Advertisement
মোছাঃ আছমা আক্তার আখি, পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি :
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় বিজিবির সদস্যের বিরুদ্ধে ফেনসিডিল দিয়ে এক ইউপি চেয়ারম্যানকে ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা। শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে তেতুঁলিয়া উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নের ভাঙ্গীপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ভজনপুর মহাসড়ক এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে হাজারো জনতা ইউপি চেয়ারম্যানের বাসায় এসে হাজির হয়। এক পর্যায়ে তারা প্রায় ৩ ঘণ্টা তেঁতুলিয়া-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে।
পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ স্থানীয় নেতাদের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন প্রশাসন ।
স্থানীয়রা সূত্রে জানা যায় , শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ১০-১৫ জন সদস্য তেঁতুলিয়া উপজেলার বিএনপি নেতা ও ভজনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোসলেম উদ্দিনের বসতবাড়ি ঘিরে ফেলেন বিজিবি। বিজিবি সদস্যরা পরিবারের সদস্যদের মোবাইল ফোন নিয়ে নেন এবং একটি কক্ষে তাদের ঢুকিয়ে রাখেন। এরপর ইউপি চেয়ারম্যানকে তার রুমে নিয়ে যান। তারা ঘর তল্লাশির কথা বললে আপত্তি করেননি ইউপি চেয়ারম্যান।
এ সময় একটি বস্তায় ১০৭ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধারের কথা জানান বিজিবি।
পরে তারা ওই ইউপি চেয়ারম্যানকে স্থানীয় ভূতিপুকুর বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে যেতে চাইলে তাকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে দাবি করেন পরিবারের সদস্যরা। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে চেয়ারম্যানের কর্মী, সমর্থক ও সাধারণ মানুষ মিলে তার বাড়িতে জড়ো হন। তারা বিজিবির বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দিতে থাকেন।
এক পর্যায়ে ১৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল জিয়াউল হকসহ বিজিবি কর্মকর্তা ও সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান।
এ সময় পরিস্থিতি সামাল দিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে রাব্বি, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপি নেতা রেজাউল করিম শাহীনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও সেখানে যান। আলোচনার এক পর্যায়ের তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেয় বিজিবি। পরে চেয়ারম্যানকে রেখে শুধুমাত্র ফেনসিডিল নিয়েই বিজিবি ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল কাদের বলেন, বিজিবি ফেনসিডিল দিয়ে আমাদের ইউপি চেয়ারম্যানকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল। আমাদের চেয়ারম্যান মাদকতো দূরের কথা, ধূমপানও করেন না। আমরা এ ঘটনায় সঠিক তদন্ত চাই।
ইউপি চেয়ারম্যান মোসলেম উদ্দিন বলেন, সীমান্ত এলাকায় গরু আটকের বিষয় নিয়ে বিজিবির সঙ্গে একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমার ঝামেলা হয়েছিল।
শুক্রবার দুপুরে বিজিবি সদস্যরা বাড়িতে এসে আমার ঘর তল্লাশি করতে চাইলে প্রথমে আমি এর কারণে জানতে চাই। তারা ঘরের একপাশ থেকে ১০৭ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধারের কথা জানান। আমি কখনো মাদক গ্রহণতো দূরের কথা ফেনসিডিল দেখিওনি। তারা আমাকে ফাঁসানোর অপচেষ্টা করছে শুনে হাজারো জনতা আমার বাসায় ছুটে আসেন।
পরে তারা পঞ্চগড়-তেঁতুলিয়া মহাসড়ক অবরোধ করেন। প্রশাসনের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে রাব্বি বলেন, সড়ক অবরোধের বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে যাই, এনিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আমি ও বিজিবির অধিনায়ক তদন্ত করে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে তারা সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়।
পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল জিয়াউল হক জানান, একটি ভুল বোঝাবুঝির কারণে উদ্ভুত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আমরা তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।