Advertisement
মো:আল-আমিন হোসেন, পাবিপ্রবি:
পাবনা জেলায় অবস্থিত একমাত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ছাত্র - জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অগণিত ছাত্র। তবে রাজনৈতিক চাপে গণঅভ্যুত্থান পূর্ববর্তী সময়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনেকেই থেকেছে নিরব। গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র জনতার বিজয়ের পর পদত্যাগ করায় বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে পদশূন্য উপাচার্য,উপ-উপাচার্য,কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টর সহ আরো গুরুত্বপূর্ণ পদ।এরপরও থেমে নেই ক্লাস, পরীক্ষা। এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের এই প্রতিবেদনে তুলে ধরছি কয়েকজন মেধাবী শিক্ষার্থীদের মনোভাব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন ১১তম ব্যাচের ছাত্র জান্নাতুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে হলের পরিবেশ অত্যন্ত ভালো ও প্রভোস্টরা সকল দাবি দাওয়ার সাথে সাড়া দিচ্ছেন। ডাইনিং চালু হয়েছে ফলশ্রুতিতে খাবারেও কোনো সমস্যা নাই। যেকারণে মনের মধ্যে অন্যরকম একটা শান্তি বিরাজমান। যে কোনো রাজনৈতিক দল নিয়ে আলোচনা সমালোচনাও করা যাচ্ছে ইচ্ছেমতো ক্যাম্পাসের গ্রুপে। এককথায় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড না থাকায় মুক্ত স্বাধীন পাখির মতো ডানা মেলে উড়ার স্বাদ পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
গণিত ১০ম ব্যাচের ছাত্র আশিকুর রহমান বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পরেও ক্যাম্পাসে আগের মতই ক্লাস চলছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের মত প্রকাশের সুযোগ পাচ্ছে। কিন্তু প্রশাসনিক প্রধানগণ যেমন ভিসি বা প্রক্টর না থাকার কারণে সবাই ছোট ছোট কিছু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। আশা করছি এই সমস্যা নিরসনে সরকার খুব দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহন করবে। আমরা চাই পাবিপ্রবি হোক মুক্তচিন্তার ও জ্ঞান চর্চার বৃহৎ ক্ষেত্র।
নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ১৪তম ব্যাচের ছাত্রী আয়েশা হোসাইন বলেন,ক্যাম্পাসে পা রাখলেই যেন অবকাঠামো মূলক উন্নয়নের ধারায় ভেসে যাই। কিন্তু এই অবকাঠামো মূলক উন্নয়ন যেন শেষ হচ্ছেই না। এই অবকাঠামোমূলক উন্নয়নে চাপা পড়ে গেছে সবুজ শ্যামল ক্যাম্পাস। আবার একটি সবুজ পাবিপ্রবি চাইলেই করা যেতে পারে ঐক্যবদ্ধভাবে। ঠিক যেমন ঐক্যবদ্ধ ভাবে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করেছি আমরা। পাবিপ্রবি এখন রাজনীতি ও র্যাগিং মুক্ত একটি ক্যাম্পাস। চলুন শিক্ষক, শিক্ষার্থী কর্মচারী সকলে মিলে একটি স্বপ্নের পাবিপ্রবি গড়ে তুলি।
পরিসংখ্যান বিভাগের ১১তম ব্যাচের ছাত্র রেজোয়ান হৃদয় বলেন,২০১৯ সালে ক্যাম্পাসে আসা। তবুও ক্যাম্পাসে নিজেকে মেলে ধরা অনেকাংশে কষ্টসাধ্য ছিল। তবে জুলাই বিপ্লব যেন এই পরাধীনতাকে গ্রাস করেছে। এই স্বাধীনতাকে লালন করে আমরা স্বাধীনভাবে জ্ঞানচর্চা করে নিজেকে সৎভাবে দেশের জন্য প্রস্তুত করতে চাই। এই স্বাধীনতার চর্চা যেন ক্যাম্পাসের প্রতিটি সেক্টরে বিদ্যমান থাকে এমন প্রত্যাশা করছি সবার কাছ থেকে।
এছাড়াও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রায় শতাধিক ছাত্র -ছাত্রী ক্যাম্পাসের বর্তমান অবস্থা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। তাদের বক্তব্য ছাত্রলীগের তান্ডবে বেশিরভাগ ছাত্র ছাত্রীকে পরাধীন ভাবে চলতে হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে উপাচার্য পর্যন্ত সর্বস্তরেই ছিল তাদের কর্তৃত্ব। ছাত্র জনতার আন্দোলনে আওয়ামিলীগ সরকারের পতনের পর স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।