lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
সোমবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২৪
Last Updated 2024-01-15T10:20:00Z
সারাদেশ

হাড় কাঁপানো শীতে কাঁপছে খেজুর রসের জেলা যশোর

Advertisement


জহিরুল ইসলাম যশোর সংবাদদাতা 


হাড়কাঁপানো তীব্র শীতে কাঁপছে যশোরের মানুষ। গত কয়েক দিনের অব্যাহত প্রচণ্ড শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। দিনের বেশির ভাগ সময়ই আকাশ মেঘলা থাকায় সূর্যের দেখা মিলছে না। পাশাপাশি হিমেল হাওয়ার সঙ্গে ঘন কুয়াশাও ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।



সোমবার সকালে যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস। তীব্র শীতে ঠান্ডাজনিত রোগে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে।  যশোরে শৈত্যপ্রবাহের পাশাপাশি হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়ছে। শেষ রাতে ঘন কুয়াশা পড়ছে। বেলা বাড়লে হালকা কুয়াশা দেখা যাচ্ছে। এছাড়াও মেঘের আড়াল থেকে মাঝে মাঝে সূর্য উঁকি দিলেও তাপ ছড়াচ্ছে না। ঠান্ডার দাপটের কাছে যেন নিস্তেজ হয়ে পড়েছে সূর্যটাও। হঠাৎ হাড়কাঁপানো শীতে দুর্ভোগে পড়েছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। বেলা বাড়লেও ঘর থেকে বের হতে বেগ পেতে হচ্ছে তাদের। তীব্র শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে জনজীবন।



খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে অনেক নিম্নবিত্ত মানুষ। দৈনন্দিন কাজে বের হতে পারছেন না অনেকে। শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্ট পাচ্ছে দরিদ্র ছিন্নমূল মানুষ। শীতের তীব্রতায় এ অঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষগুলো কাহিল হয়ে পড়েছে। দিন আনা দিন খাওয়া শ্রমিকের দল যেন থমকে দাঁড়িয়েছে। দিন-রাতের তাপমাত্রা কমছে ক্রমেই। সব মিলিয়ে বাঘ কাঁপানো মাঘের আগমনেরই আভাস দিচ্ছে আবহাওয়া। তীব্র শীতের কারণে কৃষকরা বোরের বীজতলা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। ঠান্ডা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকলে বীজতলা কোল্ড স্ট্রোকে বিনষ্টের দুশ্চিন্তা করছেন তারা। যারা আলু ও সরিষার আবাদ করেছেন তারাও ঠান্ডা ও কুয়াশায় চারা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন। শীতের দাপটে সবচেয়ে কষ্ট পাচ্ছেন শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। জীবিকার তাগিদে হাড়কাঁপানো শীত উপেক্ষা করে তাদের কাজের সন্ধানে ঘরের বাইরে বের হতে হচ্ছে।



কথা হয় ভ্যানচালক রবিউলের সাথে তিনি বলেন, যশোরে খুব ঠান্ডা পড়ছে। দুপুর পর্যন্ত সূর্য দেখা যায়নি। ঠান্ডা বাতাসে রিকশা চালাতে খুব কষ্ট হয়েছে। বাজারে রাস্তায় লোকজন কম, আয় কম হচ্ছে তাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।



পথচারী রেহেনা বেগম বলেন, সকাল থেকেই কুয়াশায় চারপাশ ঢাকা পড়েছে। তারপরও কাজ থেমে নেই। পেটের তাগিদে বাধ্য হয়েই কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে। আর শহরের চাইতে গ্রামে শীত তুলনামূলক অনেক বেশি। গ্রাম এলাকায় হিমেল হাওয়া ও কুয়াশার পরিমাণ বেশি। আর তাপমাত্রা গ্রামে অনেক কম।



ঝিকরগাছার কৃষক আকবার মোড়ল বলেন, তীব্র শীতের মধ্যেও আমাদের কাজের সন্ধানে বাইরে যেতে হচ্ছে। তবে ঠান্ডার কারণে ঠিকমতো কাজ করতে পারছি না। এত শীতে মাঠে থাকতে অনেক কষ্ট হচ্ছে।



শীত মোকাবেলায় আগুন জ্বালিয়ে অনেকে তাপ নেয়ার চেষ্টা করছেন, সব চেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ,  বাধ্য হয়ে তাদের বাহির হতে হচ্ছে জীবন জীবীকার তাগিদে, অনেকের নাই শীত নিবারণের শীতের কাপড়, সমাজের বিত্তবানের যদি এগিয়ে এসে সাহায্যর হাত বাড়িয়ে দেন তাহলে কিছু মানুষ তো উপকৃত হতো



শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির ফলে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপও বৃদ্ধি পাচ্ছে। জ্বর, হাঁচি, কাশিসহ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। অপর দিকে শীতের কারণে সারাদিনই গরম পোশাক পরে মানুষজনকে চলাচল করতে দেখা যায়। সন্ধ্যার পর বন্দর এলাকা অনেকটাই শূন্য হয়ে পড়ছে। শীতকালীন রোগবালাই থেকে রক্ষা পেতে গরম পানি পান করাসহ গরম কাপড় ব্যবহারের জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।



যশোর আড়াইশ শয্যা হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ মাহাবুবুর রহমান বলেন, প্রচণ্ড শীতে শিশুরা ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। রোগীর চাপ থাকলেও হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।