Advertisement
সালাম মুর্শেদী, (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ
পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে নিজ বাড়িতে মা ও দুই সন্তানকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার সাথে জড়িত একজনকে আটক করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগষ্ট) সকাল ১১ টার দিকে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতাল থেকে নবিন ইসলাম (২৩) নামে একজনকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ টিম। প্রাথমিকভাবে নবিন হত্যার দায় স্বীকার করেছে বলে জানায় পুলিশ। নবিন উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের দলুয়া কুড়ুলিয়া গ্রামের ফজলারের ছেলে।
আটোয়ারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মুসা মিয়া বাংলাদেশ প্রকাশ'কে জানান, গতকাল রাতে ট্রিপল খুনের ঘটনার পর থেকেই আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা প্রকৃত খুনিদের ধরতে মাঠে নামে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি যে, আহত অবস্থায় এই গ্রামের একজন বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রেফার নিয়ে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে তাকে আটকের পর জিজ্ঞেসাবাদ করলে প্রাথমিকভাবে হত্যার দায় স্বীকার করে৷ এবং তার সাথে জড়িত পলাতকদের নাম স্বীকার করে।
জড়িতরা হলেন, বোদা উপজেলার ইসলামবাগ গ্রামের শফিউর রহমানের ছেলে সাজ্জাদুর রহমান বাধন (২৭), নগরকুমারী গ্রামের নওশাদ আলীর ছেলে রিমন ইসলাম (৩০), বোদা কলেজপাড়া এলাকার সলিম উদ্দিনের ছেলে রিফাত (৩২)। তাকে সেখান থেকে গ্রেফতার করে খুনের কাজে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়৷ বর্তমানে সে আটোয়ারী থানা পুলিশের হেফাজতে আছে এবং কিলিং মিশনের সাথে জড়িতদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
স্থানীয় মাজেদুর রহমান নামে ব্যক্তি জানান, ধৃত নবিন একই এলাকার ফজলারের ছেলে। সেলিম উদ্দিনের বাড়ি আশেপাশে তেমন কোন ঘরবাড়ি নেই৷ পার্শ্ববর্তী বোদা বাজারে তার একটি কাপড়ের দোকান রয়েছে। সেই সুবাদে সেলিম সারাদিন দোকানেই থাকে। তার বাড়ির পূর্ব পাশে মুরগির খামারের একটি পরিত্যক্ত ঘর আছে। জায়গাটি নিরিবিলি হওয়ায় সেখানে প্রায়ই সময়ে নবিন তার বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে মাদক সেবন করত। এনিয়ে সেলিম তাদেরকে বেশ কয়েকবার বাঁধাও দেয়। তাতে কোন কাজ হয়নি। সর্বশেষ খামারের বসে মাদক সেবন করায় কিছুদিন পূর্বে সেলিম তাদেরকে বাঁধা দিয়েছিল। এতে তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা ও দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। ওই বাকবিতন্ডা ও দ্বন্দ্বের জের ধরে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা হতে পারে বলে ধারণা করছেন এলাকাবাসী।
উল্লেখ্য, গতকাল রাতে সেলিম পার্শ্ববর্তী বোদা বাজারে তার কাপড় দোকান বন্ধ করে বাড়িতে আসেন। এ সময় বাড়ির ড্রয়িং রুমের দরজা খোলা দেখে কাছে গিয়ে ফ্লোরে স্ত্রী ও দুই সন্তানের রক্তাক্ত মরদেহ দেখে চিৎকার করতে থাকেন। দ্রুত প্রতিবেশীরা ছুটে এসে মরদেহ দেখে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে আটোয়ারী থানা পুলিশ, সেনাবাহিনী ও আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাফিউল মাজলুবিন রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ ঘটনায় ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু করে আটোয়ারী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং-০৩।