Advertisement
আব্দুল জব্বার:
সারাদেশে তীব্র দাবদাহে ভরা মৌসুমেও আকাশচুম্বী মরিচের দাম।দেশজুড়ে তীব্র দাবদাহে যখন জনজীবন অতিষ্ঠ তখন প্রভাব পড়েছে কৃষি কাজেও। ফলে বেড়া-সাঁথিয়া কয়েক হাজার মরিচ চাষিরা পড়েছে বিপাকে। শুধু মরিচ নয় তীব্র দাবদাহে সকল কৃষি ফসলের উপর প্রভাব পড়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বরাট, শহীদনগর, মানপুর, করিয়াল, রামভাদ্রবাটি, আহাম্মাদপুরে মরিচের ক্ষেতে মরিচের গাছ দাবদাহে মরে যাচ্ছে। কোন কোন গাছে ফুল দেখা গেলেও মরিচ নেই।
মাঠ জুড়ে দেখা যায় তীব্র খড়া রোদে মরিচ গাছ চুপসে গেছে। পানির লেয়ার নিচে নেমে যাওয়ায় বোর ধানের সেচ দিতে না পারায় ক্ষতির সম্মুখীন কৃষক। বেগুন পাট খড়ায় পানি না পেয়ে মরে যাচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেতে সেচ দিয়েও আসছেনা মরিচ।মরিচের ফুল আসলেও খরার কারনে ফুল ঝড়ে যাচ্ছে। মরিচের গাছ লালচে হয়ে যাচ্ছে।
যেখানে অন্য অন্য বছর এ মৌসুমে মরিচের দাম ১৫ থেকে ২০ টাকা হয় সেখানে মরিচের দাম ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। কাশিনাথপুর হাটের আড়ৎদার মনিরুল জানান এ সময়ে প্রত্যেক বছর কমপক্ষে ১ হাজার মন কাচা মরিচের আমদানি হতো।সেখানে এখন সর্বোচ্চ ৬০থেকে ৭০ মন আমদানি হচ্ছে। কৃষকের ক্ষেত্রে মরিচ না থাকায় এত দাম।
কাশিনাথপুর বাজারের এক পাইকার জানান আমরা এ সময়ে ঢাকাতে মরিচ কিনে পাঠাই কিন্তু এ বছরে মরিচ নাই। অন্য বছরে আমি নিজেই কমপক্ষে প্রতিদিন ৫০-৬০ মন মরিচ কিনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়েছি। কিন্তু এখন হাটে সবমিলে ১০ মন মরিচও ওঠেনা।
কাশিনাথপুর বাজারের খুচরা বিক্রেতার সাথে কথা হয়। তিনি বলেন বর্তমান ভরা মৌসুমেও মরিচ নাই। আমরা ১৫০ টাকা করে পাইকারি কিনে , ১৭০ টাকায় বিক্রি করছি।
কথা হয় এক ভোক্তার সাথে তিনি জানান পাবনায় এ সময় মরিচের ভরা মৌসুম তারপরও মরিচ ১৮০ টাকা কেজি। শুধু মরিচ না প্রতিটি সবজির দাম। এভাবে চলতে থাকলে আমরা মধ্যেবিত্ত কিভাবে বাঁচবো।
বরাট গ্রামের মরিচ চাষি মুক্তার বলেন - অন্য বছরে এ সময় বিঘা প্রতি টানে কমপক্ষে ১০থেকে ১২ মন মরিচ হতো সেখানে এখন আধামন মরিচও হচ্ছে না। তীব্র রোদ ও দাবদাহে মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। সেচ দিয়েও কাজ হচ্ছে না, সেচ দেওয়ার পরেও ফুল পড়ে যাচ্ছে।
রামভাদ্রবাটির কৃষক আব্দুল আওয়াল বলেন আমি ৬ বিঘা জমিতে মরিচ লাগিয়েছি। এ পযন্ত ৫ মন মরিচ বিক্রি করেছি। যেখানে প্রতি বিঘা থেকে ১৫ মন মরিচ হওয়ার কথা সেখানে খরার কারনে এ অবস্থা। এতে করে লোকসানের সম্মুখীন আমরাএভাবে চলতে থাকলে আমাদের জমির রাখার দাম উঠবেনা।
বরাট গ্রামের আরেক মরিচ চাষি আবু সাইদ জানান - খরার কারনে মরিচের জমিতে একাধিক বার সেচ দিয়েও মরিচ আসেনি। মরিচের ফুল আসলেও তা মরিচ হয়না সব ফুল পড়ে যায়। তীব্র দাবদাহে মরিচের গাছ ফুলে গেছে ও লালচে হয়ে গেছে। এতে ক্ষতির সম্মুখীন আমরা।
সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে যানা যায়, এ বছর এ উপজেলায় ৮ হাজার ১০৫ হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে ৬ হাজার ৩২৫ টন শুকনা মরিচ ও ২৫ হাজার ২৬০ টন কাঁচা মরিচের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়। কিন্তু তীব্র খরায় এ লক্ষ্য মাত্রা পূরণে রয়েছে শঙ্কা। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে যানা যায় বেড়া সাঁথিয়া এলাকা মরিচের আবাদ শুরু হয় মার্চের প্রথমে। মে আগষ্টে এ এলাকায় প্রতিটি ক্ষেত্রে মরিচ আসে। সে হিসেবে এখন মরিচ উৎপাদনের ভরা মৌসুম।