Advertisement
জহিরুল ইসলাম,যশোর প্রতিনিধি:
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের ডাক্তার শাহীন রেজার অপচিকিৎসায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আছেন ডলি খাতুন নামে একজন রোগী। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য তিনি নাক-কান-গলা বিভাগের ডাক্তার হয়েও দেশ ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ওই নারীকে সিজারিয়ান অপারেশন করিয়েছেন। অপারেশনের সময় কেটে খেলেছেন খাদ্য ও মূত্রনালী। এ ঘটনায় রবিবার বিকেল রোগীর স্বজনরা ডাক্তার শাহীন রেজাকে অপারেশন কক্ষে আটকে রেখে বিচার দাবি করেন। উত্তেজিত জনতা ডাক্তারকে মারতে উদ্যত হয়। তখন পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন।
রোগীর স্বজনরা জানান, ২৯ মে বাঘারপাড়া উপজেলার চানপুর গ্রামের মইনুল ইসলামের প্রসূতি স্ত্রী ডলি খাতুন যশোর জেনারেল হাসপাতালের সামনে দেশ ক্লিনিকে ভর্তি হন। এ সময় সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর যশোর জেনারেল হাসপাতালের নাক-কান গলা বিভাগের ডাক্তার শাহীন রেজা তার সিজার করান। এ সময় ওই প্রসূতি একটি মেয়ে সন্তান প্রসব করেন। সেখানে তিন দিন চিকিৎসা শেষে রোগীর স্বজনরা তাকে নিয়ে বাড়িতে চলে যান। কিছু দিন পর রোগীর অবস্থার অবনিত হলে স্বজনরা তাকে অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার করে জানানো হয় যে রোগী অপচিকিৎসার শিকার হয়েছেন। তার খাদ্য ও মূত্রনালী সিজারের সময় কেটে ফেলা হয়েছে। পরে খাদ্য ও মূত্র নালী একসঙ্গে সেলাই করে দেওয়া হয়েছে। যার কারণে মূত্রনালী দিয়ে রোগীর টয়লেট বের হচ্ছে।
রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, অপারেশনের সময় ডাক্তার শাহীন রেজা নিজেকে গাইনি ডাক্তার পরিচয় দিয়ে রোগীর অপারেশন করেন। পরবর্তীতে রোগীর সমস্যা দেখা দিলে খোঁজ-খবর নিয়ে তারা জানতে পারেন শাহীন রেজা সদর হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগের চিকিৎসক। তিনি কোনো গাইনি ডাক্তার নন। তাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।
ডাক্তার শাহীন রেজা যশোর জেনারেল হাসপাতালের ইএনটি বহির্বিভাগে রোগী দেখেন। তিনি কোনো সার্জারি ডাক্তার নন। কিন্তু শহরের ৪-৫টি ক্লিনিকে বিভিন্ন ধরনের সার্জারি করে থাকেন। ১৫ দিন আগেও তিনি একটি ক্লিনিকে এক রোগীর পিত্তথলির পাথর অপরেশন করে বির্তকে পড়েন। ওই রোগীও অপচিকিৎসার শিকার হন। বর্তমান ঐ রোগী ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই জাহিদুল ইসলাম জানান, ক্লিনিকে ডাক্তার ও রোগীর স্বজনদের হট্টগোল হচ্ছে মর্মে খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন। রোগীর স্বজনরা মৌখিক অভিযোগ করেছেন যে ডাক্তারের অপচিকিৎসার শিকার হয়েছেন ওই নারী। অপরদিকে ডাক্তার বলছেন, তাকে আটকে রেখে নির্যাতন করতে চেয়েছিলেন রোগীর স্বজনরা। কোনো পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযুক্ত ডাক্তার শাহীন রেজা জানান, তিনি গাইনি বা সার্জারি বিভাগের ডাক্তার নন সত্যি। যশোর জেনারেল হাসপাতালের ইএনটি বিভাগে কর্মরত আছেন। এমবিবিএস ডাক্তার সব চিকিৎসা ও অপারেশন করতে পারেন বলে দাবি করেন ঐ ডাক্তার।