Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদক
কুড়িগ্রামসহ বাংলাদেশের অনলাইন ক্যাসিনোর ডিপো সম্রাট ও বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক-লীগ নাগেশ্বরী উপজেলা শাখার অর্থ বিষয়ক সম্পাদক 'আওয়ামী লীগ ও শ্রমিক-লীগ দলের অর্থদাতা' ডলার আব্দুর রহিম শেখ দীর্ঘদিন থেকে আওয়ামী লীগের ক্ষমতা দেখিয়ে প্রকাশ্যে কুড়িগ্রাম জেলাসহ সমগ্র বাংলাদেশে কয়েকটি অনলাইন ক্যাসিনো ব্যবসার ডিলার হয়ে এক পুত্র সন্তান, স্ত্রী ও আত্মীয়সহ নামে বেনামে ক্রয় করেছেন জমি এবং নাগেশ্বরী কলেজ মোড়ে রয়েছে ডিজিটালাইজড জিসান ট্রেডার্স দেশী ও বিদেশী উন্নয়নমানের কাপড়ের শোরুম এবং এভাবে রয়েছে তার কোটি কোটি টাকার সম্পদসহ ব্যাংকে দৃশমান কোটি কোটি টাকা। তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলেই তাকে হতে হয় বলির পাঠা। ডলার আব্দুর রহিম শেখের তত্ত্বাবধায়নে অনলাইন ক্যাসিনো খেলায় অনেক যুবক সর্বশান্ত হয়ে পরিবার থেকে বিতারিতসহ ফুলবাড়ীর বেড়াকুটি বাজার বণিক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলামও সর্বশান্ত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করার লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের কুটি নাওডাঙ্গা (ধরকারকুটি) গ্রামের মাঝি মকবুল হোসেনের ছেলে আব্দুর রহিম শেখ। বিগত ২০০৭সাস থেকে মকবুল হোসেন ধরকারকুটি নদীতে মাছ ধরে বিক্রি করে ছেলে রহিম শেখসহ পরিবার কে নিয়ে অতিকষ্টে জীবন অতিবাহিত করেছেন। ২০০৮সালে অভাবের তাড়নায় আব্দুর রহিম শেখ ঢাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। ঢাকায় কাজ করার সময় পরিচয় হয় ক্যাসিনো সম্রাট হোসেনের সাথে অতঃপর রহিম শেখ ক্যাসিনো খেলা শুরু করেই এক বছরের মধ্যেই হয়ে যান ক্যাসিনো ডিলার ব্যবসায়ী। এরপর ২০১০সালে রহিম শেখ ঢাকা থেকে চলে আসেন গ্রামের বাড়ি নাগেশ্বরীর কুটি নাওডাঙ্গা (ধরকারকুটি) গ্রামে এসেই যুবকদের আসক্ত করেন অনলাইন ক্যাসিনো খেলায় এবং এক পর্যায়ে ২০১৩সালে কুড়িগ্রামসহ বাংলাদেশের অনলাইন ক্যাসিনোর ডিপো সম্রাট হিসেবে ব্যাংকে দৃশমান হয়ে উঠে কোটি কোটি টাকা। অবশেষে প্রশাসনের তোপেড় মুখে পড়ায় নাগেশ্বরী উপজেলার কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার সহযোগীতা নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক-লীগ নাগেশ্বরী উপজেলা শাখার অর্থ বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং কুড়িগ্রাম জেলা ও নাগেশ্বরী উপজেলা আওয়ামী লীগ ও শ্রমিক-লীগ দলের সকল ব্যয়ভার করতেন। শুধু তাই নয় আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-১আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী এ.কে.এম মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক (লাঙ্গল) কে সন্তোষপুর ইউনিয়নে আব্দুর রহিম শেখ তার নেতৃত্বে কোটি টাকা ব্যয় করে বিপুল ভোটে জয়লাভ করান। ডলার আব্দুর রহিম শেখ দীর্ঘদিন থেকে আওয়ামী লীগের ক্ষমতা দেখিয়ে প্রকাশ্যে নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী, ফুলবাড়ী উপজেলা ও কুড়িগ্রাম জেলাসহ সমগ্র বাংলাদেশে কয়েকটি অনলাইন ক্যাসিনো ব্যবসার ডিলার হয়ে এক পুত্র সন্তান, স্ত্রী ও আত্মীয়সহ নামে বেনামে ক্রয় করেছে পাতারী মসজিদ, মালভাঙ্গা ভাই ভাই মোড়, নাগেশ্বরী সদরসহ বিভিন্ন স্থানের প্রায় ১০একর থেকে ১৫একর জমি এবং নাগেশ্বরী কলেজ মোড়ে রয়েছে বিশাল ডিজিটালাইজড কাপড়ের শোরুম এবং রংপুর বিভাগের রয়েছে রংপুর হেল্প হসপিটাল। চলতি বছর সন্তোষপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনে সে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে আসে কিন্তু তার ভাতিজা ক্যাসিনো সম্রাট মাইনুল ইসলাম চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার কারণে রহিম শেখ বসে যান। কুড়ে ঘরের জায়গায় উঠেতে পাকা বাড়ি। রয়েছে বিশাল নাওডাঙ্গা, ধরকা ও নিমকুশ্যা বিলে মাছ চাষের ব্যবসা, ঠিকাদারী, গরুর খামার, স্টক বিজনেস এবং নাগেশ্বরী কলেজ মোড়ে জিসান ট্রেডার্স। রয়েছে কয়েক একর জমিসহ কয়েকটি দামি মটর বাইক। এভাবে রয়েছে ডলার রহিম শেখের কোটি কোটি টাকার সম্পদসহ ব্যাংকে দৃশমান কোটি কোটি টাকা। ডলার রহিম শেখের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলেই তাকে হতে হয় বলির পাঠা। ডলার আব্দুর রহিম শেখের তত্ত্বাবধায়নে রয়েছে একটি 'ডলার বাহিনী দল। তার ডলার বাহিনী দলের ভয়ে সাধারণ মানুষ নিরব। ফুলবাড়ীর বেড়াকুটি বাজার বণিক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম ক্যাসিনো সম্রাট রহিম শেখের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় আমিনুল আজ সর্বশান্ত এবং কয়েকটি মামলার আসামী হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করে আসছেন।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, ক্যাসিনোর সম্রাট ও বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক-লীগ নাগেশ্বরী উপজেলা শাখার অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ডলার আব্দুর রহিম শেখ দীর্ঘদিন থেকে আওয়ামী লীগ দলের ক্ষমতা দেখিয়ে প্রকাশ্যে অনলাইন ক্যাসিনো ব্যবসার ডিলার হয়ে এক পুত্র, স্ত্রী ও আত্মীয়সহ নামে বেনামে ক্রয় করেছেন জমি এবং নাগেশ্বরী কলেজ মোড়ে রয়েছে ডিজিটালাইজড জিসান কাপড়ের শোরুম এবং এভাবে রয়েছে তার কোটি কোটি টাকার সম্পদসহ ব্যাংকে দৃশমান কোটি কোটি টাকা। যৌথ বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার ক্যাসিনো সম্রাট মাইনুল ইসলাম হচ্ছেন রহিম শেখের আপন ভাতিজা ও ক্যাসিনো শেয়ারহোল্ডার। ডলার আব্দুর রহিম শেখ দীর্ঘদিন ধরে ক্যাসিনো খেলে অনেক উঠতি বয়সী ও যুবককে নিঃস্ব করে দিয়েছে। এভাবে রহিম শেখ এখন কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। তার চলা ফেরা আর দাপটে এলাকার মানুষ কথা বলতে পারেন না। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই ডলার বাহিনীর হাতে বলির পাঠা হতে হয়।
অনলাইন ক্যাসিনোর সম্রাট ও বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক-লীগ নাগেশ্বরী উপজেলা শাখার অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ডলার আব্দুর রহিম শেখের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি ক্যাসিনো ডিলার এটা কুড়িগ্রামের সবাই জানে। আমার ডলার বাহিনী দল রয়েছে। আমার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচার হলে আপনাকে হত্যা করতে আমার মাত্র ৫লাখ লাগবে। ভেবে চিন্তে নিউজ করেন। আমি কাউকে হিসেব করি না।
ফুলবাড়ী উপজেলার বেড়াকুটি বাজার বণিক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান ডলার আব্দুর রহিম শেখ তার ফেসবুকের মাধ্যমে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন। আমি মারা গেলে এর জন্য একমাত্র দায়ী ক্যাসিনো সম্রাট ডলার আব্দুর রহিম শেখ। কিছুদিন আগে রহিম শেখ কে কাশীপুর ইউনিয়নের যুবকদের ক্যাসিনো খেলায় বাধা প্রদান করায় ক্যাসিনো ডিপো সম্রাট রহিম শেখ আমার নামে ২০লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরে করেন। আমি সর্বশান্ত হওয়াসহ কয়েকটি মামলার আসামী হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করে আসছি। বর্তমানে রহিম শেখের ডলার বাহিনী দলের প্রাণনাশের হুমকি কারণে পরিবার নিয়ে আত্মগোপন করে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
রংপুর দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক শাওন মিয়া বলেন, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করেন তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রুহুল আমীন বলেন, ক্যাসিনো সম্রাট মাইনুল ইসলাম কে যৌথ বাহিনীর মাধ্যমে গ্রেফতার করা হয়েছিলো। ক্যাসিনো সম্রাট আব্দুর রহিম শেখের সকল অপরাধের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কুড়িগ্রাম জেলাসহ নাগেশ্বরী উপজেলাবাসী ক্যাসিনো সম্রাট ডলার আব্দুর রহিম শেখের অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসা বন্ধ করাসহ তার দুর্নীতির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের সংশ্লিষ্ট উধ্বতর্ন কর্তৃপক্ষ, যৌথ বাহিনীসহ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকার সাধারণ মানুষ ও সূধী মহল।