Advertisement
মোঃ মজিবর রহমান শেখ, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি:
প্রতিবারের মতো এবারও ঠাকুরগাঁও সীমান্তে অনুষ্ঠিত হয়েছে পাথর কালীপূজা। তবে হয়নি দুই বাংলার মিলনমেলা। সম্প্রতি গত ৬ ডিসেম্বর শুক্রবার ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার চাপাসার সীমান্ত সংলগ্ন গোবিন্দপুর শ্রী শ্রী জামর-পাথর কালীপূজা অনুষ্ঠিত হয়। পূজা উপলক্ষে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বসে এ মিলনমেলা। বাংলাদেশের শতাব্দী প্রাচীন এ কালীপূজাকে কেন্দ্রে করে কাঁটাতারকে মাঝখানে রেখে দুই দেশের মানুষ মিলিত হয় একসঙ্গে। বিভিন্ন ঠাকুরগাঁও জেলা থেকে আসা কয়েক হাজার নারী-পুরুষ ভারতে বসবাসরত আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার জন্য এ দিনটির অপেক্ষায় থাকেন।
তবে এ বছরে প্রাচীন এ মেলাটি ৬ ডিসেম্বর শুক্রবার হওয়ার কথা থাকলেও, আন্তর্জাতিক সীমানা লঙ্ঘন এড়াতে এবার এ মিলন মেলা নিষিদ্ধ করে প্রশাসন। গেল বছরেও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) আপত্তির কারণে মিলনমেলাটি হয়নি। এবারেও এ পূজার অনুষ্ঠানকে ঘিরে সীমান্ত লঙ্ঘন এড়ানো ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিজিবির নজরদারি ছিল চোখে পড়ার মতো। সেই সঙ্গে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের মোতায়েন করা হয় সেখানে। স্থানীয়রা জানান, ব্রিটিশ আমল থেকেই পূজা উপলক্ষে পাথর কালী মেলার পাশাপাশি এখানে সীমান্তে এক দিনের জন্য মিলনমেলা হয়ে আসছে। মেলাটি বাংলাদেশের অংশে পড়লেও মেলায় ভারতীয়দের সীমান্তে উন্মুক্ত করে দেয় ভারত। কিন্তু দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে এবার শান্তিপূর্ণভাবে পূজা অনুষ্ঠিত হলেও মিলনমেলাটি হয়নি। এ বিষয়ে পূজা মন্দির কমিটির সভাপতি নগেন কুমার পাল জানান, তারা এই পূজা দীর্ঘদিন থেকে করে আসছে। এপার বাংলা ওপার বাংলা মিলেই একটা মিলন মেলার মধ্য দিয়ে আনন্দমেলা অনুষ্ঠিত হতো। দুই দেশের নাগরিক একসঙ্গে পূজা করত। কোনো প্রকার বাধা ছাড়াই ভারতীয়রা মেলায় আসতে পারেন। দুই পাশে মিলে প্রায় ৩ - ৪ লক্ষাধিক লোক মিলিত হতো এ মেলায়। এ দিনটির জন্য প্রতি বছর তারা অপেক্ষা করে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতির কারণে তা হয়নি।
ঠাকুরগাঁও হরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান জানান, ঐতিহ্যবাহী এই পাথর কালীপূজা প্রতিবছরের মতো এবারও হচ্ছে। তবে স্থানীয় এবং ঠাকুরগাঁও জেলা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো হয়েছে এবার মেলা করা যাবে না। ভারত বাংলাদেশের যে সীমানা রয়েছে সেটা লংঘন করা যাবে না। পূজার পরিবেশ ঠিক রাখতে হরিপুর উপজেলা প্রশাসন, বিজিবি, অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।