Advertisement
হাজী জাহিদ, নরসিংদী প্রতিনিধি:-
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোঃ নজরুল ইসলাম হিরু, স্বতন্ত্র প্রার্থী নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান কামরুল।নরসিংদী-১ আসনে) নৌকাকে ডুবাতে আওয়ামী লীগের নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান কামরুল কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন।
প্রতিদিন গাড়িবহর নিয়ে তিনি তার মতো করে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। শাপলা চত্বর নিজস্ব অফিসে বসে নেতাকর্মীদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠকও করছেন তিনি। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও মূলত আওয়ামী ঘরানার অনেক নেতাকর্মী তার পেছনে ছুটছেন। প্রচারণায় তিনি নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে দাঁড়াতে প্রধানমন্ত্রী বলেছে এবং প্রার্থিতা উন্মুক্ত করে দিয়েছে এরকম প্রচার-প্রচারণা নেতা কর্মী ও ভোটারদের মধ্যে চালাচ্ছেন।
নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই তার শোডাউন বেড়ে চলছে। সাংগঠনিক কোনো চাপ না থাকায় স্বতঃস্ফূর্ততা রয়েছে তার প্রচারণায়। প্রফুল্ল মেজাজে ভোট চাইছেন তিনি।
এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোঃ নজরুল ইসলাম হিরু নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। মোহাম্মদ ওমর ফারুক ভূঁইয়া নাঙ্গল প্রতীক জাতীয় পার্টি। মোঃ জলিল সরকার পাট প্রতীক তৃণমূল বিএনপি। মোহাম্মদ শফীর মিয়া ফুলের মালা প্রতীক তরিকত ফেডারেশন।মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন মোল্লা গোলাপ ফুল প্রতীক জাকের পার্টি। শাজাহান মিয়া একতারা প্রতীক বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি। মোঃ ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া ডাব প্রতীক বাংলাদেশ কংগ্রেস।
সূত্র জানায়, নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা মোহাম্মদ আলী,মাধবদী পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন মানিক, নরসিংদী শহর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন বাচ্চু, নরসিংদী জেলা আওয়ামী যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক শামিম নেওয়াজ, আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি এডঃ আসাদ উল্লাহ নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি শিবলীসহ সহযোগী সব সংগঠনের আংশিক কিছু নেতাকে তিনি তার প্রচারে শামিল করেছেন। এ ছাড়া শ্রমিক লীগের একটি অংশও তার প্রচারণায় কাজ করছে। গণসংযোগের শুরু থেকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে নির্বাচনী গণসংযোগ করছেন।
মোঃ নজরুল ইসলাম হিরুর জন্য মাঠে রয়েছেন নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জি এম তালেব হোসেন, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিরুল ইসলাম ভূঁইয়া, মনতাজ উদ্দিন ভূঁইয়া, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান হাবিবসহ ৯০শতাং জেলা আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীরা। নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগ , জেলা যুবলীগ থানা যুবলীগ সহ যুবলীগ বিভিন্ন ইউনিয়ন যুবলীগ, তাঁতীলীগ শ্রমিক লীগের একাংশ ও বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউপিবৃন্দ। নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা মোহাম্মদ আলী স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে নির্বাচন করছেন। তিনি তার প্রধান সমন্বয়ক হিসেবেও কাজ করছেন।
নরসিংদী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন বাচ্চু,মাধবদী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন মানিকসড় বেশ কয়েকজন নেতা নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করছেন।
এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রতিবাদের ঝড় তুলেছেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ত্যাগী নেতাকর্মীরা। ক্ষোভ প্রকাশ করছেন প্রবীণ নেতারাও।তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বলছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র হতে পারে।
তবে নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নৌকার প্রার্থীর মত বিনিময় সভায় বলেন, তাদের প্রত্যাশা সকল আওয়ামী লীগ নেতা নৌকার পক্ষে কাজ করবেন তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে। মোট নয় ১০ জন নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিল তাদের মধ্য থেকে ৭জন নৌকার পক্ষে কাজ করতে শুরু করেছেন। সভাপতি জি এম তালেব হোসেন বলেন নৌকার বিপক্ষে আমাদের কোন স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নৌকা যারা নৌকার বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছে তারা আশা করব তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে নৌকাকে বিজয়ী করবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সভাপতি বলেন ডামি প্রার্থী অর্থ হলো ছায়া প্রার্থী কোন দল যদি নির্বাচনে না আসে সিলেকশনে যাতে কোন প্রার্থী নির্বাচিত না হতে পারে এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নৌকার প্রার্থীকেই ডামি প্রার্থী রাখতে বলেছেন।এদিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন চেম্বার অব কমার্সের সাবেক পরিচালক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আওয়ামী লীগ নেতা আলী হোসেন শিশির।
তিনি প্রথমে নৌকার বিপক্ষে গেলেও পরে নিজস্ব ব্যক্তিগত অফিসে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি সকলের উদ্দেশ্যে বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন নৌকার মনোনীত প্রার্থী সে ডামি প্রার্থী রাখতে পারবে কোন দল যদি নির্বাচনে না আসে। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কোন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কথা বলেননি আমি প্রথমে ভুল বুঝেছিলাম পরবর্তীতে আমার ভুলটি বুঝতে পেরেছি তাই নৌকার পক্ষে আছি থাকবো।
নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, 'দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে যেহেতু কামরুজ্জামান ভোট করছে, সেহেতু আমি আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে তার পক্ষে কাজ করাতো দূরের কথা। কোন আওয়ামী লীগ কর্মী স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করা ঠিক হবে না, কোন স্বতন্ত্র প্রার্থী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নয়। নৌকার বাহিরে আওয়ামী লীগের কোন প্রার্থী নাই কোন মানুষ যখন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয় তার কোন দল থাকে না, এ জন্যই সে স্বতন্ত্র প্রার্থী সে কখনো আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে পারে না।
ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মোঃ নজরুল ইসলাম হিরুর জন্য আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মীকে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।