lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
শুক্রবার, ১ নভেম্বর, ২০২৪
Last Updated 2024-11-01T17:33:36Z
রাজনৈতিক বক্তব্য

পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে: হাজী মুজিব

Advertisement


 

ইসমাইল মাহমুদ, মৌলভীবাজার:

বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব মো. মুজিবুর রহমান চৌধুরী (হাজী মুজিব) বলেছেন, ‘দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তার দোসররা আমাদের আশপাশেই রয়েছে। ছাত্রজনতা রক্তে অর্জিত বিজয়কে কোনোভাবেই নস্যাৎ করতে দেয়া যাবে না। নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্র ও দেশবিরোধী কর্মকান্ডের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। ভোট চুরি করে শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ আসন থেকে বারবার এমপি-মন্ত্রী হওয়া দুর্নীতিবাজ ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস শহীদ এবং তার দলের নেতাকর্মীরা গত ১৬ বছর ধরে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর সীমাহীন জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছেন। মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা  করে অনেক বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের জেলে পাঠিয়েছে। ভোটচোর শহীদ ও তার ভাইয়েরা অবৈধভাবে সরকারি জায়গা দখল করে সম্পদের পাহাড় বানিয়েছেন এবং বিদেশে টাকা পাচার করেছেন। এসব অবৈধ সম্পদের জন্য তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।’ তিনি শুক্রবার (১ নভেম্বর) বিকেলে শ্রীমঙ্গল মৌলভীবাজার সড়কে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র জনতার বিজয় নস্যাৎ এর চেষ্টা ও অপশক্তির দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে উপজেলার ৩ নম্বর শ্রীমঙ্গল ইউনিয়ন বিএনপি ও সকল অঙ্গ সংগঠনের আয়োজনে বিশাল গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। 

৩ নম্বর শ্রীমঙ্গল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাহমুদুল হাসান ঝারুর সঞ্চালনায় গণসমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা বিএনপির সভাপতি নুরুল আলম সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক মোঃ তাজ উদ্দিন (তাজু), মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সদস্য মো. দুরুদ আহমদ এবং উপজেলা যুবদলের আহŸায়ক মো. মহি উদ্দিন ঝারু।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব মো. মুজিবুর রহমান চৌধুরী (হাজী মুজিব) আরো বলেন, ‘আজকে আমি আল্লাহ রাব্বুল আল আমীনের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এ ধরণের একটি সভায় আমি উপস্থিত হতে পারছি ও বক্তব্য দিতে পারছি। আপনারা জানেন এর আগে আমরা কোনদিনই এ রকম সভা করতে পারি নাই। গত ১৫ বছরে ফ্যাসিবাদ আওয়ামী সরকার ও আব্দুস শহীদের কারনে আমাদের লুকিয়ে সভা করতে হয়েছে। আমাদের বিএনপি কর্মী আজিজের বাড়িতে আমরা একটি ইফতার পার্টির আয়োজন করেছিলাম। কিন্তু সেই ইফতার পার্টিতে আমরা আসতে পারিনি। পুলিশ এসে মেরে ইফতার পার্টির প্যান্ডেলসহ সবকিছু ভেঙ্গে নিয়ে যায়। আমরা এভাবেই নির্যাতিত ছিলাম ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের আমলে।’ 

তিনি বলেন, ‘আমি আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে কমলগঞ্জে ধলাই নদীর বাঁধ, শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জে কয়েকটি রাস্তা নির্মাণ, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য গৃহ নির্মাণ ও অসংখ্য টিউবওয়েল স্থাপন করেছি। এসব কাজে কারো কাছ থেকে কোন অনুদান নেইনি। আমার ব্যবসার লভ্যাংশ থেকে কাজ করেছি। চা বাগানগুলোতে মন্দির, পুকুরসহ নানা কর্মকান্ড করেছি। এই দুই উপজেলায় এমন কোন চা বাগান নেই যেখানে আমি উন্নয়ন কর্মকান্ড করিনি।  এ অবস্থায় স্থানীয় অনেকেই আমাকে বলেন আপনি ব্যক্তিগতভাবে কয়টা সমস্যার সমাধান করবেন? আপনি জনপ্রতিনিধি হলে সরকারি অনুদান থেকেই এলাকার উন্নয়ন করতে পারবেন। সে কথা অনুযায়ী আমি ২০০১ সালে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মৌলভীবাজার-৪ আসনে সংসদ নির্বাচন করি এবং সামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হই। এরপর হাজী মুজিব ফাউন্ডেশন নামে আমি দুই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কমিটি করি। এসব কমিটির মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের জন্য ঘর বানানো, বিয়েতে সাহায্য ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের সহযোগিতার কাজ করছি। ২০০৮ সালে জনাব তারেক সাহেবের রাজনীতি, বিএনপি রাজনীতি আমার ভালো লাগে। তাই আমি বিএনপিতে যোগদান করি এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করে আমি অল্প ভোটে পরাজিত হই। ওই নির্বাচনের পর থেকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও উপাধ্যক্ষ শহীদ বাহিনী আমার উপর, আমার ভাইয়ের উপর, বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর, হাজী মুজিব ফাউন্ডেশনের কর্মীদের উপর একের পর এক নির্যাতন শুরু করে। কোন বাগানে বা কোন পূজানুষ্ঠানে গিয়ে আমি একটু সাহায্য-সহযোগিতা করলেই শহীদ বাহিনী ওই পূজানুষ্ঠানের সভাপতি ও সেক্রেটারীকে বাদ দিয়ে নতুন কমিটি করছে। এই ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ ও উপাধ্যক্ষ শহীদ বাহিনী আমার উপর অসংখ্য মামলা দিছে। আমার ভাইয়ের উপর মামলা দিছে। আমাদের নেতাকর্মীদের উপর মামলা দিছে। আমার ভাই শামীম কমলগঞ্জের উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পরে সে কোনদিন পরিষদে বসতে পারে নাই। তাকে অমানসিক নির্যাতন করেছে। বিএনপির সাতজন চেয়ারম্যান থাকার পরও আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনছে এবং বিএনপির চেয়ারম্যানদের পরিষদে আসতে দেয়নি। বিষয়টি আমি ম্যাডাম খালেদা জিয়াকে জানানোর পর এডভোকেট মাহবুব হোসেনের মাধ্যমে কয়েকবার রিট করে আমার ভাইয়ের চেয়ারম্যানশীপ ফেরত আনতে পেরেছিলাম। তারপরও আমাকে এবং আমার ভাইকে একসাথে মিথ্যে মামলায় গ্রেপ্তার করে জেলে নেয়। আমার বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা দিয়ে একটানা দেড় বছর আমাকে জেলে আটকে রাখে। জেলের ভিতরেও আমার উপর নির্যাতন চালানো হয়। এতো নির্যাতনের পরও আমি বিএনপির হাল ছাড়িনি।’

সমাবেশে ৩ নম্বর শ্রীমঙ্গল ইউনিয়ন বিএনপি এবং সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।