lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারী, ২০২৪
Last Updated 2024-01-11T03:14:48Z
ব্রেকিং নিউজ

ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় ২ প্রসূতির মৃত্যু:মানববন্ধনে হামলা ও মারধরের অভিযোগ

Advertisement


 

স্টাফ রিপোর্টারঃ

পাবনার ঈশ্বরদীতে বেসরকারি আলো জেনারেল হাসপাতালের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসায় ২ প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার প্রতিবাদে স্বজনদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ চলাকালে প্রথমে বাঁধা,হামলা ও পরে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে পাবনা সিভিল সার্জন কার্যালয় হাসপাতালটি সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করেছে। 


১০ জানুয়ারি (বুধবার) ঈশ্বরদী হাসপাতাল রোডে আলো জেনারেল হাসপাতালের সামনে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে।


জানা গেছে, গত ৪ জানুয়ারি ঈশ্বরদী পৌর এলাকার ফজলে রাব্বির গর্ভবর্তী স্ত্রী অন্তরা খাতুনকে আলো জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওইদিনই সন্ধ্যায় হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ডা. মাসুমা আঞ্জুমা ডানা এবং তার স্বামী ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শফিকুল ইসলাম শামীমের তত্ত্বাবধানে সিজার করা হয়। সিজারের পরপরই রোগীর অবস্থা আশঙ্কজনক হলে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তার মৃত্যু হয়। 


এ ছাড়াও গত ৬ জানুয়ারি সাঁড়া ঝাউদিয়া এলাকার আহম্মদ হোসেনের কন্যা প্রসূতি জিমা খাতুন একই হাসপাতালের ওই ডাক্তারদের ভুল চিকিৎসায় মারা যায় বলে অভিযোগ করেন,মৃত প্রসূতির মামা আল আমিন। 


স্বজনদের অভিযোগ, অ্যানেস্থেসিয়া ভালোভাবে না করা এবং ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ বিষয়ে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার না পেলে বুধবার বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন তারা। দুপুর ১২টার দিকে ফজলে রাব্বির নিজ বাড়ির সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে আলো জেনারেল হাসপাতালের সামনে গিয়ে তারা মানববন্ধনের চেষ্টা করেন। এ সময় হাসপাতালের এক কর্মচারীর নেতৃত্বে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের লোকজন তাদের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করে। পরে তারা ঈশ্বরদী থানা ও প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন।


রোগীর স্বামী ফজলে রাব্বী ও শ্বাশুড়ি জান্নাতুল ফেরদৌস রুনু বলেন, সিজারের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের ওষুধ কিনতে বাহিরে যেতে বলেন। আমরা এসে দেখি রোগীকে ইতিমধ্যেই অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়েছে। আমাদের ওষুধ না নিয়ে তাদের ওষুধ দিয়েই রোগীকে অপারেশনের ব্যবস্থা করা হয়। ঠিক মতো অ্যানেস্থেসিয়া না করায় অপারেশনের সময় এবং পরে রোগী বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এসময় তারাহুড়ো করে অপারেশন চালায়। রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে তাকে অন্যত্র নেয়ার কথা বলে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়। আমরা রাজশাহীতে নেওয়ার পথেই রোগী মারা যায়। আমরা এর সঠিক বিচার চাই। যাতে আর কেউ এভাবে মৃত্যুবরণ না করেন।


এ বিষয়ে অভিযুক্ত ডা. মাসুমা আঞ্জুমা ডানা এবং ডা. শফিকুল ইসলাম শামীমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের পাওয়া যায়নি। এমন কি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও ডা. শফিকুল ইসলাম শামীমকে পাওয়া যায়নি। তবে হাসপাতালের সার্বিক দায়িত্ব থাকার পরিচয় দিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আব্দুল্লাহ আল মামুন নামে এক কর্মচারী। তিনি বলেন, তাদের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তারা ধান্দা করার জন্য ও হাসপাতালের সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য এসব অভিযোগ ও মানববন্ধন করছে। তাদের মানববন্ধনে কোনো হামলা বা ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেনি।


ঈশ্বরদী থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি। রাতে অভিযোগকারীদের আসার কথা আছে। মামলা করলে তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


এ ঘটনায় হাসপাতালটি সাময়িক বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাবনার সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল্লাহ দেওয়ান। তিনি বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত হাসপাতালটি সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করতে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আসমা খান বলেন, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের লিখিত আদেশে অভিযুক্ত আলো জেনারেল হাসপাতাল সাময়িক বন্ধ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে তদন্ত হবে বলে তিনি জানান।