Advertisement
ইসমাইল মাহমুদ, মৌলভীবাজার:
আবহমান কাল থেকে বাঙালি সমাজে এক অনন্য উপাদানের নাম হলো পিঠা। পিঠাকে কেন্দ্র করে আমাদের দেশে গড়ে ওঠেছে নানা ধরণের ঐতিহ্য। আবহমান কাল থেকে পিঠা হলো অতিথি আপ্যায়ন, আত্মীয়তা, সামাজিক ও সম্প্রীতির এক বন্ধন। প্রতি বছর হেমন্ত ঋতুতে নতুন ধান ঘরে তোলে বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে। যা বহাল থাকে বসন্তকাল পর্যন্ত।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ মাঠে বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) দিনব্যাপী তারুণ্যের উৎসবে জমজমাট পিঠামেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারের পিটঠা মেলায় ১২টি স্টলে দেখা গেল প্রাচীন কালের সোনালী অধ্যায়কে। প্রতিদিন সকালে যারা ব্যাগ-বই-খাতা নিয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠগ্রহণে ব্যস্ত থাকতো সেই সব কলেজ শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই পাঞ্জাবি, শাড়িসহ নানা ধরণের বৈচিত্রময় পোষাক পরিধান করে পিঠামেলায় স্টল পরিচালনায় এবং ক্রেতার ভুমিকায় অবতীর্ণ হন। পিঠামেলাকে কেন্দ্র করে কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, প্রাক্তন শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই যেন এক বাঁধনে বাঁধনহারা, উল্লাসে উল্লসিত। এবারের পিঠামেলাকে কেন্দ্র করে কলেজ ক্যাম্পাসে বসেছিল কলেজের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা।
বেলা ১২ টায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বর্ণিল পিঠামেলার উদ্বোধন করেন কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর এ. বি. এম মোখলেছুর রহমান। কলেজের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক বিজন চন্দ্র দেবনাথ, অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সুরঞ্জিত কিলিকদার এবং গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সুদর্শন শীল।
এবারের পিঠামেলায় মোট ১২টি স্টল ছিল। বেলা ১২টায় উদ্বোধনের পর বিকেল ৪টার মধ্যেই স্টলগুলোর পিঠা বিক্রি শেষ হয়ে যায়।
এবারের পিঠামেলার ব্যাপারে গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সুদর্শন শীল বলেন, ‘শ্রীমঙ্গলে শীতের যে আমেজ পড়েছে, সেই আমেজকে পূর্ণতা দিতে কলেজের শিক্ষার্থীবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এবারের পিঠামেলায় তারুণ্যের উৎসবে মেতেছিল শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। আমাদের শিক্ষার্থীরা সেই গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য পিঠা-পুলি, পায়েস তৈরি করেছে রাত জেগে। সেই কষ্টের ফসল পিঠা আজকের উৎসবে উপস্থাপন করেছে। তাদের এই প্রচেষ্টা আমাদের চরমভাবে আনন্দিত করেছে।’