lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
মঙ্গলবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
Last Updated 2024-02-27T11:16:34Z
ব্রেকিং নিউজ

বসতভিটা ও আবাদী জমি থেকে উচ্ছেদ পাঁয়তারা বন্ধের দাবিতে রংপুরে বিক্ষোভ সমাবেশ

Advertisement


 


রবীন্দ্রনাথ সরকার, রংপুর জেলা প্রতিনিধিঃ

রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘণ্টা ও মর্ণেয়ায় বসুন্ধরা গ্রুপ কর্তৃক স্থানীয় অধিবাসীদের বসতভিটা ও আবাদী জমি থেকে উচ্ছেদের অপতৎপরতা বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের গতকাল ২৭ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার বেলা ১২ টায় রংপুর নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী । নগরীর প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইউপি সদস্য তাজউদ্দিন। 

সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন রংপুর মহানগর নাগরিক কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক মোজাহার আলী, অধ্যাপক আব্দুস সোবহান, কৃষক সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক সাবেক ছাত্রনেতা এডভোকেট পলাশ কান্তি নাগ, রাজনীতিবিদ গৌতম রায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা নীরেন্দ্রনাথ রায়,শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের সদস্য সচিব সুভাষ চন্দ্র বর্মন, নিপীড়ন বিরোধী নারীমঞ্চের আহবায়ক নন্দিনী দাস, সদস্য সচিব সানজিদা আক্তার প্রমুখ। 

সমাবেশে বক্তৃতা করেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী আসাদুল হক,রাজু আহমেদ, আরমান ইসলাম, ওমর ফারুক, আনিছুর রহমান প্রমুখ। 

বক্তারা বলেন,  রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘণ্টা ও মর্ণেয়া ইউপির তিস্তা নদী বেষ্টিত এলাকার অনেক জমি অব্যাহত নদী ভাঙ্গনের ফলে ১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। এই সম্পত্তিতে বংশ পরম্পরায় অত্র এলাকার মানুষ  চাষাবাদ করে আসছে। পূর্ব পুরুষের নিকট থেকে ওয়ারিশ সুত্রে প্রাপ্ত জমিতে ধান, আলু, মিষ্টি কুমড়া, চিনা বাদাম, পিঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি ফসল উৎপাদন করে জীবিকা নির্বাহ করে। নদী ভাঙ্গনসহ প্রাকৃতিক নানা প্রতিকূলতাকে মোকাবিলা করে অভাব-অনটনের মধ্য দিয়েই তাদের  জীবন অতিবাহিত হয়। সম্প্রতি “বসুন্ধরা অয়েল এন্ড গ্যাস কোম্পানী লিমিটেড” এর নামে বসুন্ধরা গ্রুপ  ছালাপাক ও আলাল মৌজার ১ নং খাস খতিয়ানভূক্ত কৃষি জমি বেআইনীভাবে জোরপূর্বক দখলের পাঁয়তারা করছে। পাশাপাশি দলিল অথবা রেকর্ডীয় মালিকগণের বসতভিটা ও আবাদী জমি নামমাত্র মূল্যে গরীব-অসহায় মানুষদের বিক্রয়ে বাধ্য করছে। ইতিমধ্যে বসুন্ধরা গ্রুপ গজঘণ্টা ইউনিয়নের ছালাপাক ও আলাল মৌজায় “বসুন্ধরা অয়েল এন্ড গ্যাস কোম্পানী” স্থাপনের জন্য ৯৮৬ এবং ৯১৫ একর খাস জমি প্রতীকি মূল্যে বন্দোবস্তের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছেন। সেই সাথে বসুন্ধরা গ্রুপের দাবি অনুযায়ী তিস্তা নদীর তীরবর্তী তাদের ক্রয়কৃত ১৪০০ একর ভুমি উন্নয়নে বালু ভরাটের আবেদন করেছেন। এই ১৪০০ একর জমি ক্রয়ের দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। পানির দরে বসুন্ধরা গ্রুপ তিস্তা চরাঞ্চলের জমি ক্রয় করছে। স্থানীয় দালাল ও প্রভাবশালীদের সহায়তায় ২ কেজি খাসির মাংসের মূল্যে অর্থাৎ ১৮০০/২০০০ টাকায় ১ শতক জমি ক্রয় করছে।

যার ফলে এলাকার মানুষ  আতংকিত ও উদ্বিগ্ন। কথিত শিল্পায়নের নামে তা সুস্পষ্টভাবে কৃষি জমি ধ্বংসের নামান্তর। কৃষকের শ্রমে-ঘামে দেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে। কৃষকের জীবনে প্রতি মুহূর্তে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা থাকলেও তারা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে দিন রাত পরিশ্রম করে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা এক ইঞ্চি কৃষি জমিও বিনষ্ট করা যাবে না। বসুন্ধরা গ্রুপের এই তৎপরতা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার সাথে সাংঘর্ষিক। একটি প্রতিষ্ঠান কিংবা গোষ্ঠীর মুনাফার শিকার হয়ে হাজার হাজার মানুষ বাপ-দাদার ভিটেমাটি ছাড়া হতে পারে না। কৃষি জমি বিধ্বংসী মুনাফা লোভীদের প্রকল্প কোন ক্রমেই কাম্য নয়।  অত্র ইউনিয়নের মানুষ স্থানীয় প্রশাসনের নিকট বসুন্ধরা গ্রুপের অপতৎপরতা বন্ধে দাবি জানালেও তারা তা কর্ণপাত না করে দ্রুততার সাথে কার্যক্রম পরিচালনা করে চলেছে।

 

এমতাবস্থায় এলাকাবাসী  ভিটে-মাটি ও আবাদী জমি রক্ষায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট  কার্যকর পদক্ষেপ কামনা করে।পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়।

স্মারকলিপিতে কৃষি জমি ধ্বংসকারী “বসুন্ধরা অয়েল এন্ড গ্যাস কোম্পানী লিমিটেড” নামক প্রকল্প বাতিল,বসুন্ধরা গ্রুপকে অত্র এলাকার কোন খাসজমি দীর্ঘমেয়াদী কিংবা স্বল্পমেয়াদী বন্দোবস্ত না দেওয়া, স্থানীয় অধিবাসীদের নিকট থেকে বসুন্ধরা গ্রুপ কর্তৃক নামমাত্র মূল্যে ক্রয়কৃত জমি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিসহ ৫ দফা দাবিতে স্মারকলিপি পেশ করা হয়।