Advertisement
এম এইচ শাহীন: প্রবাস জীবনে ভালো বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে পাঠানোর নামে ময়মনসিংহের দুই ব্যক্তির কাছ থেকে কয়েক ধাপে ১৩ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা সর্বস্ব হারিয়ে পরিবার- পরিজন নিয়ে এখন বিপাকে পড়েছেন। প্রতারণার শিকার ময়মনসিংহের গফরগাঁও থানার উপুরা হস্তান উদ্বুরী গ্রামের হযরত আলীর ছেলে মো. শরাফত আলী (৩৪) ও ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানার ধলা এলাকার মৃত নিতাইয়ের ছেলে শ্রী বিষ্ণু (২২)। এলাকায় একাধিকবার গ্রাম্য সালিস হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। পরে পাওনা টাকা ফেরত পেতে ভুক্তভোগীরা সম্প্রতি ময়মনসিংহের নান্দাইল মডেল থানায় পৃথক অভিযোগ দায়ের করেন ও কোর্টের মাধ্যমে দেলোয়ারের বিরুদ্ধে রিগ্যাল নোটিশ দেন।
অভিযুক্ত ময়মনসিংহের নান্দাইলের আব্দুল্লাপুর এলাকার মৃত কালাম মুন্সির ছেলে মো. দিলোয়ার হোসেন (৩৮)।
থানার লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের জানুয়ারী মাসের ১৪ তারিখে ময়মনসিংহের গফরগাঁও থানার উপুরা হস্তান উদ্বুরী গ্রামের হযরত আলীর ছেলে শরাফত আলী ও ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানার ধলা এলাকার মৃত নিতাইয়ের ছেলে শ্রী বিষ্ণু (২২) দুই বন্ধু সৌদি আরব যাওয়ার জন্য ময়মনসিংহের নান্দাইলের আব্দুল্লাপুর এলাকার মৃত কালাম মুন্সির ছেলে মো. দিলোয়ার হোসেন (৩৮) কে নগদ ১৩,৪০,০০০ টাকা দেয়। মো. শরাফত আলী ও শ্রী বিষ্ণু দুই বন্ধুকে সৌদি আরবে প্রতিজনকে মাসে এক লক্ষ টাকা বেতনে চাকুরী দেয়ার কথা বলে তাদের কাছে থেকে মোট যোল লক্ষ পঞ্চাশ হাজার লক্ষ টাকা চুক্তি করেন এবং তাদেরকে তিন মাসের মধ্যে বিদেশ পাঠাবেন বলে ২০২২ সালের অক্টোবর মাসের ৭ তারিখে বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে ব্যাংক, বিকাশ ও নগদে সর্বমোট ষোল লক্ষ টাকা দেলোয়ার গ্রহণ করেন। কিন্তু টাকা নেওয়ার পর হইতে তাহাদেরকে বিদেশে পাঠানোর জান্য ভিন্ন ভিন্ন তারিখ দেন। এমনকি তাহাদেরকে বিমানের টিকিটও প্রদান করেন, কিন্তু সৌদি আরব আর যাওয়া হয়নি টাকাও ফেরত দেয়নি।
ভুক্তভোগী শ্রী বিষ্ণু বলেন, বিদেশে যাওয়ার জন্য জমি বিক্রি ও বন্ধক রেখে এবং এনজিও থেকে সুদে টাকা নিয়ে আমরা দুই বন্ধু ১৬ লাখ টাকা দিয়েছি। এখন সুদের টাকা পরিশোধ করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। স্ত্রী- সন্তানদের নিয়ে সংসারের খরচ মেটানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আমরা যখন বিষয়টি নিশ্চিত হই যে প্রতারণার শিকার হয়েছি তারপর থেকে টাকা ফেরত চাই। এর পর থেকে দেলোয়ার কালক্ষেপণ করতে থাকেন।
ভুক্তভোগী শরাফত আলী ও বিষ্ণুর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভালো বেতনের চাকরি ও সুযোগ- সুবিধার প্রলোভন দেখিয়ে সৌদি আরবে পাঠানোর কথা বলে দিলোয়ার হোসেন গত ২ বৎসর আগে দিলোয়ার হোসেন আমাকে ও বিষ্ণুকে সৌদি আরব দেশে নিয়া চাকুরী দেওয়ার প্রস্তাব করিলে আমি ও বিষ্ণু সরল বিশ্বাসে বিবাদীর কথা বিশ্বাস করিয়া তার প্রস্তাবে রাজী হই। শর্ত দেয় যে, তেরলক্ষ চল্লিশ হাজার টাকা দিলে ২ মাসের মধ্যে আমাদেরকে মার্কেটিং ভিসা দিয়া সৌদি আরব দেশে নিয়া চাকুরী দিবে। আমি কয়েকজনের সামনে দিলোয়ার হোসেনের বাড়িতে গিয়ে নগদ তেরলক্ষ চল্লিশ হাজার টাকা দেলোয়ার হোসেনের হাতে বুজাইয়া দেই। তখন দেলোয়ার হোসেন টাকা গুনিয়া বুজিয়া নেয়। দেলোয়ার হোসেন তারপর আমাকে শর্ত দেয় ২ মাসের ভিতরে সৌদি আরব পৌঁছে দিবে। কিন্তু ২ মাস অতিবাহিত হওয়ার পর সৌদি আরব পাঠাতে পারেনি আমাদের কে? আমি যখন সৌদি আরবে যাওয়ার কথা বলি তখন দেলোয়ার হোসেন বিভিন্ন ধরনের তাল বাহানা করে। তখন আমার কাছে মনে হলো আমি ও বিষ্ণু প্রতারণার শিকার হয়েছি।