলে আরিফকে গরুর দুধের সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয়। আরিফ দুধ খেয়ে অচেতন হয়ে পরলে আরিফের মা খুকি বেগম ও তার পরকীয়া প্রেমিকসহ অজ্ঞাতনামা আরো দুইএক জনের সহযোগীতায় ছেলে আরিফকে ঘুমন্ত অবস্থায় হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে, বটি ও ব্লেড দিয়ে মারাত্মকভাবে রক্তাক্ত জখম করে। পরদিন ১৯ নভেম্বর ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ সকালে খুকি বেগম আরিফের স্ত্রী আসমাকে ফোন করে জানান যে ডাকাতরা আরিফকে মেরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে ফেলে গেছে। আরিফের স্ত্রী আসমা তাৎক্ষণিক স্বামীর বাড়িতে চলে আসেন এবং আরিফকে উদ্ধার করে প্রথমে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে ঢাকা নেওয়ার পথে মতলব ফেরিঘাট পার হওয়ার সময় আরিফ মৃত্যুবরণ করে। এ ঘটনায় ওই দিন ১৯ নভেম্বর ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে মৃত আরিফের স্ত্রী আসমা শাশুড়ি খুকি বেগমসহ অজ্ঞানামা দুইতিন জন ব্যক্তিদের আসামী করে হাইমচর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। এরপর থেকে আসামী খুকি আত্মগোপনে চলে যায় ও দেশের বিভিন্ন জায়গায় নাম পরিচয় গোপণ করে থাকে। ফরিদপুরেও উক্ত আসামী নাম পরিচয় গোপণ করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখে ধুলো দিয়ে বসবাস করতে থাকে। উক্ত মামলার ছায়া তদন্দের এক পর্যায়ে উক্ত আসামীর অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারে।
পরবর্তীতে ১০ নভেম্বর ২০২৩ রাত ১১ টার দিকে র্যাব ১০ ও র্যাব ১১ এর যৌথ প্রচেষ্টায় আসামী খুকি বেগমকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে।