lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
Last Updated 2025-02-11T11:38:13Z
সড়ক দুর্ঘটনা

আমতলীতে পরিবহন বাসের চাপায় নানা-নাতিসহ নিহত - ৩

Advertisement


 


বরগুনা প্রতিনিধি:

নাতি আদিবকে নিয়ে মেয়ের বাড়ী যাওয়া হলো না নানা আতাহার গাজীর। পথিমধ্যে ইউনিক পরিবহন বাসের চাপায় মাহেন্দ্র গাড়ীর দুই যাত্রী নানা আতাহার গাজী (৬০) ও তার নাতি আদিব (৭) এবং মোটর সাইকেল চালক শহীদুল ইসলাম হাজী (৫৫) নিহত হয়েছে। নিহত পরিবারের স্বজনদের আহাজারীতে আমতলী হাসপাতাল প্রাঙ্গণের আকাশ-বাতাশ ভারী হয়ে ওঠে। পুলিশ ঘাতক বাসটি জব্দ করেছে। ঘটনা ঘটেছে মঙ্গলবার দুপুর পৌনে দুইটার দিকে আমতলী - পটুয়াখালী মহাসড়কের আমড়াগাছিয়া রহমান ফিলিং ষ্টেশনের সামনে।


জানাগেছে, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কুয়াকাটাগামী ইউনিক পরিবহন বাসটি (ঢাকা মোট্রো-ব-১৪-৮৭৮১) আমতলী-পটুয়াখালী মহাসড়কের আমড়াগাছিয়া রহমান ফিলিং ষ্টেশনের সামনে বিপরীত দিক থেকে আসা যাত্রীবাহী মাহেন্দ্র গাড়ীর মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাহেন্দ্র গাড়ীটি সড়কের পাশে পড়ে যায়। ওই মাহেন্দ্র গাড়ীর পিছনে থাকা মোটর সাইকেলের ওপর বাসটি তুলে দেয়। এতে ঘটনাস্থলে মোটর সাইকেল চালক শহীদুল হাজী (৬০) নিহত হয় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শী মোঃ মিজানুর রহমান ও মোঃ রাহাত তালুকদার। তাৎক্ষনিক স্থানীয়রা মাহেন্দ্র গাড়ীর যাত্রী আতাহার গাজী ও তার নাতি আদিবকেসহ আহতদের উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। ওই হাসপাতালে চিকিৎসক ডাঃ রাশেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান শিশু আদিবকে (৭) মৃত্যু ঘোষনা করেছেন। অপর আহত মনির সিকদার (৪০) ও নানা আতাহার গাজীকে চিকিৎসা শেষে বরিশাল পাঠানো হয়েছে।  বরিশাল নেয়ার পথে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে নানা আতাহার গাজী লেবুখালী নামকস্থানে মারা যান। পুলিশ ঘাতক বাসটি ডাক্তারবাড়ী স্ট্যান্ড থেকে আটক করেছে। কিন্তু চালক ও হেল্পার পালিয়েছে। নিহত শহীদুল হাজীর বাড়ী গুলিশাখালী ইউনিয়নের ডালাচালা গ্রামে। তার বাবার নাম রফিক হাজী। নিহত শিশু আদিবের বাড়ী চাওড়া লোদা গ্রামে। তার বাবার নাম হিমু আকন। নানা আতাহার গাজীর বাড়ী বাইনবুনিয়া গ্রামে। নানা-নাতিসহ তিনজন নিহতের ঘটনার এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।


প্রত্যক্ষদর্শী মিজানুর রহমান ও রাহাত তালুকদার বলেন, কুয়াকাটাগামী ইউনিক পরিবহন বাসটি বিপরীত দিক থেকে আসা যাত্রীবাহী মাহেন্দ্র গাড়ীর সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে বাসটির ধাক্কায় মাহেন্দ্র গাড়ীকে সড়কের পাশে পড়ে যায়। পরে বাসটি মাহেন্দ্র গাড়ীর পিছনে থাকা একটি মোটর সাইকেলে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে মোটর সাইকেল চালক নিহত হয় এবং মাহেন্দ্র গাড়ীর তিনজন যাত্রী গুরুতর আহত হয়।  


গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম বলেন, ইউনিক পরিবহন বাসের চাপায় মোটর সাইকেল চালক শহীদুল ইসলাম হাজী নিহত হয়েছে। শহীদুল আমার প্রতিবেশী। 


নিহত আতাহার গাজীর মেয়ে সালমা বলেন, গাড়ীর চাপায় আমার বাবা ও আমার বোনের ছেলে নিহত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমার বাবা তার নাতিকে নিয়ে বোনের বাড়ী যাচ্ছিল। পথিমধ্যে বাসগাড়ী মাহেন্দ্র গাড়ী চাপা দেয়। এতে আমার বোনের ছেলে আদিবকে হাসপাতালের নেয়ার পর ডাক্তার মৃত্যু ঘোষনা করেছেন। বাবাকে বরিশাল নেয়ার পথে লেবুখালী নামক স্থানে মারা গেছেন। 


আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ রাশেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান বলেন, শিশুসহ দুইজন হাসপাতালে আনার পুর্বেই মারা গেছেন। অপর আহত দুইজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। 


আমতলী থানার ওসি মোঃ আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুসহ তিনজন নিহত হয়েছে। নিহতদের স্বজনের দাবীর প্রেক্ষিতে মরদেহ ময়না তদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ঘাতক বাসটি জব্দ করা হয়েছে।