lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
রবিবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৪
Last Updated 2024-11-03T11:39:27Z
জাতীয়

শ্রীমঙ্গলে ‘বিনা লাভের বাজারে’ ন্যায্যমূল্যে মুরগি ও ডিম কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারা

Advertisement


 

ইসমাইল মাহমুদ, মৌলভীবাজার:

শ্রীমঙ্গলের ‘বিনা লাভের বাজারে’ মুরগি ও ডিম কিনতে ভিড় করেছেন ক্রেতারা। ‘ব্রয়লার’, ‘সোনালী’, ‘কক’, ‘পাকিস্তানী লাল’ যার যে মুরগি পছন্দ তা কিনে নিচ্ছেন চাহিদামতো। ব্রয়লার মুরগির ডিমও কিনছেন কেউ কেউ। বাজার থেকে অনেকটা কম দামে বিভিন্ন জাতের মুরগি ও খামারের ডিম কিনতে পেরে ক্রেতাদের চোখে-মুখে খুশির ঝিলিক। রবিবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল শহরের লেমন গ্রুপের সুনামধন্য প্রতিষ্ঠান ‘লেমন ফ্রেস মিটে’ গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা গেল। এদিন সকাল ১১টায় প্রতিষ্ঠানটিতে বিনা লাভে মুরগি ও ডিম বিক্রি কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিনা লাভের বাজারের উদ্বোধন করেন শ্রীমঙ্গল পৌরসভার সদ্যসাবেক মেয়র ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. মহসিন মিয়া মধু।

লেমন ফ্রেস মিটের ব্যবস্থাপক আশুতোষ ঘোষ বলেন, ‘আমাদের বিনা লাভের বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৬০ টাকা। বর্তমানে বাজারের অন্যান্য দোকান থেকে ২৫ টাকা কমে আমরা বিক্রি করছি। আমরা কক মুরগি ২৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি। যা অন্যান্য দোকান থেকে ২৫-৩০ টাকা কম। পাকিস্তানী লাল মুরগি আমাদের বিনা লাভের বাজারে ৬৪০ টাকা। এছাড়া ডিম ৫০ টাকা হালি আমরা ভর্তুকি মূল্যে দিচ্ছি। আমাদের সাবেক মেয়র মহসিন মিয়া মধু মহোদয়ের নির্দেশে শহর ও শহরতলীতে মাইকিং করে প্রচার করে শতভাগ সঠিক ওজনে আমরা ন্যায্যমূল্যে এসব সামগ্রী বিক্রি করছি।’

প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক শাহীন সুলতান বলেন, ‘লেমন গ্রুপের প্রতিষ্ঠান লেমন ফ্রেস মিট নিজস্ব খামারে পন্য উৎপাদন করে থাকে। আমরা প্রতি মাসে প্রায় এক লক্ষ পিস মুরগি উৎপাদন করি। আমাদের এই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার হলেন শ্রীমঙ্গল পৌরসভার সদ্যসাবেক মেয়র মহসিন মিয়া মধু মহোদয়ের ছোটভাই সেলিম মিয়া মহোদয়। লেমন গ্রুপ উনাদের পারিবারিক ব্যবসা। আমাদের মানবতার মেয়র মহোদয়ের নির্দেশক্রমে আমরা বিনা লাভে মুরগি ও ডিম বিক্রি শুরু করেছি। সাবেক মেয়র মহোদয় আমাদের বলেছেন দেশের বর্তমান অবস্থায় আমাদের শ্রীমঙ্গলের জনসাধারণের ক্রয় সাধ্যের মধ্যে তোমাদের উৎপাদিত পণ্য বিনা লাভে বিক্রি করবে। আমরা তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা বিনা লাভের বাজারে মুরগি ও ডিম বিক্রি শুরু করেছি। আমরা মাইকিং করে খামার মূল্যে লাভ ছাড়া পন্য বিক্রি করছি। ন্যায্যমূল্যে ও শতভাগ ওজনের নিশ্চয়তা সহকারে আমরা বিক্রি করছি। এটার মূল উদ্দেশ্য বাজারের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দেয়া। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এই মুরগি প্রতি কেজি ২০ থেকে ২৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন দোকানে। সাবেক মেয়র মহোদয়ের নির্দেশনায় আমরা আগামীতে যানবাহন ও মাপযন্ত্র নিয়ে শহর ও গ্রামাঞ্চলের এলাকায়-এলাকায় গিয়ে আমাদের পন্য বিক্রি করবো। অর্থাৎ সেবা আমরা জনসাধারণের দুরগোড়ায় পৌছে দেবার চেষ্টা করবো।’

মুরগির ক্রেতা মো. হাসান বলেন, ‘এখানে শুরু হইছে বিনা লাভের বাজার। আমি এখান থেকে সঠিক ওজনে কম দামে মুরগি নিতে এসেছি। আমরা কম দামে মুরগি কিনতে পেরে আননন্দিত।’

গৃহবধু মর্জিনা বেগম বলেন, ‘লেমন ফ্রেস মিটে এসে দেখলাম ১৬০ টাকা কেজিতে ব্রয়লার সাদা মুরগি বিক্রি হচ্ছে। যা অন্যান্য দোকানে ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা। প্রতি কেজিতে ২০ টাকা কম পেয়েছি। আমাদের মতো নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য অনেক পাওয়া। র্দুমূল্যের বাজারে এ সহযোগিতা করায় ধন্যবাদ প্রতিষ্ঠানটিকে।’

ক্রেতা মো. বেনু মিয়া বলেন, ‘আমাদের শহরে যতগুলো মুরগির দোকান আছে সব দোকানেই মুরগির দাম বেশি। লেমন ফ্রেস মিটে রেইট কম আছে। তাই এখান থেকে আমরা কমমূল্যে মুরগি কিনি।’

শ্রীমঙ্গল পৌরসভার সদ্যসাবেক মেয়র ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. মহসিন মিয়া মধু বলেন, ‘দেশের সঙ্কটময় মুহুর্তে আপনারা দেখছেন গত ৫ আগস্ট থেকে অদ্য পর্যন্ত মানুষের যে কোন সমস্যায় আমি সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছি। অনেকদিন যাবত সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ার কারনে সাধারণ মানুষে দুর্ভোগে রয়েছেন। আমাদের পরিবার বিভিন্ন ব্যবসায় জড়িত তাই মানুষের সেবার ব্রত নিয়ে আমাদের ব্যবসাগুলো থেকে বিনা লাভে পণ্য সাধারণ মানুষকে দেবার চেষ্টা করে যাচ্ছি। লেমন ফ্রেস মিট আমার ছোট ভাই সেলিম মিয়ার প্রতিষ্ঠান। তাকে আমি নির্দেশ দিয়েছি লাভ না করে পণ্য মানুষের দোরগোড়ায় পৌছে দেবার জন্য। এই সঙ্কটময় মুহুর্তে বাজারের ব্যবসায়িক সিন্ডিকেট ভাঙ্গাই আমাদের উদ্দেশ্য। আগামীকাল থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শ্রীমঙ্গলের নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য যেমন পেঁয়াজ, চাল, ডাল, মরিচ ইত্যাদি সামগ্রী বিক্রি করার জন্য অস্থায়ী বিক্রয়কেন্দ্র করবো। বিনা লাভে এই বিক্রয় কেন্দ্র পরিচালিত হবে। পাইকারী বাজার থেকে এসব সামগ্রী কিনে কেনা দামেই বিক্রি করা হবে। শ্রীমঙ্গলের মানুষ আমাকে অনেক ভালোবাসে। তাই মানুষের ভালোবাসার ঋণ শোধ করার জন্য আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি। মানুষের ভালোবাসার কারনেই আমি বারবার পৌর মেয়র হয়েছি। বহু প্রতিকূল অবস্থায়ও দল-মত নির্বিশেষে মানুষ আমাকে ভোট দেন। তাই আমি নিজের দায়িত্ব হিসেবে ও  বিবেকের তাড়নায় মানুষের সেবার লক্ষ্যে এসব পদক্ষেপ নিচ্ছি।’