Advertisement
রবীন্দ্রনাথ সরকার (রিপন),রংপুর:
রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার মহিপুর তিস্তা সেতুতে, তিস্তা বাঁচা নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালিত।
২ অক্টোবর (বুধবার) সকাল ১১ টা ৩০ মিনিট মহিপুর তিস্তা সেতু সংলগ্ন রোডে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেসে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন,তিস্তা বাঁচা নদী বাঁচা সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক,মাহমুদুর আলম,যুগ্ম আহবায়ক, মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম।
আরো উপস্থিত ছিলেন,স্টাডিং কমিটি সদস্য সাদিকুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর ইসলাম সহ বিশিষ্ট গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। বক্তব্য প্রদানকালে আহবায়ক মাহমুদুর রহমান বলেন, বেশ কয়েক বছর থেকে রংপুর অঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন। তিস্তা নদীর দুইপাড়ের লাখ লাখ মানুষের দুঃখ, দুর্দশা লাঘব করতে পারে একমাত্র মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে তিস্তাপাড়ের মানুষের পানির জন্য অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে না। সেই সাথে পাল্টে যাবে দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থা। তাই এই অঞ্চলের মানুষ প্রতীক্ষা করছেন তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন।
এদিকে জানা গেছে, তিস্তা মহাপরিকল্পনায় রয়েছে ডালিয়া পয়েন্ট থেকে ব্রক্ষ্মপুত্রের সংযোগস্থল পর্যন্ত নদী খনন করা। নদীর দুই তীর রক্ষা বাঁধ, নদী ড্রেজিং করে যে মাটি উত্তোলন হবে সেই মাটি নদীর দুপাশে ভরাট করে ইপিজেট, সোলার পাওয়ার প্লান্টসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করা হবে। এতে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে চীনের আগ্রহ ছিল। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০২২ সালে ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং তিস্তার ডালিয়া পয়েন্ট ও রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার লহ্মীটারী ইউনিয়নের সেতুর উপর তিস্তা নদী পরিদর্শন করেন। সে সময় চীনা রাষ্টদূতের এলাকা পরিদর্শনের ফলে তিস্তা পাড়ের মানুষ আঁধার কেটে আলোর হাতছানি দেখেছিলেন। পরে সেই পরিদর্শন ও পরিকল্পনা আলোর মুখ দেখেনি।
বিগত সরকারও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন নিয়ে আশার বাণী শুনিয়েছিলেন। সেটিও আলোর মুখ দেখেনি। শুকনো মৌসুমে তিস্তার চারিদিকে দেখা যায় ধু-ধু বালুচর। পানির অভাবে তিস্তা নদীর আশপাশের এলাকায় পানি অনেক নিচে নেমে যায়। ভারত তিস্তার উজানে গজলডোবায় বাধ দিয়ে একতরফা পানি প্রত্যাহারের কারণে তিস্তা প্রকল্পে প্রতিবছরই পানির ঘাটতি দেখা দেয়। আবার বর্ষাকালে প্রবল পানির তোড়ে ব্যারেজ ও আশপাশের অঞ্চল ঝুঁকির মুখে পড়ে। তখন ডালিয়া ব্যারেজের ৪৪টি গেট রাতদিন খুলে রেখেও পানি সরানো কঠিন হয়ে পড়ে।
ফলে শুকনো ও বর্ষা দুই মৌসুমে তিস্তা অববাহিকার মানুষের সময় কাটে দীর্ঘশ্বাসে। শুকনো মৌসুমে ভারতে পানির ওপর নির্ভরতা থাকায় তিস্তা অববাহিকার ৫ জেলা নীলফামরী, লালমনির হাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলায় পানির জন্য হাহাকার দেখা দেয়।তিস্তা নিয়ে মহাপরিকল্পনা বাস্তাবায়ন হলে শুকনো মৌসুমে ভারতে কাছে পানির জন্য হাত পাততে হবে না।
তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের গংগাচড়া উপজেলার যুগ্ম আহবায়ক, মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম বলেন, তিস্তাপাড়ের মানুষের দুঃখ লাঘবে যত দ্রুত সম্ভব নিজস্ব অর্থায়নে বিজ্ঞাসম্মত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন কাজের উদ্বোধন করা উচিত।
মানববন্ধন শেষে, গংগাচড়া উপজেলা প্রশাসন (ইউএনও) জনাবা নাহিদ তামান্না'র কাছে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।