Advertisement
মাধবদীতে প্রতারণা করে অসুস্থ্য পিতার সম্পত্তি লিখে নেওয়ার অভিযোগ সৎ ভাই-বোনদের মানছেনা স্থানীয় গ্রাম আদালতের ফয়সালাও
মুহাম্মদ মুছা মিয়া:
নরসিংদীর মাধবদী বালুসাইর গ্রামে প্রতারণা করে অসুস্থ্য পিতার নিকট থেকে সম্পত্তি লিখে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন সৎ ভাই ও বোনেরা। প্রতারণা করে পিতার সম্পত্তি লিখে নেওয়ার পর সৎ ভাই, বোন ও চাচা মহিষাশুরা ইউনিয়ন পরিষদে শালিস ডাকলে সেই গ্রাম আদালতের রায় অমান্য করে উল্টো চেয়ারম্যান ও পরিষদের সদস্যসহ সৎ ভাইদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ করেছে সৎ ভাই মোঃ মানসুর। এখন পিতার জমিতে ভিটে-মাটি ছাড়ার অবস্থা হয়েছে ভোক্তভোগীদের।
বালুসাইর গ্রামের অসুস্থ্য মোঃ মজিবুরের প্রথম সংসারের পুত্র হাফেজ মহিউদ্দিন ও মইনুদ্দিন অভিযোগ করে বলেন- আমার বাবা মোঃ মজিবুর রহমান প্রথমে আমার মাকে বিয়ে করেন। আমাদের মায়ের ঘরে আমরা দুই ভাই ও দুই বোন। আমার মা মৃত্যুবরণ করলে বাবা আবার দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই আমার সৎ মা আমাদেরকে বাবার সাথে মিশতে দেয়না। যতই দিন যাচ্ছে আমার সৎ মা ও সৎ ভাইয়েরা আমাদের বাবার সাথে কথা বলতে, খাওয়া দাওয়া করাতে কোন রকম সহযোগীতা করছে না। বর্তমানে আমাদের বাবা ৬৭ বছর বয়সে বয়স্ক জনিত রোগসহ স্ট্রোকের রোগী। ডান পা ও ডান হাত অচলবস্থায় শয্যায় শায়িত। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের সৎ ভাই মানসুর, মহিবুল্লাহ, অহিদুল্লাহ ও আমাদের সৎ মাতা শরিনা বেগম আমাদের পিতার নিকট থেকে আমাদের না জানিয়ে সম্পূর্ণ বঞ্চিত করে বসত বাড়ি ও কৃষি জমি থেকে তাদের নামে রেজিস্ট্রি করে ৪৯.৫ শতাংশ সম্পত্তি লিখে নেয়। ২০/২৫ বছর যাবত ঘর করে বসবাস করার জমিটুকোও লিখে নেয় তারা। ঘটনার পর বিষয়টি আমরা জানতে পেরে মানসুরকে ভাই বোনদের হিস্যা অনুযায়ী বাবার সম্পত্তি ফেরত দিতে বললে ফেরত দিবেনা বলে জানিয়ে দেয়। সৎ ভাই মানসুরের সাথে বিভিন্ন শালিস করেও কোন ফয়সালা না হওয়ায় নরসিংদী সদর উপজেলার মহিষাশুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেবের নিকট বিচার দায়ের করি। গত ২৬ মে ২০২৪ইং মহিষাশুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুফতি কাউছার হোসেন ও স্থানীয় মেম্বার মোঃ সমির হাসানসহ আরো গন্যমান্য ব্যক্তবর্গ উপস্থিত থেকে আমার সৎ ভাইদের নিয়ে একটি দরবার করেন। দরবারে বিচারকগণ দুই পক্ষের কথা শুনে প্রতারণা করে বাবার জমি লিখে নেওয়ার প্রমাণ পায়। প্রতারণার বিষয়টি প্রমাণিত হলে উপস্থিত সকলের সাথে পরামর্শ করে আগামী ১৫ জুলাই ২০২৪ইং তারিখের মধ্যে আমাদের জমি ফেরত দেওয়াসহ আরো কিছু নির্দেশ দেয় বিচারকগণ। উভয় পক্ষ শালিস দরবারের সিদ্ধান্ত মানিয়া লিখিত সিদ্ধান্তে স্বাক্ষর করে। কিন্তু শালিস থেকে ফিরে এসে আমাদের না জানিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন অফিসে চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করে হয়রানি করছে। এখন আমাদের দাবি আমাদের বাবা ও বাবার সম্পত্তির নায্য হিস্যা ফেরত চাই।
ঘটনাটি জানতে মহিষাশুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুফতি কাউছার হোসেনকে মুঠোফোনে কল দিলে তিনি জানান হাফেজ মহিউদ্দিন ও তার চাচা লোকমান হোসেন ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করার পর উভয় পক্ষকে ডেকে গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে দরবার করা হয়। দরবারে মোঃ মানসুর তার পিতার নিকট থেকে প্রতারণা করে সৎ ভাই বোনদের বঞ্চিত করে সম্পত্তি লিখে নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়। শালিসে সকলের পরামর্শে মোঃ মাসসুরকে তার সৎ ভাইদের সম্পত্তি ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। যাহা উভয় পক্ষ মেনে নিয়েছিল। কিন্তু পরে শুনলাম তারা দরবারের ফয়সালা না মেনে উল্টো বিচারকদের নামে বিভিন্ন স্থানে মিথ্যা অভিযোগ করছে।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে মোঃ মানসুরের মুঠো ফোনে কয়েকবার কল দিলেও ফোন রিসিভ হয়।