lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
বুধবার, ৫ জুন, ২০২৪
Last Updated 2024-06-05T15:09:21Z
স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা

যশোরে রোগীর রক্তের গ্রুপ এ পজিটিভ, হাসপাতালে দেওয়া হলো বি পজিটিভ - BD Prokash

Advertisement

 

জহিরুল ইসলাম,যশোর প্রতিনিধি


যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভুল গ্রুপের রক্ত দেওয়ায় মৃত্যুর প্রহর গুনছেন সালেহা বেগম (৪৫) নামে এক নারী। গতকাল রোগীর স্বজনরা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুণ-অর রশিদের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছেন। সালেহা বেগম যশোরের মণিরামপুর উপজেলার খেদাপাড়া ইউনিয়নের কৃষ্ণবাটি গ্রামের মৃত শামছুর রহমান গাজীর স্ত্রী।



সালেহা বেগমের মেয়ে শিরিনা আক্তারের অভিযোগ, গত ২০ মে তার মা সালেহা বেগমকে অসুস্থ অবস্থায় যশোর জেনারেল হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলেন রোগীর রক্ত  লাগবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওয়ার্ডের সেবিকারা গ্রুপিং ও ক্রসম্যাচিংয়ের জন্য রোগীর শরীর থেকে রক্ত সংগ্রহ করে স্বজনদের হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে পাঠান। স্বজনরা ব্লাড ব্যাংকে নমুনা দিলে সেখান থেকে জানানো হয় রক্তের গ্রুপ ‘বি’ পজিটিভ। সে মোতাবেক রোগীকে   ‘বি’ পজিটিভ রক্ত দেওয়া হয়। এ সময় রোগীর শরীরের জালা-যন্ত্রণা শুরু হলে ওয়ার্ডে চিকিৎসকরা কৌশলে রোগীকে ঢাকায় রেফার করেন। কিন্তু রোগীর স্বজনরা সালেহা বেগমকে বাড়িতে নিয়ে যান। বাড়িতে যাওয়ার পরে রোগীর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। তখন স্বজনরা রোগীকে আবারও হাসপাতালে ভর্তি করেন।



ভুক্তভোগীর মেয়ে আরও বলেন, হাসপাতালে ভর্তি করার পরে আবারও চিকিৎসকরা আমার মায়ের শরীরে রক্ত প্রদানের জন্য বলেন। তখন আবার পরীক্ষা করে জানানো হয় রক্তের গ্রুপ ‘এ’ পজিটিভ।



তখন বিষয়টি নিয়ে রোগীর স্বজনদের সন্দেহ হলে ডাক্তার গৌতম কুমারকে দেখান। তখন তিনি বেসরকারি ক্লিনিক থেকে রক্তের গ্রুপিং করতে বলেন। শিরিনা আক্তার বলেন, তখন আমরা শহরের সারনরাইজ ক্লিনিক থেকে পরীক্ষা করলে রক্তের গ্রুপ ‘এ’ পজেটিভ আসে। 



তখন চিকিৎসক সালেহা বেগমের মেয়েকে বলেন রোগীর শরীরের ভুল গ্রুপের রক্ত দেওয়ার কারণে তার অবস্থা আশংকাজনক। তবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। রোগীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হতে পারে, নাও পারে।



রোগীর স্বজনদের দাবি, ব্লাড ব্যাংকের সংশ্লিষ্টদের কর্তব্যে অবহেলার কারণে তাদের রোগী বর্তমানে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। 



ওয়ার্ডে কর্তব্যরত নার্স নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ব্লাড ব্যাংক থেকে পাওয়া প্রতিবেদন ও রক্তের ব্যাগের গায়ে লেখা প্রতিবেদন দেখে রোগীর শরীরে রক্ত দেওয়া হয়। এখানে তাদের কোনো ভুল নেই।বর্তমানে সালেহা বেগম মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।



ওয়ার্ডে দায়িত্বরত ইন্টার্ন চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ভুল রক্ত দেওয়ার কারণে রোগীর কিডনি, মাথার বাম সাইডে রক্তক্ষরণসহ শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ ধরনের রোগীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুব কম। 



এ ব্যাপারে হাসপাতালের ব্লাড ট্রান্সফিউশন মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার সেলিম রেজা জানান, ব্লাড ব্যাংকে এ ধরনের ভুল মেনে নেওয়া যায় না। তবে ভুল কোথায় হয়েছে সে বিষয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।



যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুস সামাদ জানান, সালেহা বেগমের শরীরের ভুল গ্রুপের রক্ত দেওয়া হয়েছে। তবে বর্তমানে শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে।



জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুণ- অর রশিদ বলেন, রোগীর স্বজনরা মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালে এমন ভুল আগে কখনও হয়নি। এই প্রথম তারপরও আগামীতে এ ধরনের ভুল যেন না হয় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।