Advertisement
পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
পঞ্চগড়ে বিগত আওয়ামী লীগ, সরকারের আমলে নির্মিত ২ শতাংশ জমির উপর আশ্রয়ণ প্রকল্পের - ২ এর ঘর গুলোর বেহাল দশা।
দ্বিতীয় ধাপের ঘর নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই সব ঘর প্রতি সরকারি বরার্দ্দ ছিলো ২ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা, কিন্তু ঘর গুলো মাত্র এক বছরের মাথায় ফেটে চৌচির হয়ে গেছে, জানালা-দরজা খুলে পরেছে, ঘরের রোয়া বাতাসহ নির্মাণ সামগ্রী নিম্ন মানের হওয়ায় ঘরের ভেতরে পরছে পানি।
এছাড়াও নিচু জমিতে ঘর নির্মাণ করে পরবর্তীতে মাটি ভরাট করার কারণে ঘর গুলো মাটির নিচে পুতে গেছে অল্প বৃষ্টি এলেই বারান্দা পানিতে ভেসে যায়।
এমন তো অবস্থায় ঘরে থাকতে না পেরে অনেকে ঘর ছেড়ে বা বিক্রি করে, চলে গেছেন পুর্বের ঠিকানা ভাড়া বাসায়। পঞ্চগড় হাফিজাবাদ ইউনিয়নের গারাতি রাজমহল, ও হাড়িভাসা ইউনিয়নের ঢোলো পুকুরি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ভুক্তভোগীদের কথা অনুযায়ী সরেজমিনে গিয়ে দৃশ্যমান ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে।
অধিকাংশ ঘরে ব্যাপক হাড়ে ফাটল দেখা দিয়েছে, এছাড়াও অসহায় বাসিন্দারা নলকুপের অভাবে পাচ্ছে না ঠিকমত পানি। তাদের অভিযোগ তিন চার বাড়ি মিলে একটি নলকুপ দেয়া হয়েছে। এতে করে প্রতিদিন ঝগড়াবিভেদ লেগেই থাকে তাদের মধ্যে।
বিশেষ সুত্রে জানা যায় এসব ঘর পরিচালনায় ছিলেন পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কিন্তু ঘর গুলোর রক্ষণাবেক্ষণ এর দায়িত্বে ছিল পঞ্চগড় উপজেলা( পিআইও) অফিসের আউটসোর্সিং এর কর্মরত মোঃ আবু হানিফ।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক ঘর নির্মাণ মিস্ত্রি আবু বক্কর, এর সহযোগী মিস্ত্রি ও স্থানীয় মানুষেরা জানান, বক্কর মিস্ত্রি, তার ইচ্ছা মতো এসব ঘরের কাজ করেছে কারো কোনো কথা শোনার টাইম ছিল না তার। ঘরের দেখভালকারী আবু হানিফ, ও বক্কর মিস্ত্রি এই দুইজন মিলেই এসব ঘর নির্মাণ দায়িত্বে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছিলেন।
আবু বক্কর, মিস্ত্রির অ্যাসিস্ট্যান্ট শরিফুল ইসলাম, বলেন বক্কর মিস্ত্রি রাতের আঁধারে এসব ঘরের রড, সিমেন্ট, ইট পাথর সবার অজান্তে বিক্রি করেছেন। এছাড়াও বক্কর তার বাসায় নিয়ে মাটির নিচে পুতে রেখে উপরে খর দিয়ে ঢেকে রেখেছে যাতে করে কেউ খোঁজে না পায়। শরিফুল বলেন আমি নিজের হাতেই এসব রোড মাটির নিচে পুতে রাখতে সহযোগিতা করেছি। কিন্তু ওই হারামখোর আমার কাজের মজুরি পর্যন্ত আটকিয়ে রেখেছে এখনো দেয় নাই।
এ বিষয়ে আমি থানায় অভিযোগ করলে উপর মহলের টেলিফোনে আসলে আমাকে ন্যায্য বিচার থেকে বঞ্চিত করা হয়। উল্টো আমাকে মারার জন্য বক্কর মিস্ত্রি, হায়ার করা লোকজন সাথে নিয়ে এসেছিলো আমাকে মারার জন্য।
পরে আমি সাংবাদিকদের শরণাপন্ন হই এবং বক্কর মিস্ত্রির কুকর্মের কথা তাদের কাছে খুলে বলি। এছাড়াও বক্কর মিস্ত্রির, কুকর্মের কথা উপর মহলে বলতে গিয়ে আমাকে চড় থাপ্পর খেতে হয়েছে। বর্তমান খোঁজ নিলে দেখা যাবে বক্কর মিস্ত্রি, এসব অবৈধ টাকা দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় নামে বেনামে জমি ক্রয় করে রেখেছে।
এসব অসাধু ব্যক্তিদের জন্য এখন অসহায়দের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর গুলোর বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে।
তা না হলে কেন ঘর নির্মাণের এক বছর না পেরুতেই ঘরে ব্যাপক ফাটল দেখা দিয়েছে। এসব ঘরের দায়িত্বে উপজেলা নির্বাহী অফিসার থাকলেও ঘরের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী কাজ করেনি বক্কর মিস্ত্রি, এসব ঘরের দেখভাল করার জন্য বিশেষ দায়িত্বে ছিলেন (পিআইও) অফিস এর আউটসোর্সিং কর্মকর্তা আবু হানিফ, এই বিষয়ে আবু হানিফ এর কাছে বক্তব্য চাইতে গেলে সে তালবাহানা করে পালিয়ে থাকে,
এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে ইতি পুর্বে গণমাধ্যমে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরাই বলতে পারবে এসব ঘরের কাজ কেন এমন হলো। কেন এত ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।
এছাড়াও এসব ঘর বন্টনে সরকারি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে ঘর বন্টনের মধ্যেও রয়েছে নানান অনিয়ম, স্থানীয় তৌশীলদার, চেয়ারম্যান, মেম্বার, দলীয় পাতি নেতাদের সজন প্রীতির মাধ্যমে। যাচাই-বাছাই ছাড়াই অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে একই ব্যক্তিকে দুটি ঘর দেয়া, ও ভূমি থাকতেও ভূমিহীন বানিয়ে ঘর দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
এসব অসহায় ভূমিহীনদের ঘরের নির্মাণ সরঞ্জাম আত্মসাৎ কারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্তের মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জোর দাবি জানান সুশীল সমাজ ও ভুক্তভোগীরা।
এ বিষয়ে বক্তব্য চাইতে গেলে সাংবাদিকদের হুমকি দেয় আশ্রয়ন প্রকল্পের নির্মাণ মিস্ত্রি আবু বক্কর, আবু বক্কর সাংবাদিকদের হুমকি দেওয়ার সাহস কোথায় পেল এটাও কিন্তু ভাববার বিষয়।
একাধিক বার ফোন দিয়ে ঘর নির্মাণ কারি মূলহোতা বক্কর মিস্ত্রী কে পাওয়া গেলে সে বলে আমি একাই ৩ শত ঘর নির্মাণ কাজ পেয়েছি। আশ্রম প্রকল্পে ২ এর ঘর নির্মাণে ৬০ বস্তা সিমেন্ট বরাদ্দ ছিল। তবে রড এর কথা আমি বলতে পারব না আমাকে যতটুকু রড দিয়েছে আমি ততটুকু রড দিয়েই কাজ করেছি। তবে বক্কর মিস্ত্রির এসিস্ট্যান্ট শরিফুল ইসলাম, বলেন আশ্রয়ন প্রকল্প ২ এর ঘর নির্মাণে, গ্রেট ভীম এ ৮ ইঞ্চি পর পর রডের চুরি দেওয়ার কথা থাকলেও কিছু ঘরে এক ফিট থাকে রোডের চুরি দিয়ে কোনরকম ঢালাই করেছে। আবার কোন কোন ঘরে গ্রেড ভীম দেয়ার কথা থাকলেও দেয়নি ওই সব ঘরের রড সরিয়ে এমনি এমনি ঘর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ করেছে। এজন্যই এখন ঘর গুলোতে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে।
পঞ্চগড় সদর উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রশিদ এর কাছে বক্তব্য চাইলে তিনি বক্তব্য দিতে অশিকার করেন এবং বলেন আমি কোনো বক্তব্য দিতে পারবো না আপনারা উপর মহল থেকে বক্তব্য নেন।
আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর ভেঙ্গে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে বর্তমান জেলা প্রশাসক জনাব মোঃ সাবেত আলী মহোদয় কাছে গেলে তিনি বলেন আপনাদের কাছে উপযুক্ত প্রমাণ থাকলে আপনারা নিউজ করেন।
কেননা দূর্নিতী ও অনিয়ম যারা করেছে তাদের অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এছাড়াও আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরগুলো ফেটে যাওয়ার বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বর্তমান নির্বাহী অফিসার মোঃ জাকির হোসেন, এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন এসব ঘর নির্মাণের সময় আমি ছিলাম না, তাই এ ব্যাপারে আমি কোন কিছু বলতে পারছি না।