Advertisement
ইসমাইল মাহমুদ, মৌলভীবাজার:
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও মৌলভীবাজার-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম নাসের রহমান বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ মারা গেছে। এটার লাশও এখন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে এটি বেওয়ারিশ হিসেবে একসময় দাফন করা হবে। ফ্যাসিস্ট এই দলটি ছাত্র জনতার বিপ্লবে মারা গেছে গত বছরের ৫ই আগস্ট, আর দাফন হবে ভারতে। সম্প্রতি এক নাবালক উপদেষ্টা বলেছে, আওয়ামী লীগের যারা অন্যায়-অবিচার করেনি তারা মাফ চেয়ে রাজনীতি করতে পারবে। এখন বলেন, তাদের নেত্রী খুনি হাসিনা চৌদ্দশ মানুষ হত্যা করেছে, দেড় হাজার মানুষকে গুম, খুন করেছে। লক্ষ লক্ষ হাজার কোটি টাকা পাচার করছে। এখন কে আওয়ামী লীগকে মাফ করবে? কারা মাফ করবে? দেশের জনগণের চাওয়া একটাই, আওয়ামী লীগের একমাত্র জায়গা হলো ফাঁসির কাস্ট, আর না হলে ফায়ারিং স্কোয়ার্র্ড। তিনি সোমবার (২৪ ফেব্রæয়ারি) দুপুরে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের পশ্চিম শাখার সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
নাসের রহমান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কখনোই জনগণের কল্যাণের রাজনীতি করেনি। জনগণের ভোটের প্রতি তাদের কোন তোয়াক্কা ছিল না। ভারতের সাহায্যে যেনতেন ভাবে ক্ষমতায় আসে। তাদের ভোটার ছিলো প্রশাসন, পুলিশ আর ম্যাজিষ্ট্রেট। এই তিনটা রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ দেশে সাড়ে পনরো বছর রাম রাজত্ব চালিয়েছে। জনগণ তাদের কখনোই ভোট দেয়নি। কারণ কোন ভালো মানুষ আওয়ামী লীগের রাজনীতির করার কথা নয়। কারো মনে যদি কুটিলতা, বদমাসি, হটকারি, মানুষকে ঠকানি, এসব মন মানসিকতা থাকে তাহলে তারাই আওয়ামী লীগ করবে। এগুলোর চারটির একটি গুণও যদি না থাকে, তাহলে আওয়ামী লীগ করতে পারবে না। তারা সবসময় মুখে মুখেই বলেছিলো জনগণ, কিন্তু কোন সময়ই জনগণের স্বার্থে তারা রাজনীতি করেনি। তাইতো জনগণের দৌড়ানি খেয়ে ভারতে পালিয়েছে। এখন কই সব বাটপারের দল। এই আওয়ামী লীগের নাম পরিবর্তন হয়ে এখন জনগণ দিয়েছে বাংলাদেশ বাটপার লীগ। তাদের বি.এ.এল নামের সাথে তাদের চরিত্র প্রকাশ পায়। এই দলের নামের সাথে বাংলা ভাষারই কোন সম্পর্ক নাই। আওয়ামী উর্দু শব্দ, এর অর্থ জনগণ আর লীগ ইংরেজী শব্দ। তাদের নামের মাঝেই গন্ডগোল।’
চাঁদনীঘাট ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক রুহেল বকসের সভাপতিত্বে ও সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মারুফ আহমদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপন। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. ফখরুল ইসলাম, বকসি মিছবাউর রহমান, মুজিবুর রহমান মজনু, সাবেক সহ-সভাপতি আয়াছ আহমেদ, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অলিউর রহমান প্রমুখ। সম্মেলনে উদ্বোধক ছিলেন সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক বদরুল আলম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এম নাসের রহমান আরো বলেন, ‘এই দেশে আওয়ামী লীগ আর ফেরার কোন সুযোগ নেই। এই দলটি ফ্যাসিস্ট। আওয়ামী লীগ মানেই দেশের মানুষের সম্পদ লুটেরা, চোর, বাটপার। তবে একটা শর্তে তাদের রাজনীতি করার সুযোগ দেয়া যেতে পারে। যদি তাদের দলটির নাম পরিবর্তন করে, বাংলাদেশ বাটপার লীগ রাখে। তাহলে রাজনীতি করার এই একমাত্র সুযোগ জনগণ দিতে পারে। এছাড়া আর কোন সুযোগ নেই।
মৌলভীবাজারের উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়ে তিনি বলেন, ‘এই মনু নদীর বাঁধের জন্য নাকি আওয়ামী লীগ তেরশো কোটি টাকা খরচ করেছে। যেখানে তিনশো কোটি টাকার কাজ হলেই বেশি হবে। এই তেরশো কোটি টাকা কোথায় গেল? মাটির নিচে তো আর যায়নি। সব লুটপাট করেছে এরা। বিএনপির আমলে আমি নতুন ব্রিজে একটা ব্রিজ করে দিয়েছিলাম। এখন এখানে বড় বাজার হয়েছে। এখন শহর বাইপাস ব্রিজও হবে। মৌলভীবাজারে ভূয়া এমপি যারা হয়েছিলো, এগুলোতো জনগণের ভোটে হয়নি। এজন্য এদের কোন দায়বদ্ধতা ছিল না। এরা টাকা কামানোর ধান্ধায় ছিলো। এক রাতের ভোটের ভূয়া এমপির আগে ছিলো টিনশেডের ঘর, এখন পাঁচতালা দুইটা দালান বানিয়েছে। আলাদিনের চেরাগ পেলেন না কি? বিএনপি দেশের মানুষের উন্নয় নিয়ে কাজ করে। আর ওই বাটপারলীগ তাদের পকেটের উন্নয়ন নিয়ে কাজ করেছিলো। বাংলাদেশ বাটপারলীগ তাদের পকেটের উন্নয়ন করতে দেশের লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা ইন্ডিয়ায়, লন্ডনে, আমেরিকায়, কানাডায়, অষ্ট্রেলিয়ায় পাচার করে নিয়ে গেছে। আর এই চোরদের বিচারের জন্য দেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ। খুনি হাসিনার বিচারের রায় জনগণ চায়, হাসিনার ফাঁসি। তার অপরাধের মাত্রা এতোটাই, একবার নয় কয়েকশোবার ফাঁসি হওয়া উচিত। আর তাকে জীবিত অবস্থায় আয়নাঘরের চেয়ারে ঘুরানো দরকার। সে মানুসিক বিকারগ্রস্থ সাইকো।’