lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Last Updated 2024-09-09T11:39:25Z
ব্রেকিং নিউজ

বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে চাকুরী দেয়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

Advertisement


 


বরগুনা প্রতিনিধি:

আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের হালিমা খাতুন নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বরখাস্তকৃত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে চাকুরী দেয়ার কথা বলে তেইশ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী আমিনুল ইসলাম, রিয়াজ জোমাদ্দার, তাজনেহার, শাহজাহান কবির ও হামিদা বেগম এমন অভিযোগ করেছেন। দ্রুত তারা টাকা ফেরত দেয়ার দাবী জানিয়েছেন।

জানাগেছে, উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের হালিমা খাতুন নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মিজানুর রহমান বাদল ২০২২ সালের ৩০ এপ্রিল অবসরে যান। অবসরে যাওয়ার ১৩ দিন আগে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ আনোয়ার হোসেন অবৈধভাবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেন। প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নিয়েই তিনি চাকুরী দেয়ার নাম করে আমিনুল ইসলাম, রিয়াজ জোমাদ্দার, তাজনেহার, শাহজাহান কবির ও হামিদা বেগমের কাছ থেকে তেইশ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা নেয়। চাকুরী না দিয়ে তিনি ওই টাকা আত্মসাৎ করেছেন এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। ভুক্তভোগী আমিনুল ইসলামের অভিযোগ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন আইসিটি শিক্ষক হিসেবে তাকে নিয়োগ দিতে রুপালী ব্যাংকের চেক ও স্ট্যাম্প জমা রেখে দশ লক্ষ টাকা নেয়। কিন্তু তাকে নিয়োগ না দিয়ে তিনি ওই টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তার আরো অভিযোগ টাকা আত্মসাৎ করেই খ্যান্ত হয়নি প্রধান শিক্ষক। প্রত্যারনার আশ্রয় নিয়ে নিয়োগ না দিয়েই শিক্ষক বিবরনীতে তার নাম অর্ন্তভুক্ত করেছেন। এছাড়াও চাকুরী দেয়ার কথা বলে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিয়ে রিয়াজ জোমাদ্দারের কাছ থেকে সাড়ে চার লক্ষ,সোনালী ব্যাংকের চেক দিয়ে তাজনেহারের কাছ থেকে তিন লক্ষ টাকা,শাহজাহান কবিরের কাছ থেকে চার লক্ষ টাকা এবং হামিদার কাছ থেকে দুই লক্ষ টাকা নেন প্রধান শিক্ষক। কিন্তু তাদের কাউকে তিনি চাকুরী দেয়নি। এছাড়াও ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব নিয়ে তিনি নানাবিধ অপরাধে জড়িয়ে পরেন। তার এমন কর্মকান্ডে তৎকালিন বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড. এইচএম মনিরুল ইসলাম মনি এ বছর ২২ জুন তাকে সাময়ীক বরখাস্ত করেন। বরখান্তকৃত প্রধান শিক্ষক মোঃ আনোয়ার হোসেন তার বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার এবং বেতন-ভাতাসহ স্ব-পদে বহালের জন্য বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে আবেদন করেন। শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক মোঃ রফিকুল ইসলাম খাঁন এ বছর ৬ জুন তাকে বেতন-ভাতাসহ  স্ব-পদে বহালের নির্দেশ দেন। পরে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি অ্যাড. এইচএম মনিরুল ইসলাম মনি বোর্ডের আদেশ পুনবিবেচনার জন্য বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ডে তার অপকর্মের ফিরিস্তি জানিয়ে আবেদন করেন। বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক মোঃ রফিকুল ইসলাম খাঁন গত ২৯ জুলাই স্ব-পদে বহালের আদেশ স্থগিত করে দেন। এদিকে চাকুরী দেয়ার কথা বলে টাকা নেয়ার দুই বছর পেরিয়ে গেলেও তিনি কাউকে টাকা ফেরত দেয়নি বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। দ্রুত তারা টাকা ফেরত দেয়ার দাবী জানিয়েছেন। 

রিয়াজ জোমাদ্দার বলেন, আমাকে চাকুরী দেয়ার কথা বলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন সাড়ে চার লক্ষ টাকা নিয়েছেন কিন্তু চাকুরী দেয়নি। উল্টো নানাভাবে হয়রানী করছেন। দ্রুত এ টাকা ফেরত দেয়ার দাবী জানান তিনি। 

আমিনুল ইসলাম বলেন,  আমাকে চাকুরী দেয়ার কথা বলে আমার বড় ভাই মোঃ নজরুল ইসলামের কাছ থেকে হালিমা খাতুন নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক (বরখাস্তকৃত) মোঃ আনোয়ার হোসেন রুপালী ব্যাংকের চেক ও লিখিত ষ্ট্যাম্প রেখে দশ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। কিন্তু চাকুরী না দিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। দ্রুত এ টাকা ফেরত দেয়ার দাবী জানান তিনি। 

হালিমা খাতুন নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত (বরখাস্তকৃত) প্রধান শিক্ষক মোঃ আনোয়ার হোসেন চাকুরী দেয়ার কথা বলে টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি তাদেরকে কিছু টাকা ফেরত দিয়েছি। 


আমতলী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার অলী আহাদ বলেন, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগসহ বেশ কিছু কাগজপত্র জমা আছে। ওই কাগজপত্র পর্যালোচনা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, বোর্ডের নির্দেশ মতে তার বন্ধ বেতনভাতা ছাড় দেয়ার ব্যবস্থা করতে কাজ করছি।