lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Last Updated 2024-09-21T12:08:17Z
ব্রেকিং নিউজ

যশোরের যে ঘটনা সিনেমার কাহিনীকেও হার মানালো

Advertisement


 

জহিরুল ইসলাম ,যশোর প্রতিনিধি:

যশোরে চুরির দায় সাব্বির হোসেন (২৩) নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশ। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাত আড়াইটার দিকে থানা থেকে পালিয়ে যান ওই যুবক। পালানোর সময় একটি বহুতল ভবনের কার্নিশে আটকে পড়েন ওই যুবক।  যশোর শহরের সিটি প্লাজা বহুতল ভবনের কার্নিশে আট ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ঝুলে ছিলেন তিনি। ধীরে ধীরে নজরে পড়ে পথচারীসহ এলাকাবাসীর। গোটা যশোরজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয় বিষয়টি নিয়ে।


বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে পালানোর সময় সিটি প্লাজার পূর্বপাশের ওয়াচ টাওয়ারের এসির ওপর থেকে দুই তলা ছাদের টিনের ওপর পড়ে যান ওই যুবক। পড়ে যাওয়ার শব্দ ও আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজনের ঘুম ভেঙে যায়। তাৎক্ষণিক সাব্বির কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে পালিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে সিটি প্লাজার দক্ষিণ প্রান্তে সড়কের কাছে সিটি ব্যাংকের সামনে আসে। এ সময়ে বিপুলসংখ্যক উৎসুক জনতা ও পুলিশ থাকাতে সে থাই গ্লাসের কাঁচ ভেঙে নিজের হাতে নিয়ে হুমকি দিতে থাকে যে, তাকে ধরার চেষ্টা করলে খণ্ড কাচের টুকরো নিজের পেটে ঢুকিয়ে সে আত্মহত্যা করবে। পরে এখান থেকে পালিয়ে আবারও সিটি প্লাজার কার্নিশে গিয়ে ওঠেন।


এরপর সকাল ৭টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থালে আসেন এবং মই দিয়ে তাকে নিচে নামানোর চেষ্টা করলে সে ভবনের কার্নিশ ও সেনেটারি পাইপের ধরে পাঁচতলার দিকে উঠতে থাকে। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তার প্রেমিকাকে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসে। প্রেমিকার অনুরোধেও সাব্বির নিচে নামেনি। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পাঁচ ঘণ্টা একটানা চেষ্টা করেও তাকে উদ্ধার করতে না পেরে এক সময় আশা ছেড়ে দিয়ে ফায়ার স্টেশনে ফিরে যান। পরে লোকজন কিছুটা কম হলে সে নামতে গিয়ে ভবনের নিচে পড়ে গুরুতর আহত হয়। এ সময়ে স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ বিশিষ্ট হাসপাতালে সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সেখান থেকে কাউকে কিছু না বলেই তার মা ও তার আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান সাব্বির।


নাম প্রকাশ না করার শর্তে যশোর পলিটেকনিক কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, সাব্বির চুয়াডাঙ্গা জীবননগর বাস স্ট্যান্ড এলাকার শহিদুল ইসলামের ছেলে। পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে সে যশোরে আসে এক নারীর সঙ্গে দেখা করতে। ওই নারীর সঙ্গে দিনে বিভিন্ন জায়গাতে ঘোরাফেরা করে। রাতে যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হলে একজনের ম্যাচে ওঠেন। সেখানে ফোন ও টাকা চুরির দায়ে শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করেন। পরে যশোর এমএম কলেজে দর্শন বিভাগে পড়ুয়া প্রেমিকার সঙ্গে সাব্বির দেখা করতে এসেছিল বলে জানা যায়।


মধ্যরাতে পুলিশ যশোর পলটেকনিক ইনস্টিটিউটে গিয়ে সাব্বিরকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। সকালে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারি সাব্বির রাত আড়াইটার দিকে থানা থেকে পালিয়ে গেছে।


বিষয়টি নিয়ে যশোর কোতোয়ালী থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, চুরির ঘটনাটা সঠিক নয়। তার এক বান্ধবীর অভিযোগের ভিত্তিতে থানার এসআই ইমরানসহ পুলিশের কয়েকজন সদস্য পলিটেকনিক কলেজের আবাসিকে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। যশোর ২৫০ বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তার সাকিরুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে পুলিশ ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পুলিশ আমাদেরকে জানায় সে ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছে। পরে জরুরি ভিত্তিতে তাকে সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। এরপর বেলা ১টার সময়ে জানতে পারি ওই যুবক ও তার পরিবারের লোকজন ওয়ার্ডের কাউকে কোনো কিছু না বলেই পালিয়ে গেছে।