lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
Last Updated 2025-02-21T16:24:03Z
জাতীয়

ঠাকুরগাঁওয়ে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে এসে ক্ষোভ আইনজীবীদের !

Advertisement


 

মোঃ মজিবর রহমান শেখ, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি:

মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সদস্যরা। শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা না জানাতে পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। পরে শহীদ মিনার থেকে ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য স্থান ত্যাগ করেন। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টা ৫৫মিনিটে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় (বড় মাঠ) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ ঘটনা ঘটে। আইনজীবীদের মতো আরও অনেকেই ফুল নিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে এলেও ঘুরে যান। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বইছে। ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এক চিঠি থেকে জানা গেছে, শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে রাত ১২টা ১ মিনিটে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ (বড়মাঠ) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও সাড়ে ১২টার দিকে শহরের সাধারণ পাঠাগারের সামনে অবস্থিত ভাষা সৈনিক মরহুম দবিরুল ইসলামের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। এই চিঠি জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে পাঠানো হয়েছে। সেই তালিকা ও সময় অনুযারী জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এন্তাজুল হক ও অন্যান্য সদস্যরা ফুল নিয়ে রাত ১১টা ৫০ মিনিটে এসে দেখেন বড় মাঠ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের চারপাশ বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘেরে রাখা হয়েছে। এ সময় অন্যান্যরা শ্রদ্ধা জানাতে না পারলেও আইনজীবীরা গণমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

তবে ঠাকুরগাঁও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সোলেমান আলীর স্বাক্ষরিত আরেক চিঠিতে বলা হয়েছে রাত ১২টা ১ মিনিটে ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও সকাল ৬টায় ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ (বড় মাঠ) শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা কথা। তবে সেই চিঠিটি আইনজীবী সমিতিকে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন সমিতির নেতারা।  

ঠাকুরগাঁও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এন্তাজুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকারি কর্মসূচির অংশ হিসেবে অফিসিয়ালি আমাদের একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেই অনুযারী বড় মাঠ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমরা আইনজীবীরা শ্রদ্ধা জানাতে আসছি। কিন্তু শহীদ মিনারে এসে দেখি কেউ নেই। ভেন্যু পরিবর্তন করা হয়েছে। কিন্তু ভেন্যু কোথায় করা হয়েছে তা প্রশাসনের পক্ষে থেকে আমাদের জানানো হয়নি। তিনি আরও বলেন, জেলা প্রশাসনের কাছে থেকে এরকম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে এতটা অবহেলা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আইনজীবী সমিতিকে চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে ও নির্দিষ্ট ভেন্যু করে দেওয়া হয়েছে বড় মাঠ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। যদি ভেন্যু পরিবর্তন করা হয়ে থাকে তাহলে আমাদের জানানো হলো না কেন? এভাবে আমাদের বিব্রত করা ঠিক হয়নি। এটা খুবই দুঃখজনক। ভেন্যু যেখানেই হোক না কেন তার পরেও আমরা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাব। তবে এমন আচরণ মোটেও কাম্য নয়। শিবগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের এক সহকারী অধ্যাপক বলেন, প্রতিবছর আমরা রাত ১২টা ১ মিনিটে বড় মাঠ শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করি। এবারও শ্রদ্ধা জানাতে আসলাম। এসে দেখি কিছুই নেই। আমি মনে করি এই ভেন্যু যে পরিবর্তন করা হয়েছে সেটার বিস্তর প্রচার দরকার ছিল। তাহলে মানুষ শ্রদ্ধা জানাতে এসে ঘুরে যেত না। নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, আমরা এক যুগ ধরে জেনে আসছি বড় মাঠ শহীদ মিনারটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। প্রতিবছর আমরা শহীদ মিনারের চারপাশ ও প্রবেশ পথে আলপনা আঁকি। কিন্তু এবার দেখি ভিন্ন। সকাল থেকে শহীদ মিনারটি নোংরা হয়ে পড়ে আছে। কেউ পরিষ্কার করেনি। আমরা ছাত্ররা বিকেল পানি দিয়ে পরিষ্কার করে আলপনা এঁকে দিই। যাতে প্রথম প্রহরে সর্বস্তরের মানুষ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে পারে। কিন্তু রাতে এসে মানুষ ফুল নিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে এসে ঘুরে যাচ্ছে। মিনারের চারপাশ বেড়া দিয়ে ঘেরা রাখা হয়েছে। তারা আরও জানান, আগে এমন ছিলো না। সরকার পতনের পর থেকে ভাগ হওয়া শুরু হয়ছে। যার যেটা পছন্দ না তিনি সেখানে যান না বা কাউকে যেতে দেন না। এটা তো হতে পারে না। একটা শহীদ মিনার সবার জন্য। যেটা হয়েছে বা হচ্ছে তা খুবই দুঃখজনক।

একজন ফেসবুকে লিখেন, আগে ফুল দিতেন পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে, এবার দিলেন সরকারি কলেজে।