lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
রবিবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৪
Last Updated 2024-11-03T11:42:59Z
মরদেহ উত্তোলন

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত আমিরের কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন

Advertisement


 

এইচ এম রাসেল, বরগুনা প্রতিনিধি:

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই জুমার নামাজ শেষে মসজিদ থেকে ফেরার পথে অটোরিক্সা চালক আমির তালুকদার পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। এ ঘটনায় ৪ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামী করে রামপুরা থানায় তার স্ত্রী আন্নি আক্তার বাদী হয়ে ২৪ জনের হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার ৩ মাস ১৪ দিন পর ময়না তদন্তের জন্য রবিবার বরগুনা জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তরিকুল ইসলামের নেতৃত্বে কবর থেকে তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। 

জানাগেছে, তালতলী উপজেলার মৌপাড়া গ্রামের মৃত্যু আলতাফ তালুকদারের ছেলে আমির হোসেন তালুকদার ছোট বেলায় কাজের সন্ধানে ঢাকায় যান। ২০১৬ সালে মুন্সিগঞ্জের মেয়ে মোসাঃ আন্নি আক্তারকে বিয়ে করেন আমির। ঢাকার রামপুরা টিভি সেন্টারের পাশে একটি ভাড়া বাসায় স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করতেন। তার আরমান (৬), আরিয়ান (৪) ও আমেনা (১) নামের তিনটি সন্তান রয়েছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই জুমার নামাজ আদায় করতে রামপুরা মোল্লা টাওয়ার সংলগ্ন মসজিদে যান আমির। নামাজ আদায় শেষে বাসায় ফিরছিলেন তিনি। ওই সময় আন্দোলনকারী ছাত্র ও পুলিশের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলছিল। পুলিশের তিনটি গুলি এসে তার শরীরে বিদ্ধ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হয়। পরে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে ময়না তদন্ত ছাড়াই গ্রামের বাড়ী তালতলী উপজেলার ছোটবগী ইউনিয়নের মৌপাড়া গ্রামে বাবার কবরের পাশে তার মরদেহ দাফন করা হয়। এ ঘটনায় আমির তালুকদারের স্ত্রী আন্নি আক্তার বাদী হয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামী করে, সাবেক সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালসহ ২৪ জনের নামে  রামপুরা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার ৩ মাস ১৪ দিন পর বরগুনা জেলার নির্বাহী  ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তরিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পিবিআই পুলিশ ময়না তদন্তের জন্য রবিবার কবর থেকে তার মরদেহ উত্তোলন করেছেন। এ সময় তার স্ত্রী আন্নি আক্তার, দুই ছেলে আমিনুল ইসলাম আরমান, আরিয়ান ও একমাত্র কন্যা আমেনাসহ নিকট আত্মীয়সহ এলাকার লোকজন উপস্থিত ছিলেন। ময়না তদন্ত শেষে তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পুলিশের এসআই মাসুদ রানা।  

নিহতের চাচা জাকির হোসেন তালুকদার বলেন, গত ১৯ জুলাই ঢাকায় আন্দোলন চলাকালে আমার ভাতিজা আমির হোসেন তালুকদার পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। আমিন হোসেন স্ত্রী ও তিনটি শিশু সন্তান রেখে গেছেন।

নিহত আমির তালুকদারের স্ত্রী মামলার বাদী আন্নি আক্তার বলেন, ম্যাজিস্টেটের উপস্থিতি আমার স্বামীর মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য উত্তোলন করে পুলিশ নিয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, আমি এ ঘটনার বাদী হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামী করে ২৪ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেছি। আমি আমার স্বামী হত্যার ন্যায় বিচার দাবী করছি। 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই’র এসআই মাসুম রানা বলেন, আমির তালুকদার হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামী করে ২৪ জনের নামে রামপুরা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।  তদন্তের স্বার্থে নিহত আমির তালুকদারের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়। 

তালতলী থানার ওসি কালাম খাঁন বলেন, নিহত আমির হোসেন তালুকদারের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পিবিআই’র পুলিশ এসেছে। তাদের সহযোগীতা করতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

বরগুনা জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্টেট মোঃ তরিকুল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশে নিহত আমির তালুকদারের মরদেহের সুরাতহাল করতে কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।