lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Last Updated 2024-09-26T04:06:38Z
অনিয়ম - দুর্নীতি

নাগেশ্বরীতে সাব রেজিস্টার প্রফুল্ল চন্দ্র মন্ডলের হাতে আলাদিনের চেরাগ!

Advertisement


 

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা ও অর্থদাতা নাগেশ্বরী উপজেলার প্রফুল্ল চন্দ্র মন্ডল মাদারগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে চাকরি করাকালীন সময়ে গত ২০১০খ্রিঃ ভূয়া মুজিব নগর সার্টিফিকেটের মাধ্যমে সাব-রেজিস্টার চাকরিতে যোগদান করে বিভিন্ন উপজেলায় চাকরি করে দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার সম্পদ করেছেন। ঢাকা তেজগাঁও শিল্প এলাকার সাব রেজিস্টার অফিসে কর্মরত থেকে অবাধে দুর্নীতি করে অবৈধভাবে অর্থের পাহাড় গড়েন এবং চলতি বছরে দিনাজপুর সদর সাব-রেজিস্টার অফিস থেকে অবসরে আসেন। তার ঘুষ-দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে।


অনুসন্ধানে জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকাটা থানার নারায়নপুর ইউনিয়নের মদনেরচর এলাকার মৃত মদন চন্দ্র মন্ডলের পুত্র প্রফুল্ল চন্দ্র মন্ডল মাদারগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকরিকালীন সময়ে বল্লভেরখাস ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পাড়া এলাকায় সামান্যতম জমি কিনে দুটি টিনের ঘর তুলে মাদারগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে চাকরির সময় অভাব অনটন ছিলো তার নিত্যসঙ্গী। তিনি একটি পুরনো বাইসাইকেল দিয়ে স্কুলে যেতেন। অতি কষ্টে স্ত্রী শ্রীমতি ত্রিবেণী মন্ডল, এক পুত্র তুষার কান্তি মন্ডল ও এক কন্যা শ্রীমতি পলি মন্ডল এর লেখাপড়া ও জীবন নির্বাহ করাতেন।


২০১০খ্রিঃ মাদারগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রধান শিক্ষক পদে চাকরি রিজেন্ট দিয়ে ভূয়া মুজিব নগর সার্টিফিকেটের মাধ্যমে সাব রেজিস্টার চাকরিতে যোগদান করে গাবতলা বাজার (কুমারপাড়া) সওজ রাস্তার পাশ্বে বদ্ধা চন্দ্র নামের এক ব্যক্তির জমি ক্রয় করে সে জমিতে প্রায় দুই কোটি টাকা দিয়ে নির্মান করেছেন ৩ তলা স্বর্ণকমল প্রাসাদ একটি বাড়ি, রংপরে কিনেছেন ১কোটি টাকা দিয়ে বিশালবহুল ফ্লাড।


শুধু তাই নয় স্ত্রী শ্রীমতি ত্রিবেণী মন্ডল, এক পুত্র তুষার কান্তি মন্ডল ও এক কন্যা শ্রীমতি পলি মন্ডল এবং তার সহধর্মিণীর ভাই কালীগঞ্জ ইউনিয়নের কুমেদপুর (কপালীপাড়া) গ্রামের দিনোবন্ধু সরকারের পুত্র বিশ্বনাথ চন্দ্র সরকার, রবীন্দ্রনাথ সরকার সহ গাবতলা স্বর্ণকমল প্রাসাদের কেয়ারটেকার গোবিন্দ চন্দ্র মজুমদারের নামে দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার সম্পদ ক্রয় করেছেন। মাদারগঞ্জ পারেরভিটা গ্রামের নুর ইসলাম (নন্দীয়ান মহাজান) এর গাবতলা বাজারে ২০শতক জমিতে মার্কেট ৩৭লাখ টাকায় ক্রয় ও রেজিস্টারী করে নেয় প্রফুল্ল চন্দ্র মন্ডল তার শেলক বিশ্বনাথ চন্দ্র সরকারের নামে। কচাকাটা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল হাশেম সরকারের ৩২শতক জমি ৬লাখ টাকা, নারায়নপুর ইউনিয়নের চৌদ্দঘুড়ী চরের বাসিন্দা আব্দুর রশীদের গাবতলা মোল্লাপাড়া গ্রামের ৯১শতক জমি ১৫লাখ টাকা ও এক পুত্র সন্তান, স্ত্রী ও শেলকের নামে বেনামে ক্রয় করেছেন জমি এবং কচাকাটা গাবতলা থেকে রংপুর যাতায়াতের জন্য কিনেছেন এসি প্রাইভেট কার এভাবে রয়েছে তার কোটি কোটি টাকার সম্পদ। সাব রেজিস্টার প্রফুল্ল চন্দ্র মন্ডলের একমাত্র পুত্র তুষার কান্তি মন্ডল রংপুরে থেকে একটি কলেজে লেখাপড়া করেছেন এবং রংপুর মহানগর ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ও অর্থদাতা মর্মে ছাত্রলীগের নামে আবার কখনো সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে আওয়ামীলীগ শাসন আমলে এই প্রতিনিধি কে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। এমনকি সাব রেজিস্টার প্রফুল্ল চন্দ্র মন্ডল আওয়ামীলীগ শাসন আমলে এই প্রতিনিধি কে বিভিন্ন রাজনৈতিক লিডার কে দিয়ে ফোন দেওয়া সহ বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়েছেন। অপরদিকে সাব রেজিস্টার প্রফুল্ল চন্দ্র মন্ডল নারায়নপুর ইউনিয়নের মদনেরচর এলাকার মৃত মদন চন্দ্র মন্ডলের পুত্র। মৃত মদন চন্দ্র মন্ডলের মদনেরচরে অনেক পতিত বালু জমি রয়েছে এবং সে সব জমির সরকারের খাষ খতিয়ানে অন্তর্ভূক্ত। বর্তমানে সে জমির মামলা কুড়িগ্রাম বিজ্ঞ আদালতে চলমান।


নারায়নপুর ইউনিয়নের মদনেরচর এলাকার জিয়াউর রহমান, মজিবুল হক, একরামুল হকসহ একাধিক স্থানীয়রা জানান, সাব রেজিস্টার প্রফুল্ল চন্দ্র মন্ডলের পিতা মৃত মদন চন্দ্র মন্ডলের মদনেরচরে অনেক পতিত বালু জমি রয়েছে এবং সে সব জমির সরকারের খাষ খতিয়ানে অন্তর্ভূক্ত। সে সব জমির মামলা কুড়িগ্রাম বিজ্ঞ আদালতে চলমান। প্রফুল্ল চন্দ্র মন্ডল সাব রেজিস্টার চাকরি করে কোটি কোটি টাকার সম্পদ করেছেন এবং বর্তমানেও জমি কিনে যাচ্ছেন।


গাবতলা বাজারের আব্দুল জলিল, সৈয়দ আলী, সৈইফুর রহমান সহ অনেকে বলেন, সাব রেজিস্টার প্রফুল্ল চন্দ্র মন্ডল আমাদের এলাকার জমি তিনগুন মূল্য বেশী দিয়ে কিনছেন। গাবতলা বাজারে এক পরিবারের এক ভাইয়ের (জমি অতিরিক্ত টাকায়) ৭লাখ টাকা শতকে কেনার পায়তারা করায় ঐ পরিবারের মধ্যে অশান্তি আর মামলা চলছে। প্রফুল্ল চন্দ্র মন্ডলের অর্থের গরম ও ক্ষমতার দাপটে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ। উধ্বতর্ন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রফুল্ল চন্দ্র মন্ডলের দুর্নীতির সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।


সাব রেজিস্টার প্রফুল্ল চন্দ্র মন্ডলের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সাব রেজিস্টার চাকরি তো বোঝেন। বর্তমান আমাদের আওয়ামীলীগ সরকার নেই। দয়া করে সংবাদটি প্রচার করবেন না।


রংপুর দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক বলেন, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করেন তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। (নিউজ পর্ব-১)