Advertisement
সালাম মুর্শেদী, (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ
গত দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বৃষ্টির পানি ঢুকে পড়েছে। প্লাবিত হয়েছে অনেক গ্রাম। প্বার্শবর্তী দেশ ভারত থেকে এ পানি নাগর নদী হয়ে এসে বিভিন্ন এলাকায় ঢুকে পড়ছে। এতে চরম দুর্ভোগে আর বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া ও শ্রমজীবী মানুষ। টানা বৃষ্টির জন্য ঘরের বাইরে বের হতে পারছেনা তারা। ঘরের বাইরে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছেনা গবাদিপশুগুলোও৷ বেড়েছে গো-খাদ্যের অভাবও। গ্রামে গ্রামে বৃষ্টির পানি ঢুকে পরায় সাপের উপদ্রবও বেড়েছে। ফলে আতঙ্কে রয়েছেন অনেকেই।
গত বুধবার থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি কখনো মাঝারি, কখনো গুড়িগুড়ি, আবার কখনো মুষলধারে শনিবার পর্যন্ত লাগাতার পড়েছে। এই কয়দিন দেখা মেলেনি সূর্যেরও। লাগাতার বৃষ্টির জন্য উপজেলার তোড়িয়া, আলোয়াখোয়া, ধামোর, রাধানগর, মির্জাপুর ও বলরামপুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি এলাকায় পানি ঢুকে পড়ায় অনেক গ্রাম প্লাবিত হওয়ার চিত্র দেখা গেছে।
তোড়িয়া ইউপির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহ জানান, ওই ইউনিয়নের ডোহাপাড়া, বোধগাও, কাটলি ও দাড়খোর গ্রামের বিভিন্ন অংশ দিয়ে পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে এবং পানি নিষ্কাশনের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
মির্জাপুর ইউপির চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুস ছামাদ জানান, ওই ইউনিয়নের মালিগাও, সর্দারপাড়া, নলপুখুরি সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে।
আলোয়াখোয়া ইউপির চেয়ারম্যান মোঃ মোজাক্কারুল আলম জানান, ওই ইউনিয়নের মোলানী, পাল্টাপাড়া পালপাড়া, বালিয়া, লক্ষীত্থান সহ আরো কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
রাধানগর ইউপির চেয়ারম্যান মোঃ আবু জাহেদ জানান, তার ইউনিয়নের বড়দাপ, বটতলী, চুচুলী, দক্ষিণ দুর্গাপুর সহ বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে এবং পানি নিষ্কাশনের জন্য তার ইউপি সদস্যগনের সহায়তায় বিভিন্ন অংশে কাজ করছেন বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
এদিকে রাতের পর দিনভর বৃষ্টির জন্য বিভিন্ন দিনমজুরের পেরেছেন বিপাকে। কাজে যেতে না পারায় ঘরেই আলসে সময় পার করতে হচ্ছে তাদের। স্কুল ও কলেজ গামী শিক্ষার্থীরাও যেতে পারছেনা তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। যানচলাচলের ক্ষেত্রেও যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে পূর্বের তুলনায় দ্বিগুণ ভাড়া। পানির নিচে তলিয়ে গেছে ধানের চারা সহ পাট খেতও। গত কিছুদিন ধরে বৃষ্টির পানিতে ভিজতে গিয়ে পুকুরে পড়ে শিশু মৃত্যুরও ঘটনা ঘটেছে।
এছাড়াও চলমান এই বর্ষা মৌসুমে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে বয়ে আসা নাগর নদীর পানির উচ্চতাও কিছুটা বেড়েছে। ফলে নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় পানি ঢুকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এলাকাবাসী।
চলমান এ পরিস্থিতি নিয়ে আটোয়ারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ অফিসার ডা. মোঃ হুমায়ুন কবির জানান, বর্ষার মৌসুমে বিভিন্ন নিচু এলাকা প্লাবিত হয়ে থাকে। যার ফলে পানিবাহিত রোগের আশঙ্কা থেকেই যায়৷ এজন্য নিরাপদ পানি ও শৌচাগার ব্যবহার করতে হবে। আর বর্ষার সময়ে পানিতে পরে শিশু মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়ে। সেজন্য শিশুদের প্রতি খেয়াল রাখতে অবিভাবক ও বড়দের আরো সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
সার্বিক বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শাফিউল মাজলুবিন রহমান বলেন, উপজেলার যেকোনো এলাকায় প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া মাত্রই ইউপি চেয়ারম্যানদের সাথে যোগাযোগ রেখে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। কোনো এলাকায় পানি নিষ্কাশনের জন্য রিং পাইপ বা বিম স্থাপন করার ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানান এ কার্মকর্তা।