Advertisement
দোয়ারাবাজার(সুনামগঞ্জ):
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় নির্বাচনী সহিংসতার জের ধরে মো: আফিক আলী নামের এক যুবকে পিঠিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (১৭জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টায় দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের মহব্বতপুর বাজারের আনোয়ার আলীর চায়ের দোকানের সামনে ঘটনাটি ঘটে।
এঘটনায় ৬জনের নাম উল্লেখ করে দোয়ারাবাজার থানা একটি অভিযোগ করা হয়েছে।অভিযুক্তরা হলেন,উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের কাউয়াঘর গ্রামের মৃত রিয়াজ উদ্দিন'র পুত্র কামরুল ইসলাম (৩০),মৃত আদমান আলী'র পুত্র আ: রজাক, টিলাগাও গ্রামের মো: আলতাব হোসেনের পুত্র রবিউল ইসলাম, মহব্বতপুর গ্রামের মৃত রফিক মিয়ার পুত্র গোলাম মিয়া (৩০), টিলাগাঁও গ্রামের মৃত আবু তালুকদারের পুত্র নুরুল ইসলাম (২৮),সুজন মিয়া (২৬)।
অভিযোগকারী আফিক আলী জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এ আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম আহমদ চৌধুরী (ঈগল প্রতীক) সমর্থক ছিলাম। নির্বাচনের ৪/৫ দিন পূর্বে নির্বাচনী বিষয় নিয়ে মুহিবুর রহমান মানিক (নৌকা প্রতীক) সমর্থক রবিউল ইসলাম এর সাথে আমার কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তর্কবিতর্ক হয়।
গত ১৫ জানুয়ারি সোমবার দুপুর ১২টায় আমি মহব্বতপুর বাজারে আনোয়ার আলীর চায়ের দোকানে বসে থাকা অবস্থায় কামরুল ইসলাম এর সাথে আমার কথা কাটাকাটি ও তর্ক বিতর্ক হয়। তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে কামরুল ইসলাম এর পক্ষ নিয়ে আঃ রজাক আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথারী কিল, ঘুষি ও লাথি মারে। আমি প্রতিবাদ করলে তাদের সাথে থাকা আরও কয়েকজন আমাকে মারধর করে। আমি ভয়ে চিৎকার করলে বাজারে থাকা মানুষজন আমাকে রক্ষা করেন। এই ঘটনায় উপস্থিত লোকদের সামনে আমাকে শাসিয়ে বলে যে, এ বিষয়ে কাহারো নিকট বিচারপ্রার্থী হইলে অথবা কোন মামলা মোকাদ্দমা দায়ের করিলে আমাকে সুযোগমত পাইলে মারপিট করিয়া হাত পা ভেঙ্গে দিবে। পরে উপস্থিত মানুষদের সহায়তায় আমি চিকিৎসার জন্য দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার আমার জখমের চিকিৎসা প্রদান করেন। চিকিৎসা শেষে আমি কামরুল ইসলাম, আঃ রজাক ও রবিউল ইসলাম গনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে দোয়ারাবাজার থানায় একখানা অভিযোগ দায়ের করি। এরই ধারাবাহিকতায় ১৭ জানুয়ারি বুধবার দোয়ারাবাজার থানা পুলিশ এস আই এনামুল হক মিঠু আমাদের এলাকায় আসিয়া অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করেন। কামরুল ইসলাম, আঃ রজাক ও রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে আমি বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করায় সকল অভিযুক্তরা আমার উপর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। ১৭ জানয়ারি বুধবার রাত সাড়ে ৮টার সময় আমি এবং আমার সঙ্গে থাকা আরও দুইজন মোটরসাইকেল যোগে দোয়ারাবাজার হইতে নিজ বাড়ীতে যাওয়ার পথে মহব্বতপুর বাজারস্থ আনোয়ার আলীর চায়ের দোকানের সামনে রাস্তায় পৌছামাত্র সকল অভিযুক্তরা পরিকল্পিতভাবে লোহার রড ও লাঠি নিয়ে আমাদের পথ আটকে মারার জন্য ঘেরাউ করে। কামরুল ইসলাম তার সাথে থাকা সঙ্গীদের হুকুম দিয়া বলে শালার বেটাদেরকে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করার সাধ মিটাইয়া দে। এই হুকুম দিয়া কামরুল আমার একজনের শার্টের কলারে ধরিয়া এলোপাথারী কিল, ঘুষি মারিয়া জখম করে।গোলাপ মিয়া তাহার হাতে থাকা লোহার রড দিয়া আমাকে প্রানে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথা লক্ষ্য করিয়া বারি মারিলে আমি প্রান রক্ষার জন্য উক্ত বারিটি আমার ডান হাত দিয়া ফিরাইলে বারিটি আমার ডান হাতের কজির উপরে পড়িয়া হাড়ভাঙ্গা জখম করে। সুজন মিয়া আমার বাম হাতের কনুইয়ের নিচে স্বজুরে বারি মারিয়া নীলা ফুলা জখম করে। অন্যান্য বিবাদীগন আমাকে জোরপূর্বক ধরিয়া আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথারী কিল, ঘুষি ও লাথি মারিয়া জখম করে। ৫নং বিবাদী নুরুল ইসলাম ১নং সাক্ষী এনামুল কবির মুন্নার ব্যবহৃত (POCO X3 pro মোবাইল ফোন যাহার--IMEI 1: 861411052391007, IMEI 2: 861411052391015 মূল্য ৩০,০০০/-(ত্রিশ হাজার) টাকা কৌশলে নিয়ে যায়। রবিউল আমার ১নং সাক্ষী এনামুল কবির মুন্নার ব্যবহৃত মানিব্যাগ যাহার মধ্যে রক্ষিত ১৩,৭০০/-(তেরো হাজার সাতশত) টাকা নিয়ে যায়। বিবাদীগন এই ঘটনা করিয়া শাঁসাইয়া বলে যে, আমি যদি বিবাদীগনের বিরুদ্ধে আমার দায়েরকৃত অভিযোগ তুলিয়া না নেই আমাকেসহ সঙ্গীকে মারপিট করিয়া প্রানে হত্যা করে আমাদের লাশ গুম করিয়া ফেলিবে। পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহায়তায় আমি চিকিৎসার জন্য দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার আমার জখমের চিকিৎসা প্রদান করেন।
দোয়ারাবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বদরুল হাসান অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।