Advertisement
বিধান মন্ডল ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সচিবের বিরুদ্ধে উঠা অনিয়মের সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়।
চেয়ারম্যানের নির্দেশে তার লোকজন দৈনিক মানবকন্ঠের সদরপুর উপজেলা প্রতিনিধি মিজানুর রহমান, বেসরকারী স্যাটেলাইট টেলিভিশন মাইটিভির প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম জনি ও দৈনিক ভোরের পাতার প্রতিনিধি আরিফুজ্জামান হিমনের উপর হামলা চালায়।
হামলার শিকার সাংবাদিক মিজানুর রহমান জানান, সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ গোলাম কাউসার ও সচিব তামান্না আক্তারের বিরুদ্ধে ওই ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে গেলে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আমি সহ তিন সংবাদ কর্মীর উপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। চেয়ারম্যান নিজে দাড়িয়ে থেকে তার লোকজন দিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়।
তিনি আরো জানান, দুুপুরে পরিষদে গিয়ে সচিবের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি বলেন আমি কোনো কথা বলতে পারবো না, চেয়ারম্যান আসুক, তার সাথে কথা বলেন। এরপর চেয়ারম্যান পরিষদের আসলে তার সাথে কথা বলতে গেলে তিনি ফোন দিয়ে তার লোকজনকে ডেকে আনেন। তারা এসেই আমাদের উপর হামলা চালায়।
অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান শেখ গোলাম কাউসারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, হামলার ঘটনা ঘটেছে, তবে কারা হামলা চালিয়েছে সেটা বলতে পারবো না।
গত ২৩ জুন ভাষানচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ গোলাম কাউসার ও সচিব তামান্না আক্তারের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ইউনিয়ন পরিষদের ৮ জন ইউপি সদস্য।
এছাড়া ওই ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিবের বিরুদ্ধে ভিজিডি কার্ড, বয়স্ক ভাতা বিতরণ সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তাকে দেওয়া হয় হুমকি ধামকি। ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। এসকল বিষয়ের সত্যতা যাচাইয়ে পরিষদে গেলে চেয়ারম্যান নিজে দাড়িয়ে থেকে তার লোকজন দিয়ে সাংবাদিকদের উপর হামলা চালায়।
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল ইসলাম পিকুল বলেন, সাংবাদিকদের সাথে এধরনের আচরন কাম্য নয়। চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়েছে। চেয়ারম্যান সহ যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়ার দাবী জানাই প্রশাসনের প্রতি।
সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: শফিকুল ইসলাম জানান, সাংবাদিকদের উপর হামলার বিষয়টি তার জানা নেই। তবে হামলার শিকার সাংবাদিকরা অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
হামলার শিকার মাইটিভির প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম জনি বলেন, হামলার ঘটনার পর দ্রুত জেলা শহরে এসে জেলার সাংবাদিকদের বিষয়টি জানাই। একারনে থানায় অভিযোগ দিতে পারিনি। সাংবাদিক নেতৃবৃন্দকে বিষয়টি জানানো হয়েছে, তারা যে সিদ্ধান্ত দিবেন, সেটাই করা হবে।
সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মোরাদ আলী জানান, বিষয়টি জানতে পেরেছি। চেয়ারম্যানকে ফোন দিয়েছিলাম তার দাবী তিনি হামলার সাথে জড়িত নন। তবে বিষয়টি আগামীকাল তদন্ত করে দেখবো। হামলার শিকার সাংবাদিকরা যদি আইনের সহযোগিতা চায় তাহলে তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।