lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
বুধবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৩
Last Updated 2023-12-06T08:19:06Z
ব্রেকিং নিউজ

গোদাগাড়ীতে অফিসে তালা বন্ধ করে পালিয়েছে ‘আদর্শ ফাউন্ডেশন সংস্থা’ নামের এনজিও

Advertisement


 

রবিউল ইসলাম মিনাল, গোদাগাড়ী(রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে ‘আদর্শ ফাউন্ডেশন সংস্থা’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগি গ্রাহকরা,  আরো অভিযোগ করে প্রায় ৬/৭ মাস আগে থেকে গ্রাহকদের টাকা না দিয়ে অফিসের সাইনবোর্ড খুলে ফেলে অফিসে তালা ঝুলিয়ে রেখেছে এই এনজিওটি। প্রায় ৬ মাস থেকে অফিসের তালাই খুলছেনা সংস্থাটি। অফিসে গিয়ে কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। সবাই লাপাত্তা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির নামে নিবন্ধন নিয়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে শাখা খুলে এনজিওটি তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। গোদাগাড়ী উপজেলায় প্রেমতলী, রাহী, কামারপাড়া, বাসেদেবপুরসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় শাখা খুলে এনজিওটি তাদের ক্ষুদ্র ঋণ ও ডিপিএস কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। প্রায় ৭ মাস থেকে সংস্থাটি তাদের অফিসের কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়ায় গ্রাহকদের জমাকৃত টাকা ফেরত পাচ্ছেনা বলে ভুক্তভোগি গ্রাহকদের অভিযোগ।


প্রতি লাখ টাকা জমা রাখার বিনিময়ে প্রতি মাসে তারা ১ হাজার ২০০ টাকা লাভ ও চাহিবামাত্র জমা রাখা টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের প্রলুব্ধ করে এবং তাদের কাছ থেকে টাকা নেয়। তাছাড়া তারা আরও বলেছিল যে লাভের টাকা আমরা প্রতি মাসে দিতে বাধ্য থাকব, কিন্তু সেই টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যান পরিচালকেরা। ভুক্তভোগি গ্রাহকেরা কর্তৃপক্ষের সাথে বারবার যোগাযোগ করলেও তাদের সাথে কোনভাবে যোগাযোগ করতে পারছে না।স্থানীয় সূত্রে জানাজায়, স্থানীয়


সমাজসেবা ও সমবায় অফিসের নিবন্ধন নিয়ে অধিক মুনাফার লোভসহ বিভিন্ন কৌশলে আদর্শ ফাউন্ডেশনের লোকজন সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন। ‘আদর্শ ফাউন্ডেশন সংস্থা’ গ্রাহক কালিদিঘি গ্রামের টমাস বলেন, আমার এক লক্ষ টাকার অধিক জমা আছে। আমাকে সাত থেকে আট মাস লাভের টাকা দিয়েছিল পরবর্তীতে ছয় থেকে সাত মাস টাকা দেয়নি। আমি তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা বলে সামনের সপ্তাহে আসেন কিন্তু পরের সপ্তাহ গিয়েও আমাকে কোন টাকা দিত না।


এখন থেকে ছয় থেকে সাত মাস আগে তারা পালিয়েছে। প্রেমতলি শাখায় তালাবদ্ধ এবং এমন কি সাইনবোর্ডও নাই। অফিস বন্ধ করে পালিয়ে যাওয়ায় আমরা আমাদের টাকা ফেরত পাচ্ছিনা। চরম বেকায়দায় পড়েছি। আগে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে টাকা ফেরত দেওয়া নিয়ে বিভিন্ন তাল বাহানা করেছে। আমাদের টাকা ফেরত দেয়নি। এখন তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ থাকে। ওই গ্রাহক এই প্রতিবেদককে বলেন, আপনারা কি পারবেন আমাদের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করে দিতে। আমরা তো না বুঝে টাকা জমা করেছিলাম।


বোগদামারি গ্রামের গ্রাহক চম্পা বেগমের ছেলে বলেন, আমরাকে না জানিয়ে আমার আম্মা মাসে মাসে সঞ্চয় জমা দিয়েছিল, সঞ্চয় এর পরিমাণ ছিল ৫১০০ টাকা। আমার আম্মার প্রায় ২ লক্ষ টাকা জমা হয়েছিল। আমার আম্মা এ যাবত লাভের কোন টাকা পায়নি। এক লক্ষ টাকার বিনিময়ে বৎসরে ১২০০০ টাকা লাভ দিবে। আমার আম্মা টাকা বা লাভের ঢাকায় এখন পর্যন্ত পাইনি। পরে যখন আমরা জানতে পারি তখন অফিসের লোকজনের সাথে কথা বললে তারা বলে আপনাদের টাকা আমরা সামনের সপ্তাহে দিব এ কথা বলে সামনের সপ্তাহ সামনের সপ্তাহ করে দেখাতে থাকে কিন্তু সাত থেকে আট মাস অফিসে তালাবদ্ধ এবং তাদের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করতে পারছি না।


গোদাগাড়ীর সমাজ সেবা অফিসার আব্দুল মানিক বলেন, আদর্শ ফাউন্ডেশন নামের কোন এনজিওর রেজিস্ট্রিশন এখান থেকে দেওয়া নেই, আসলে আমাদের এখানে ফাউন্ডেশন কথাটা উল্লেখ থাকলেই রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হয় না।


গোদাগাড়ী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন, আমার উপজেলায় আদর্শ ফাউন্ডেশন নামের কোন সংগঠন নাই।

গোদাগাড়ী উপজেলা সমবায় অফিসার মোহাম্মদ জিগার হাসরত বলেন, বিশেষ করে গোদাগাড়ী থেকে আদর্শ ফাউন্ডেশন নামের কোন প্রতিষ্ঠানের রেজিস্ট্রিশন দেওয়া নেই। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন আমার মনে হয় বাংলাদেশ সরকারের তো বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট রেজিস্ট্রিশন দেয় যেমন সমাজসেবা, সমাজ কল্যাণ, মহিলা বিষয়ক, যুব উন্নয়ন ওরা হয়তো বলতে পারবে, আমাদের সমবায় পার্টমেন্টের নয়। তিনি আরও বলেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এগুলো দেখাশোনা করবে সমাজ সেবার হলে সমাজ সেবার কর্মকর্তা, যুব উন্নয়ন সংস্থার হলে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা।


এ বিষয়ে আদর্শ ফাউন্ডেশন সংস্থার প্রেমতলী ব্রাঞ্চের ম্যানেজার আসাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে অপিসে তালা ঝুলানো ও সাইনবোর্ড নামিয়ে ফেলার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গ্রাহকদের সাথে হেড অফিসের কথা হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর মাসে গ্রাহদের টাকা দেওয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সমস্যার সমাধান না হলে অফিস কে খুলবে। তবে অফিস খোলা থাকলে গ্রাহকদের আস্থা থাকতো। অফিস বন্ধ থাকলে তো গ্রাহকরা আস্থা হারাবে। তিনি আরো বলেন, চেষ্টা চলছে খুব তারাতাড়ি এ সমস্যার সমাধান হবে। সম্যার সমাধান হলে গ্রাহকদের টাকা দেওয়া হবে ।