Advertisement
মোঃ মজিবর রহমান শেখ:
ঠাকুরগাঁওয়ে ১,২,৩, আসন শেষ মুহূর্তের নির্বাচনের মাঠ তুঙ্গে। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আর মাত্র ১ দিন বাঁকি। তাই ঠাকুরগাঁও সদর, বালিয়াডাঙ্গী, হরিপুর ও পীরগঞ্জ, রাণীশংকৈল উপজেলা নিয়ে গঠিত ৩টি আসনে সংসদ সদস্য (এমপি) পদ প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় মাঠ বেশ তুঙ্গে উঠেছে। প্রার্থীদের মাইকিং এবং পোস্টারে এখন এলাকার রাস্তা ঘাটে বিরাজ করছে সাজ সাজ রব। আর এতে জনমনে সৃষ্টি হয়েছে নির্বাচনী আমেজ। শেষ মুহূর্তে এলাকায় এলাকায় জনসভা, পথসভা, উঠান বৈঠক, সভা সেমিনার সহ বিভিন্ন গণসংযোগ ও প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ৩টি আসনের ১৪ প্রার্থী। এদের মধ্যে ঠাকুরগাঁও-১ আসনে ৫ জন, ঠাকুরগাঁও-২ আসনে ৫ জন ও ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে ৪ জন। মোট ১৪ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে জেলায় বিভিন্ন দলীয় পদে ১০ জন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদিকে, সাধারণ ভোটারদের মধ্যে অনেকে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আবারও শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চান, অনেকে আবার ভোটার সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন করার তাগিদ জানান।
মাঠ থেকে গরু বাড়িতে আনার সময় কথা হয় গৃহবধূ বেগম নামে এক নারী ভোটারের সঙ্গে। তিনি সাংবাদিকদের কে বলেন, যদি সুষ্ঠু ও ভোট কেন্দ্রের পরিস্থিতি ভালো থাকে তাহলে ভোট দিতে যাব। আর যদি কোনো সমস্যা দেখা দেয় তাহলে কেন্দ্রে যাওয়া সম্ভব হবে না। আমরা একটি সুষ্ঠু ও অবাধ এবং শৃঙ্খল পরিস্থিতিতে নির্বাচন চাই। তাই প্রশাসনের কাছে এটিই আমাদের চাওয়া আমরা যাতে ভোট দিতে পারি।
বৃদ্ধ হোসেন বলেন, যদি বিএনপি জামায়াত নির্বাচন করতো তাহলে কোনো সংঘাতের সম্ভবনা থাকতো। যেখানে তারা অংশগ্রহণ করেনি সেখানে কোনো আশঙ্কা নেই। তাই ভোট দিতে যাব। জানতে চাইলে আলী নামে যুবক এক মিস্ত্রী বলেন, আমাদের ঠাকুরগাঁওয়ে নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বেশ ভালোই চলছে। ভোট কেন্দ্রে যাওয়া নিয়ে আমাদের মাঝে কোনো ভয়ভীতি নেই। রনজিত নামে এক ইটভাটা শ্রমিক বলেন, যদি কেন্দ্রের পরিস্থিতি ভালো থাকে তাহলে আমরা সবাই ভোট দিতে যাব। তবে আশা করি এবার সুষ্ঠু ভাবেই নির্বাচন হবে। সোমবারু সিংহ নামে এক মাটি কাটা শ্রমিক বলেন, এবার নির্বাচন নিয়ে কোন শঙ্কা নাই। যেভাবে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চলছে ও পরিস্থিতি যেমন আছে, এমন থাকলে আমাদের এইদিকে সমস্যার কোনো আশঙ্কা নেই। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই যে, আমরা যেন সবাই হেসে খেলে ভোট দিতে পারি। আর বর্তমান সরকার দেশের অনেক উন্নয়ন করেছে তাই আবার যেন এই সরকার ক্ষমতায় আসতে পারে এটাই আমাদের কামনা। আহমেদ নামে এক কৃষক বলেন, বিএনপি যদি নির্বাচনে আসতো তাহলে নির্বাচন আরও প্রতিযোগিতামূলক হতো। তাদের তো এখন মাথা বলতে কেউ নেই, তাই তারা হয়তো পিছিয়ে আছে।
ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, অন্যান্য দিকে কথা বলা যাচ্ছে না তবে আশা করি, আমাদের ঠাকুরগাঁওয়ে এবার নির্বাচন ভালো ও সুষ্ঠু হবে। তবে বিএনপি কি কারণে নির্বাচনে আসলো না তা জানা নেই।
এলাকায় এলাকায় মানুষের মাঝে একটি নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে। আশা করি, মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে যাবে।
বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার বিষয়ে তার মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে না এসে বিরাট ভুল করেছে। তারা গণতান্ত্রিকের দিকে না থেকে অগণতান্ত্রিকের দিকে চলে গেল ও জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ল। তারা খুব লস করল। তারা যদি অংশগ্রহণ করতো তাহলে আরও ভালো একটি নির্বাচন হতো। তারপরেও ২৯টি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। এতে আশা করি যথেষ্ঠ ভালো অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে। জনগণের জন্য একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন করতে সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে সাংবাদিকদেরকে জানান, ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, ঠাকুরগাঁও জেলায় সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণের জন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বেশ উন্নত করা হয়েছে। নির্বাচনে কোনো নাশকতা ঘটতে দেওয়া যাবে না। যে কোনো ধরনের নাশকতা মোকাবিলার জন্য প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। উল্লেখ্য, আগামী ৭ জানুয়ারি সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ঠাকুরগাঁও জেলার ৫৪টি ইউনিয়ন ও ৩টি পৌরসভা মিলে মোট ৪১৭টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হবে। ৩টি আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৪২ হাজার ৯২৩। এর মধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ৫ লাখ ৭৯ হাজার ৬৩৮ ও মহিলা ভোটার ৫ লাখ ৬৩ হাজার ২৮১ ।