Advertisement
ইসমাইল মাহমুদ:
মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহবায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন বলেছেন, ‘দেশে এতোদিন নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালতে ন্যায় বিচার ছিল না। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে খুঁজে খুঁজে ফরমায়েশি রায় দেয়া হতো। গণতন্ত্রের মাতা বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের মামলায় নিম্ন আদালতের রায় উচ্চ আদালতে নিয়ে কিভাবে রায়ের জেলের মেয়াদ আরও বাড়ানো হতো তা দেশবাসী স্বাক্ষী। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ আমলে বিএনপিসহ প্রতিপক্ষের রাজনৈতিক নেতাদের অনেক মামলায় ফাঁসির রায় দেয়া হয়েছে। কোনও কোনও মামলায় কার্যকরও করা হয়েছে। যা ছিল বিচারাঙ্গনের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। যদি ২৪ এর বৈষম্য বিরোধি ছাত্র জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচারীনি হাসিনা জনরোষে দেশ ছেড়ে পালিয়ে না যেতো তাহলে দেশে আরও অনেক বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের ফরমায়েশী রায়ের মাধ্যমে হত্যা করা হতো। আজ জুলাই ২৪ এর ছাত্র জনতার অভ্যূূত্থানে দেশের জনগণ এক নতুন স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে। এর ফলে আদালত অঙ্গন থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।’ তিনি রবিবার (১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ কর্তৃক দায়েরকৃত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মিথ্যা মামলা থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সকল আসামি খালাস পাওয়ায় মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আয়োজনে শহরে আনন্দ মিছিল শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন।
ময়ূন বলেন, ‘২১ আগস্টের বিচারিক আদালতের বিচারটা অবৈধ বলা হয়েছে রায়ে। আইনের ভিত্তিতে বিচারটা হয়নি। কোনো সাক্ষীর সঙ্গে কোনো সাক্ষীর বক্তব্যে মিল নেই। শোনা সাক্ষীর ওপর ভিত্তি করে রায় দেওয়া হয়েছে। আপিল মঞ্জুর করে ডেথ রেফারেন্স খারিজ করে সবাইকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। তারেক রহমানের আইনজীবীগণ বলেছেন, এ ধরনের মামলায় পরস্পর কেউ স্বচক্ষে দেখেছেন এ মর্মে কোনো এভিডেন্স (প্রমাণ) নেই। যাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে, তা নির্যাতনের মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে। মুফতি হান্নান দুটি জবানবন্দি দিয়েছেন। দ্বিতীয় স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে সাজা দেওয়ার নজির নেই। এই স্বীকারোক্তি প্রত্যাহার করেন তিনি। এ জন্য এর আইনগত মূল্য নেই। দ্বিতীয় অভিযোগপত্র দায়রা আদালতে দাখিল করা হয়। দায়রা আদালত এটি আমলে নিয়েছেন। আইন অনুযায়ী তিনি (দায়রা আদালত) এটা করতে পারেন না। এ জন্য এই অভিযোগ আমলে নেওয়ার ভিত্তিতে যে সাজা দেওয়া হয়েছে, তাকে অবৈধ বলেছেন হাইকোর্ট।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপিসহ অপরাপর বিরোধীদলের লক্ষ লক্ষ নেতৃবৃন্দকে বানোয়াট মিথ্যা, গায়েবি মামলায় গল্প বানিয়ে ফরমায়েশী রায় দেয়া হতো। ফ্যাসিস্ট হাসিনার উদ্দেশ্য ছিল তার অবৈধ ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে বিরোধী মতের নেতাকর্মীদের নিশ্চিহ্ন করার।
এর আগে ফয়জুল করিম ময়ূনের নেতৃত্বে রায় পরবর্তী বিশাল এ আনন্দ মিছিলটি শহরের চৌমুহনা এলাকা থেকে শুরু হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে।
আনন্দ মিছিল শেষে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য মোশারফ হোসেন বাদশা, এম এ মুকিত, আশিক মোশাররফ, হেলু মিয়া, বকসি মিসবাউর রহমান, মতিন বকস, মুহিতুর রহমান হেলাল, মাহমুদুর রহমান, মনোয়ার আহমেদ রহমান, স্বাগত কিশোর দাস, গাজী মারুফ আহমদ, সেলিম মো. সালাউদ্দিন, সদর উপজেলা বিএনপি’র সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মারুফ আহমদ, জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আহমেদ আহাদ, যুবদল নেতা এম এ নিশাত, জুনেদ আহমদ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রুবেল আহমদ প্রমূখ। আনন্দ মিছিলে জেলা বিএনপি, সদর উপজেলা বিএনপি, পৌর বিএনপি, জেলা যুবদল, জেলা সেচ্ছাসেবক দল, জেলা ছাত্রদলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন ।