Advertisement
এইচ এম রাসেল, বরগুনা প্রতিনিধি:
ডাক্তার হতে চাওয়া অদম্য মেধাবী আমেনা আক্তারের অর্থই এখন বাঁধা। স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া করে একজন ডাক্তার হবে। গরীব রোগীদের বিনামূল্য চিকিৎসা দেবে। অর্থাভাবে তার সেই স্বপ্ন ধুসর হতে চলছে।
আমতলী উপজেলার উত্তর খেকুয়ানী গ্রামের আব্বাস খলিফার কন্যা আমেনা আক্তার। ছোট্ট বেলা থেকেই আমেনা বেশ মেধাবী। ২০১৮ সালে সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পান আমেনা। কিন্তু প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারনে অষ্টম শ্রেনীতে পরীক্ষা হয়নি। এ বছর চুনাখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে। অদম্য আমেনা আক্তারের এমন ফলাফলে গর্বিত পরিবার ও এলাকাবাসী। কিন্তু মেয়ের এমন ফলাফলে বিপাকে পরেছেন বাবা আব্বাস খলিফা।
দরিদ্র কৃষক অব্বাস খলিফার নিজের বলতে তেমন জমি-জমা নেই। কামলা খেটে ও অন্যের জমি বর্গা চাষ করে মেয়ের লেখাপড়া ও পরিবারের ভরণ পোষণ করেন। স্বল্প আয়ের সংসারে সন্তানকে উচ্চশিক্ষিত করে গড়ে তোলার স্বপ্ন বুনছিলেন তিনি; কিন্তু দারিদ্র্য সেই স্বপ্নপূরণে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। দারিদ্রতার কারণে মেয়ে আমেনা আক্তারের ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন এখন অন্ধকারের দিকে। আমেনা আক্তারের স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া করে একজন ডাক্তার হবে। গরীব রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেবে। ডাক্তার হতে চাওয়া মেধাবী আমেনা আক্তারের অর্থই এখন বাঁধা।
মেধাবী আমেনা আক্তার বলেন, আমি লেখাপড়া করে ডাক্তার হয়ে গবীর মানুষের সেবা করতে চাই। কিন্তু অর্থই আমার এখন বড় বাঁধা। অনেক কষ্ট করে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি। বাবারতো টাকা নেই সামনে কি হয় জানিনা?
বাবা আব্বাস খলিফা বলেন, মেয়ের ফলাফলে সবাই বেশ খুশি। কিন্তু সামনে কিভাবে আমার মেয়েকে লেখাপড়া করাবো তা নিয়ে বেশ চিন্তায় আছি। আমি দিনমজুরের কাজ করি। আমার আয় দিয়ে, আমার পুরো সংসার চলে। গ্রামের বাড়ি প্রতিদিন কাজ থাকে না। আমার মেয়ে এসএসসিতে ভালো ফলাফল করার পরেও আমি অর্থের অভাবে হয়তো তাকে ভালো কলেজে ভর্তি করতে পারবো না। আমার মেয়ের স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হবে কিন্তু আমি তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবো না। এটা আমার জন্য দুঃখজনক। এই মুহুর্তে কেউ পাশে দাড়ালে ভালোভাবে মেয়েকে লেখাপড়া করানো সম্ভব হতো।
আমতলী চুনাখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুব-উল আলম বলেন, অসচ্ছল পরিবারের মেয়ে আমেনা অনেক বেধাবী। অনেক কষ্টে লেখাপড়া করে জিপিএ-৫ পেয়েছে। আমেনা সহযোগীতা পেলে অনেক ভালো কিছু করতে পারবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, খোঁজ খবর নিয়ে আমেনার পরিবারকে আর্থিকভাবে সহায়তা করা হবে।