Advertisement
আলমগীর হুসাইন অর্থ:
৩১ বছর ধরে বন্ধ দেশের বৃহত্তম সুতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান পাবনার ক্যালিকো কটন মিল। সময়ের বিবর্তনে অযত্ন অবহেলায় কারখানার ভবন সহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি এখন ধ্বংস স্তূপ হয়ে দাড়িয়ে রয়েছে।
মামলা সংক্রান্ত আইনি জটিলতায় ১৯৯৩ সালে বন্ধ হওয়া এই প্রতিষ্ঠানটি পুনরায় চালু করা কিংবা জমির ব্যবহার সংক্রান্ত কোন সিদ্ধান্ত পর্যন্ত নিতে পারছে না মালিকপক্ষ। অথচ লাভজনক হওয়ায় ১৯৭২ সালের ২৬শে মার্চ সম্ভাবনাময় এই ক্যালিকো কটন মিল কে জাতীয়করণ করে এর পরিচালনার দ্বায়িত্ব বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস কর্পোরেশন কে অর্পণ করে সরকার। বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস কর্পোরেশন কর্তৃক পরিচালিত হওয়া মাত্র ১১ বছরে ২ কোটি ৮৭ লক্ষ ২ হাজার ৫৭০ টাকা ব্যাংক ঋণ সহ লোকসানে চলে যায় প্রতিষ্ঠান। যে কারণে ১৯৮৩ সালে মিলটি প্রতিষ্ঠাকালীন মালিক পক্ষের কাছে হস্তান্তর করে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস কর্পোরেশন। তারপর থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি সম্ভাবনাময় এই শিল্প প্রতিষ্ঠান। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষতায় পরিচালিত বৃহৎ এই শিল্প প্রতিষ্ঠানের এতবড় লোকসানের কারণ এখনো জানা যায় নি।
অগ্রণী ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি বন্ধক চলে যায় অগ্রণী ব্যাংক আব্দুল হামিদ রোড শাখার নিকট। পুনরায় মিলের মালিকানা পেয়ে ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েও আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি মালিক পক্ষ। সেইসাথে মালিকদের মধ্যাকার অভ্যান্তরীণ কোন্দল ও শ্রমিক অসন্তোষের কারণে ১৯৯৩ সালে বন্ধ ঘোষণা করা হয় এই কটন মিল।কারখানার উৎপাদন বন্ধ হওয়ার পর সুদে-আসলে ১৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা দাবি করে অর্থ ঋণ আদালতে মামলা করে ব্যাংক। এমতাবস্থায় মামলা নিষ্প্রত্তি না হওয়া পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি রক্ষনাবেক্ষণের কাজে ০৭ জন আনসার সদস্য নিয়োগ করেছে অগ্রণী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, বৃহত্তর পাবনার সিরাজগঞ্জের সম্ভ্রান্ত ব্যবসায়ী ইলিয়াস আলী ও তার ৮ জন আত্মীয় মিলে মোট ৩৬ দশমিক ৭২ একর জায়গার উপর প্রতিষ্ঠা করেন ক্যালিকো কটন মিল। ১৯৬৭ সালে নিবন্ধিত এই প্রতিষ্ঠান উৎপাদনে যায় ১৯৬৮ সালের ১১ নভেম্বর। কারখানায় ৪৮০ জন নিয়মিত শ্রমিকসহ প্রায় ৭'শ জন শ্রমিক কাজ করতেন। কারখানা ভবন ছাড়াও তুলা ও সুতা রাখার গুদাম, প্রশাসনিক ভবন, কর্মকর্তা ও শ্রমিকদের পৃথক আবাসিক ভবন, মসজিদ, শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মালিক পক্ষ।
স্থানীয়দের দাবি, সম্ভাবনাময় সুতা উৎপাদনকারী এই প্রতিষ্ঠানের পরিত্যক্ত ভবণ গুলোতে সন্ধা হলেই বসে মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের জমজমাট আসর । সম্ভাবনাময় এই শিল্প খাতকে রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।